লালপুরের ইতিহাসে রক্তঝরা ৬ জুন,শহীদ মমতাজ উদ্দিন এর ১৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী
-
প্রকাশের সময় :
রবিবার, ৫ জুন, ২০২২
-
২০৬
বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
# মেহেরুল ইসলাম মোহন , লালপুর……………………………….
রাত পোহালেই ৬ জুন,নাটোর জেলার লালপুরের ইতিহাসে এক শোকের দিন।এ বছর নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া)আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জন প্রিয় আ’লীগ নেতা ৭১ এর বীরাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মমতাজ উদ্দিনের ১৯ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। ২০০৩ সালের ৬জুন থেকে এই দিনটিকে লালপুরের মানুষের নিকট শোকাহত রক্তাক্ত ৬ জুন হিসেবে খ্যাত।
২০০৩ সালের ৬ জুন রাত ১০টার দিকে নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া)আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ উদ্দিন লালপুর উপজেলার গোপালপুর থেকে নিজবাড়ি মিল্কিপাড়ায় ফিরছিলেন। এমতাবস্থায় গোপালপুর-সালামপুর সড়কের নেঙ্গপাড়া নামক এলাকায় পৌছালে জননেতা মমতাজ উদ্দিনকে কিছু দুস্কৃতিকারীরা পথরোধ করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে।তার এই অকাল মৃত্যুতে লালপুরের আ’লীগ নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়ে। জনপ্রিয় এই বর্ষিয়ান নেতাকে হারিয়ে নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আ’লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসে এক অন্ধকারের ঘনঘটা। পরের দিন ২০০৩ সালের ৭ই জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনের স্মরণে উপজেলার করিমপুর সরকারী হাই স্কুল মাঠে এক স্মরণ সভা করেন। পরে যে স্থানে শহীদ মমতাজ উদ্দিন কে হত্যা করা হয় সেই স্থানে তার স্মৃতির স্মরণে চিরঞ্জীব শহীদ মমতাজ উদ্দিন নামে একটি স্মরণ সৌধ তৈরী করা হয়।
তৎকালীন ২০০৪ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল উক্ত স্মরণ সৌধটি উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে প্রতিবছর ৬জুনে লালপুর-বাগাতিপাড়া উপজেলার আ’লীগও তার সহযোগি অঙ্গ সংগঠন এবং শহীদ মমতাজ উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ,মিলাদ মাহফিল,বিশেষ মোনাজাত, স্মরণ সভা,কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এই দিনটি পালন করে আসছে।
এদিকে আজ পর্যন্ত লালপুর-বাগাতিপাড়ার আ’লীগ ও তার সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারাণ জনগন সেই রক্তাক্ত ৬ জুনের ঘটনা আজও ভুলতে পারেন নি। মমতাজ উদ্দিন আজও বেঁচে আছেন লালপুর-বাগাতিপাড়া বাসীর হৃদয়ে,আর এভাবেই মমতাজ উদ্দিন মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরোকাল। অপরদিকে শহীদ মমতাজ উদ্দিনের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই তার স্নেহের ছোট ভাই নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি(সাবেক) ও নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ ২০১৬ সালে শহীদ মমতাজ উদ্দিনের নামে ফাউন্ডেশন গঠন করে।
উল্লেখ্য যে,শহীদ মমতাজ উদ্দিন ১৯৮৬-১৯৮৮ সালে তৃতীয় জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন।এছাড়াও তিনি নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র নেতা ফজলুর রহমান পটলের নিকট পরাজিত হন। পরে ২০০৩ সালের ৬ জুন বিএনপি লালিত সেই ফজলুর রহমান পটলের ইশারায় দুষ্কৃতিকারীদের কবলে পড়ে মমতাজ উদ্দিন শাহাদাৎ বরন করেন। পরে ১৩ই মার্চ ২০১৩ সালে রাজশাহীর একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মমতাজ উদ্দীপনকে হত্যা করার দায়ে ৯জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবৎজীবন কারাদণ্ড দেয় এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদালত।#
এডিট: আরজা/০১
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ