নাজিম হাসান……………………………..
রাজশাহী অঞ্চলে চলতি বছর পাটের ভালো ফলন হলেও তীব্র তাপদাহ ও পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। আষাঢ়-শ্রাবণে বর্ষার পুরো মৌসুম হলেও এ বছর এখনো কাংক্ষতি বৃষ্টির দেখা মেলেনি। মাঠঘাটসহ চারদিক শুকিয়ে গেছে। কাংক্ষতি বৃষ্টি না হওয়ায় খেতেই শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে পাট গাছ। এ সময়ে চাহিদামতো বৃষ্টি না হলে পাটের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে (১৯জুলাই) কয়েকদিনের টানা তাপদাহের পর অবশেষে দেখা পেল গুঁড়িগুঁড়ি কখনও বা মুষলধারে স্বস্তির বৃষ্টিপাত। এসময় বজ্রসহবৃষ্টি মানুষের মনে প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়।
এলাকাবাসি সুত্রে জানাগেছে, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বর্ষার শুরুতে রাজশাহী জেলার অধিকাংশ খাল-বিলে পানিতে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও এখন শুকনো। কোনো কোনো জলাশয়ে সামান্য পানি থাকলেও পাট পচানোর জন্য তা যথেষ্ট নয়। আর এই কারনে পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
চাষিরা জানায়, অনেকেই বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমির পাশে, কেউবা রাস্তার পাশে, খাল-বিল বা ডোবার পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। কেউ কেউ পানির অভাবে জমিতে খড় ও আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার খাল-বিল ও জলাশয়ের সামান্য পানিতেই পাটের ওপর মাটি ও ভারী কিছু দিয়ে পচানোর চেষ্টা করছেন।
রাজশাহী কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১৮ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত বছর ১৮ হাজার ১৯ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৫১১ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বছর বৃষ্টির মৌসুম পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে খুবই কম।
এবিষয়ে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সহকারি পর্যবেক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন, রাজশাহীতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত অনেক কমেছে। এটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হচ্ছে। কেননা রাজশাহীতে যে পরিমাণ গাছ লাগানো হচ্ছে তার চেয়ে কাটা হচ্ছে বেশি। আবার নদীর নাব্যতাও কমেছে। তাপমাত্রা বাড়ার কারণ জলাশয় ও পুকুর ভরাট, বৃক্ষ নিধন, বহুতল ভবন নির্মাণ। সব মিলিয়ে জলবায়ুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া আবহওয়ার খামখেয়ালিপনা বাড়ছে।#