মাসুমা রহমান নাবিলা: সত্যি বলতে সেভাবে কোনো উপলব্ধি হয় না। তবে এই দিনে মানুষের অ্যাটেনশনে বেশি থাকতে হয়। আমি মনে করি, ভালো হতে হলে ৩৬৫ দিন স্পেশাল ফিল করতে হয়। শুধু এক দিন করে কি হবে? ছোটবেলায় বলতে কৈশোরে যখন সৌদি আরবে ছিলাম, তখন অনেক বন্ধু ছিল। বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে তখন বেশ এনজয় করা হতো। এখন তো বন্ধুবান্ধবেরাও কাছে নেই। সবাই দূরে দূরে। দেশের বাইরে। আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সে–ও দুই বছর ধরে লন্ডনে থাকে। এখন অবশ্য বাংলাদেশে আছে, সে হয়তো সন্ধ্যায় আসবে দেখা করতে। এখন আবার ফেসবুকে অনেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। ভক্তদের পাশাপাশি শুভাকাঙ্ক্ষীরাও সুন্দর সুন্দর কথাবার্তা লেখেন—সত্যি বলতে এসব আনন্দ দেয়। এসব লেখালেখি দেখে স্পেশাল ফিল হয়।
বিরতির পর ‘আনন্দমেলা’ উপস্থাপনা করলেন, অভিজ্ঞতা কেমন?
মাসুমা রহমান নাবিলা: এবার খুবই গোছানো মনে হয়েছে। সাত বছর আগে যখন করেছিলাম, দুদিন শুটিং করতে হয় এবং খুবই কষ্ট ছিল। একই কস্টিউম, একই গেটআপে দুদিন শুটিং, তা–ও আবার রাতের একটা–দুইটা পর্যন্ত! এবার দুপুরে গিয়ে কাজ শুরু করেছি, সন্ধ্যার মধ্যে পুরো শুটিং শেষ হয়ে গেছে। অংশগ্রহণকারী শিল্পী অনেককে নতুন মনে হয়েছে, যাঁদের আগে বিটিভিতে পারফর্ম করতে দেখা যায়নি। এই জায়গায় হয়তো বিটিভি কর্তৃপক্ষ বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছে। আর মনে হয়েছে, সবাই বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিল। সাধারণত অন্য সময়ে কোনো কিছু বলে তৎক্ষণাৎ সমাধান পাওয়া যেত না। এবার কোনো বিষয় বললে দ্রুত সাড়া দেওয়ার বিষয়টাও ভালো লেগেছে।

আপনার সঙ্গে উপস্থাপনায় ছিলেন চিত্রনায়ক ইমন, তিনি নিয়মিত উপস্থাপনা করেন না। তাঁর উপস্থাপনা কেমন হয়েছে?
মাসুমা রহমান নাবিলা: খুব ভালো করেছে। সে যেহেতু উপস্থাপক না, প্রথমবার ‘আনন্দমেলা’ করেছে, তাই ভেবেছিলাম, প্রথম দিকে একটু আটকাবে। সময় নেবে। কিন্তু সে প্রথম থেকেই দারুণ করেছে। বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল। সহ–উপস্থাপক এমন স্বতঃস্ফূর্ত হওয়াটা আমাকেও বেশ হেল্প করেছে।
এখন নাহয় আপনি ‘আনন্দমেলা’র অংশ, নিশ্চয় এই অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো স্মৃতি আছে?
মাসুমা রহমান নাবিলা: অনেক স্মৃতি। ঈদ মানেই তো ‘ইত্যাদি’, ‘শুভেচ্ছা’, ‘আনন্দমেলা’—ছোটবেলা থেকেই এই আমেজ নিয়ে বেড়ে উঠেছি। ঈদের সময় যত অনুষ্ঠান থাকুক, এগুলো দেখতেই হবে—এই ব্যাপারটা সব সময় ছিল। একটা কথা বলতে চাই, এবার রেকর্ডিংয়ে রুনা লায়লা ম্যাম যখন ‘শিল্পী’ গানটি পারফর্ম করছিলেন, তখন আমি নস্টালজিক হয়ে পড়ি। ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ছিল। আমি তো সৌদি আরবে ছিলাম, আনন্দমেলা তখন ভিডিও ক্যাসেটে করে দেখতাম। আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে রুনা লায়লা এসব গানই গাইতেন। তখন আমি সম্ভবত পাঁচ-ছয় বছরের, রুনা লায়লার এসব গান ভিডিও ক্যাসেটে বারবার টেনে টেনে শুনতাম। এক আন্টির বাসায় যখন বারবার টেনে শুনছিলাম, তখন আন্টি একটা সময় রাগ করে বিরক্ত হয়ে ক্যাসেট বন্ধ করে দেন। বলেন, আর শুনতে হবে না। আমি তো কান্নাকাটি শুরু করি। কাঁদতে কাঁদতে বিছানা বালিশ ভিজিয়ে ফেলি। এবার রুনা লায়লা ম্যামকে দেখে সৌদি আরবের সেসব গল্প মনে পড়ল। তাঁকেও গল্পটা বলেছি। এসব দেখে মনে পড়ছিল, জীবন কত বিচিত্র, জীবনে কখনো হয়তো ভাবিওনি, এ রকমই একটা মঞ্চে তাঁকে সরাসরি দেখতে পাব।
মাসুমা রহমান নাবিলা: আমার দৃষ্টিতে ভিন্ন রকম। এখন যেহেতু আমার সংসার, দায়িত্বও তো বেশি। আগে দায়িত্ব ছিল না, ছিল শুধুই আনন্দ। এখন দায়িত্বটাই আনন্দ হিসেবে উপভোগ করছি। বিশেষ করে এখন আমার মেয়েকে ঘিরে সবকিছু। ও যাতে বুঝতে শেখে, এখন তো একটু বড় হয়েছে, ঈদ মোবারক না বুঝলেও বলাটা শিখেছে। স্কুলে ঈদ কার্ড বানিয়েছে—এগুলো ভালো লাগছে।
মাসুমা রহমান নাবিলা: কিসের স্ট্র্যাটেজি, আমার কাছে ওভাবে সিনেমার প্রস্তাব আসে না। কী করার। আমাদের এখানে ছবি হয় তো হিরোকেন্দ্রিক। ‘আয়নাবাজি’ হিট হওয়ার পরও তা–ই হয়েছে। প্রস্তাব পাইনি তখন তা কিন্তু না, গল্প শুনে তখন করতে ইচ্ছা করেনি। তবে যে খুব পেয়েছি, তা–ও না। এবার ‘তুফান’ মুক্তির পরও একটা-দুইটা ছবির প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু ওইগুলো আমি করতে চাই না। আমার নিজের কমফোর্ট জোনের মনে হয়নি।

হাতে গোনা কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সহশিল্পী হিসেবে কয়েকজন নায়ক পেয়েছেন। একেকজনের একেক রকম গুণ। কার কোন গুণ আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
মাসুমা রহমান নাবিলা: অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি, অনেকের সুন্দর গুণাবলি দেখেছি হয়তো, কিন্তু সারপ্রাইজ হইনি। শাকিব খানের ক্ষেত্রে সারপ্রাইজ হয়েছি। কারণ, তিনি তো একটা জল্পনাকল্পনার বিষয়। খুব কম মানুষই তাঁকে সেভাবে জানে, কারণ তিনি নিজেও সেভাবে কোথাও অ্যাভেইলেবল না। এত বড় তারকা হয়েও তিনি যে এত সহজ ছিলেন, এটা সত্যিই আমাকে অবাক করেছে। এই ব্যাপারটা দেখে মুগ্ধও হয়েছি। এটাই আমার খুব মনে পড়ে।# সংগৃহীত