# বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার (টিসিএফ) মলিউজ্জামান সজিবের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ মতাদর্শী এই কর্মকর্তার দাপটে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এখানে কাজে ক্রটি থাক বা নাই থাক প্রতিটি কাজে তাকে আর্থিক সুবিধা দিতে হচ্ছে। ডিওলেটার আটকিয়ে টাকা আদায় নিয়মে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালকল মালিক জানান, খাদ্য কর্মকর্তা বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে বন্ধ চালকল চুক্তিবদ্ধ করেছেন। ফলে বন্ধ চালকল থেকে চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্য গুদাম। সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। এমনকি খাদ্য কর্মকর্তার মদদে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কমিশনের ভিত্তিতে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই কারসাজি করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও নিম্নমাণের চাল সংগ্রহ, রাঁতের আঁধারে গুদাম থেকে চিকন চাল বের করে মোটা চাল ঢোকানো ও মিলারদের ক্র্যাসিংয়ের জন্য চিকন ধান দিয়ে মোটা চাল নেয়া ইত্যাদি নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই আলোচিত খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তানোর সরকারি খাদ্যগুদামে যে চাল মজুদ রয়েছে,সেই ধানের চাষ উপজেলায় হয় না। তাহলে এসব চাল আসলো কোথা থেকে। আবার কৃষকের কাছে থেকে কেনা ধানের চাল গেলো কোথায় ?
ক্র্যাসিংয়ে দেয়া সরু ধানের চাল কোথায় ? স্থানীয় সুত্র জানায়,শর্ত পূরণে অটোমিল চুক্তি সম্পাদন করতে সক্ষম হলেও শুধু বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও বৈধ লাইসেন্স দেখিয়ে খাদ্য কর্মকর্তার নেপথ্যে মদদে বন্ধ মিল থেকে সরকারের খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করে আসছে একশ্রেণীর কথিত মিলার। অথচ সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে খাদ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত চাল সংগ্রহের চুক্তির মডেল অনুসরণ করে চাল সংগ্রহ ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সম্পন্ন উৎপাদনে নিয়োজিত বৈধ চালকল লাইসেন্সধারী মিলারদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করতে হবে। যেসব মিলের বয়লার, চিমনি নেই সেসব মিলের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা যাবে না।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিলারদের আবেদনপত্রসহ চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব যাচাই-বাচাই শেষে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে প্রেরণ করবেন। যাচাই-বাচাই শেষে সব প্রক্রিয়া সম্পন্নকারী বৈধ চালকল মালিকরা সরকারের খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করতে পারবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিলার বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের লাইসেন্সগুলো টিকানোর জন্যই মূলত আমরা বরাদ্দ নেই। পরবর্তীতে আটোমিলের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের গুদামে চাল সরবরাহ করে থাকি এটা সত্যি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (টিসিএফ) মলিউজ্জামান সজিব সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মূলত লাইসেন্স ও বিদ্যুৎ বিলের কপি দেখেই এসব বরাদ্দ প্রদান করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী বন্ধ মিল থেকে চাল সংগ্রহ করা যাবে না। পদাধিকার বলে ধান ও চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) । কিছু যদি জানার থাকে তাহলে ইউএনও স্যারের কাছে থেকে জানতে হবে, তিনি কোনো তথ্য দিতে পারবেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ হয়নি। তারপরও যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তবে আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।#