# মোঃ ফিরোজ আহমেদ, আত্রাই প্রতিনিধি………………………………………..
নওগাঁর আত্রাই উপজেলা উন্নয়নে ভরপুর,সংসদীয় আসন ৫১ নওগাঁ-৬ এর আওতাভুক্ত ২১২৫০৩ জনসংখ্যার এ উপজেলায় আয়তন ২৮৪.৪১ বর্গ কিলোমিটার। আ’লীগ সরকারের আমলে নির্মিত উপজেলা পরিষদের নান্দনিক ভবনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ছাড়াও সরকারের বেশিভাগ অফিস রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের বাহিরে নিজস্ব জমিতে আধুনিক মানসম্পন্ন ভবনে উপজেলা ভূমি অফিস, মৎস্য অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আত্রাই থানা ও সাবরেজিষ্ট্রী অফিস রয়েছে।
উপজেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ী, মহাত্মা গান্ধির স্মৃতি বিজরিত গান্ধি আশ্রম, প্রকৃতির অনিন্দ্য নিকেতন ভবানীপুর জমিদার বাড়ী, শুকটিগাছা রাবার ড্রাম, আত্রাই সেতু ও আত্রাই রেল ব্রিজ। সুস্বাদু খাবার হিসাবে আত্রাই নদীর বোয়াল, আইর, গুজা, রিঠা, বাইন, পাতাসি, টেংরা, জুলুঙ্গী, চেলা, কই প্রভৃতি মাছ প্রসিদ্ধ।
উপজেলায় ৮ ইউনিয়নে ২০৭ গ্রামের মানুষের টাকা লেন-দেনের মাধ্যম হিসাবে সোনালী, জনতা, অগ্রনী, কৃষি, রুপালী ব্যাংকের পাশাপাশি গ্রামীন ও এজেন্ট ব্যাংকগুলো কাজ করে চলেছে।
ইউএনও অফিসের তথ্যমতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ সময়ে সবার জন্য বাসস্থান নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২৮ গৃহ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে ২০১৯-২০ সময়ে দুর্যোগ সহনীয় ১৮ বাড়ী ২০২০-২৩ সময়ে ২৬২ আশ্রয়নের বাড়ী নির্মাণ করে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেইসাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আধুনিক মান সম্পন্ন তিন তলা বিশিষ্ট্য মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ছাড়াও ১ম ধাপে ৮ বীরনিবাস হস্তান্তর শেষে ২য় ধাপে ১৭ বীরনিবাস তৈরীর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার অফিসের তথ্যমতে উপজেলায় ২০০৯-২০২৩ সময়ে রাস্তা পাকা করা হয় ১৫১ কিঃ মিঃ ইট সোলিং ৬২ কিঃ মিঃ ঢালাই ০৩ কিঃ মিঃ। সেইসাথে ১৯৭ টি ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হয় যার দৈর্ঘ্য ২০৪৫ মিটার। এছাড়া ১৩৫ কিঃমিঃ নতুন রাস্তা তৈড়ীর পাশাপাশি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণ কার্যক্রম প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানান ২০০৯-২৩ সময়ে উপজেলায় ৩টি সাব স্টেশন নির্মাণের মাধ্যমে গ্রাহক সংখ্যা ৩৫ হাজার থেকে বেরে ৬৪২৫৬ হয়। ফলে বিদ্যুত বিতরণ সক্ষমতা ৫ থেকে ৩০ এমভিএ দাঁড়ায়। এসময় বিদ্যুৎ লাইন ২০০ থেকে বেড়ে ১৩৫৬ কিঃ মিঃ সংযোগের মাধ্যমে ২০১৮ সনে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা ঘোষণা করা হয়।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে উপজেলায় মোট আবাদযোগ্য জমি রয়েছে ২৪০৫০ হেক্টর। যারমধ্যে জলাশয় ৯৭০ হেক্টর ঘর-বাড়ীসহ অন্যান্য অবকাঠামো ৩৩৯৮ হেক্টর। বর্তমান সরকারের সময়ে পতিত জমির পরিমান কমে আবাদি জমির পরিমান বাড়ার খবর পাওয়া গেছে।
বরেন্দ্র অফিসের তথ্য মতে ২০০৯-২৩ সময়ে ফসল উৎপাদনে সেচ যন্ত্র হিসাবে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকুপ ২৮১ টি অগভীর ৪৭২ টি এল এল পি ৩৮টি সংযোগ দেওয়া হয়।
মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর ৩৪১৪ টি যার দৈর্ঘ্য ১২৯১ হেক্টর সরকারী পুকুর ২৬২ টি যার দৈর্ঘ্য ১০৬ হেক্টর।
এছাড়া নদী ১৫৯৯ হেক্টর বিল ১৭৬৫ হেক্টর খাল ২৭ হেক্টর। বর্ষাকালে প্লাবনভূমি দাঁড়ায় ৩০৬০ হেক্টর। ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারি পুকুর খনন-সংস্কার বর্তমান সরকারের সময়ে সিংহভাগ হয়েছে।
নির্বাচন অফিস জানান, ২০০৯-২০২৩ সময়ে এ উপজেলায় ১৬৭৬০৭ জন ভোটারকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পুরুষ ৮৪৮১৭ মহিলা ৮২৭৮৮ হিজরা ০২ জন।উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস জানান ২০০৯-২০২৩ সময়ে গবাদি পশুর খামার ২৫ থেকে বেড়ে হয় ১০৫টি। এছাড়া হৃষ্টপুষ্ট খামার ১২ থেকে ৮৯ হাঁস-মুরগী খামার ১৬ থেকে ৯৮টি হয়।
সমাজসেবা অফিসের তথ্যমতে, ২০০৯-২০২৩ সময়ে উপজেলায় মোট ভাতা ভোগীর সংখ্যা হয়েছে ১৮৫৭০ যা ২০০৯ এর পূর্বে ছিলো ৭৯২ জন। ভাতা ভোগী হিসাবে বয়স্ক ভাতা ৪১২ থেকে বেড়ে হয় ৮৬৫৪ বিধবা ভাতা ২০৯ থেকে ৫৬৯৭ প্রতিবন্ধী ভাতা ১৭১ থেকে ৩৭৯৭ জন হয়। এছাড়া বর্তমান সরকার ৪২২ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে বিশেষ ভাতার আওতায় আনেন।
উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩০ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৭ মাদ্রাসা ১৫ কলেজ ১২টি রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশ যা ২০১১ সনে ছিলো ৪৭.৪০ শতাংশ।
আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, পুলিশ হেড কোয়াটার ও জেলা পুলিশের দিক নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা বাসীর জান-মালের নিরাপত্তা দিয়ে কাজ করে চলেছি। সেইসাথে সকলের সহায়তায় উপজেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো অবস্থানে রাখতে সক্ষম হয়েছি। একই সাথে ৮ ইউনিয়নে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, জুয়া, মাদক নির্মুল এবং পেট্রোল ডিউটির মাধ্যমে থানায় কর্মরতরা সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বলিষ্ট নেতৃত্বে এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে আজ শান্তির সুবাতাস বইছে। সেইসাথে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা ঘোষণা এবং বেশির ভাগ রাস্তাঘাট পাকাকরণ করার ফলে মানুষের জীবন-মান হয়েছে উন্নত। সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগার সাথে সাথে কৃষি পণ্য ও খাদ্য সামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ন্যায্য মূল্য পাওয়াতে।#