মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) বনগাঁ চকরহমত উচ্চ বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম জেঁকে বসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুলে কম্পিউটার ও লাইব্রেরী নাই। অথচ রাজনৈতক বিবেচনায় এই দুটি পদে অদক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা অর্থ বাণিজ্যে করা হয়েছে। এতে ফাও কাজে প্রতিমাসে সরকারি কোষাগারের বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।
অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ-অসন্তোষ। অন্যদিকে এই দুই শিক্ষকের এমপিও বাতিলের দাবিতে অভিভাবকগণ ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, রাজশাহী জেলা প্রসাশক (শিক্ষা) এবং উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বনগাঁ চকরহমত উচ্চ বিদ্যালয়েয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, লাইব্রেরিয়ান আছে, কিন্তু লাইব্রেরি নেই। কিছু বই আছে, স্টাফ রুমের আলমারিতে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও তা দেখভাল করার কেউ নেই। লাইব্রেরিয়ান আব্দুর রশিদ বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। যেটা চাকরিবিধি লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
একইভাবে কম্পিউটার নেই। কিন্তু কম্পিউটার শিক্ষক রাজিয়া খাতুন দীর্ঘদিন যাবত বসে বসে বেতন নিচ্ছেন যা চাকরিবিধি লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের স্কুলে লাইব্রেরী নেই, আর কম্পিউটার শিক্ষক রাজিয়া ম্যাডাম কম্পিউটার চালাতে পারে না। এ ঘটনায় স্থানীয় অভিভাবক মহল, শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ান ও কম্পিউটার শিক্ষকের এমপিও স্থগিতসহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারি শিক্ষক বলেন, দুই নম্বরী করে কেনা সনদপত্র দিয়ে লাইব্রেরিয়ান ও কম্পিউটার শিক্ষক চাকরি নিয়ে বসে বসে সরকারি অর্থ তছরুপ করছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শামসুজ্জামান বলেন, আলাদা লাইব্রেরী নেই সত্য, তবে লাইব্রেরীর পরিবেশে নিয়মিত লেখা পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আর কম্পিউটার ক্লাশ না হবার অভিযোগ সত্য নয়।
এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি আলাদা লাইব্রেরি রুম করার জন্য, ব্যতিক্রম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, কম্পিউটার ক্লাশ না হলে খতিয়ে দেখা হবে।
এবিষয়ে লাইব্ররিয়ান আব্দুর রশিদ বলেন, স্কুল লাইব্রেরির আলাদা ঘর নেই সত্য, তবে বিভিন্ন কৌশলে শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তক পড়ানো হয়। এবিষয়ে কম্পিউটার শিক্ষক রাজিয়া খাতুন বলেন, কম্পিউটার ক্লাশ না হবার অভিযোগ সঠিক নয়।
এবিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#