ক্ষমতায় আসার পর একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশাসনে পর পর কর্মীছাঁটাই থেকে শুরু করে অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো, মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য নতুন নিয়ম চালু কিংবা অতি সম্প্রতি তাঁর শুল্কনীতি— শুধু আমেরিকায় নয়, সারা বিশ্বে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। যে কারণে শনিবার আমেরিকার বাইরে কোথাও কোথাও বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। ট্রাম্প-বিরোধী মিছিল বেরিয়েছে লন্ডন এবং বার্লিনেও।

ম্যানহাটনে ট্রাম্প-বিরোধী মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে এক প্রতিবাদী বলেন, ‘‘আমার ভীষণ ভীষণ রাগ হচ্ছে। বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত একদল মানুষ নিজেদের ইচ্ছামতো আমাদের দেশটাকে চালাচ্ছেন। আমাদের দেশ আর মহান নেই।’’ ওয়াশিংটনের রাস্তায় স্লোগান দিতে দিতে এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে বাসে করে আমরা প্রায় ১০০ জন এখানে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। এই প্রশাসনের জন্য বিশ্ব জুড়ে বন্ধুদের হারাচ্ছি আমরা। সকলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। দেশের মধ্যেও তারা বিভাজন তৈরি করছে। আমাদের সরকারকে ওরা ধ্বংস করে দিচ্ছে।’’ ক্ষমতায় আসার পর গর্ভপাত বিরোধী নীতি গ্রহণ করেছিলেন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে লস অ্যাঞ্জেলেসে এক তরুণীর হাতে প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমার গর্ভ থেকে বেরিয়ে যাও।’’ বস্টনের এক প্রতিবাদী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘আমরা এখানে ফ্যাসিবাদ বন্ধ করার জন্য জড়ো হয়েছি। বিরোধীদের, অভিবাসীদের নির্বিচারে উনি জেলে ভরে দিচ্ছেন। সেই নেতাকে আমরা থামাতে চাই।’’
সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী জমায়েত দেখা গিয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটনেই। হোয়াইট হাউস থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ন্যাশনাল মলে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে এসেছেন অনেকে। তাঁদের ট্রাম্প-বিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয়েছে রাস্তাঘাট। কিছু সংগঠনের হিসাব বলছে, শুধু ওয়াশিংটনেই ২০ হাজার মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জমায়েতে শামিল হয়েছেন। কোনও কোনও রিপোর্টে দাবি, সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
ট্রাম্প অবশ্য কোনও বিরোধিতায় আপাতত কান দিচ্ছেন না। হোয়াইট হাউসে বসে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমার নীতি কখনও বদলাবে না।’’ সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পণ্যে ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যে নেওয়া হবে ২৬ শতাংশ শুল্ক। এর ফলে আমেরিকার অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ট্রাম্পের নীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে গোটা বিশ্বের বাণিজ্যে। ইতিমধ্যে আমেরিকার পণ্যে চিন পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছে।#