# শফিকুলল ইসলাম, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ……………………………………..
জ্ঞান হয়ে শুধু কষ্টই কেটেছি। জমিজমা বাড়ি কিছুই ছিলনা।পথে পথে ছোট পরিসরে ডাবের ব্যবসা করতাম। নিজের টাকা ছিল না। স্থানীয় একটি এনজিও হতে কিস্তিতে টাকা তুলে ভ্যান কিনে সে ভ্যানটিই ছিল আমার সবকিছু। কোন দিন ভাবতেই পারিনি যে সেমি পাকা বাড়িতে থাকতে পাবো। যা একমাত্র সম্বব হয়েছে অসহায় বান্ধব সরকারের প্রধান মন্ত্রী আমাদের মা শেখ হাসিনার অবদানের কারণে।কথাগুলো বললেন তত্তীপুরের আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা স্বামী পরিত্যক্ত আলিয়া বেগম।
তিনি আরো বলেন, রাস্তা পেলে ও বখাটেদের উৎপাত কমলে নিজেই ভ্যান চালিয়ে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো। পার্শবতী জোহরা বেগম জানান, যা কল্পনা করিনি তা বাস্তবে পেযেছি, এখন শুধু জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে মানুষ করতে পারলেই মনের সব আশা পূরণ হবে। কিন্তু অর্থের অভাবে তা পারিনি। শুধু এই দুইজনই নয়, এখানে আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রায় ২ শ’টি পরিবারের লোকজনের একই কথা।
গত শুক্রবার সরজমিনে তর্ত্তীপুর আশ্রয়ন প্রকল্প -২ গেলে তারা এ প্রতিবেদকে এভাবেই তাদের অনুভুতির কথা জানান। এখানকার দুলিয়ারা বেগম ও কবিতা বেগম বলেন আমাদের এখানে দুই সারি বাড়ির মধ্যখানে প্রায় ছয় ফুট করে রাস্তা ছাড়া আছে কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।স্বামী পরিত্যক্ত রোকিয়া বেগম ( তার সুবিধা ভোগীর কার্ড এখনো হয়নি)জানান, গভীর রাতে বখাটেরা আমাদের ঘরের দুয়ারের সামনে এসে আজেবাজে কথা বলে। ভয় লাগে,তাই দরজা খুলি না । ভিতর থেকে প্রতিবাদ করলে তারা হুমকী দেয়। নুরেশা বেগমের দাবী হলো আমাদের বাড়ির উঠানে ছোট পরিসরে সবজি বাগানের জন্য কৃষি অফিসের সাহায্য ও কৃটির শিল্পের মাধ্যমে কর্মস্থানের জন্য ইউএন ও স্যারের সহযোগিতা চাই। তবে এষানকার সবার দাবী একটাই রাস্তা,নিরাপত্তা ও কর্মস্থানের ব্যবস্থা।
এ রানীহাট্টি কলেজের সামনে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা, আদরী সরকার, টকিয়ারা বেগম,পার্বতী, ফজর আলি, কুলসুম বেগম, শ্রীমতি মায়ারানী জানান, আমরা পথে বাস করতাম বৃষ্টিতে ভিজতাম, রোদে পুড়তাম, মা শেখ হাসিনা থাকার জন জমি সহ বাড়ি করে দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী তার নির্দেশে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কুটি শিল্পের মাধ্যমে কর্মস্থান, মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রেতাদের উৎখাত ও রাস্তার ব্যবস্থা করে দিবেন। এটাই ৃআমাদের চাওয়া।
ষষ্ঠী ঘোস ও রাসেল বলেন গুচ্ছগ্রামের মধ্যে আমরা পুকুরে মাছ চাষ করতে পেলে একদিকে সরকারের রাজস্ব আসবে অন্যদিকে আমাদের কর্মস্থান হবে। তারা আরো বলেন যদিও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এর আওয়াতায় পড়ে না তবে আমরা নিজ উদ্যেগে অস্থায়ী ভিত্তিত মসজিদ মন্দির তৈরী করেছি। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সহযোগীতা পেলে ভাল হতো।
কানসাটের সাথী বেগম,বলেন আমাদের কানসাটের আশ্রয়ন প্রকল্পের অবস্থার দুই সারির বাড়ির মধ্যে যে প্রায় ছয় ফুট করে রাস্তা ছাড়া আছে তা দীর্ঘদিন যাবত পানি ধরে থাকায় আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
আব্দুল মালেকসহ অনেকেই জানান বাধ্য হয়ে পচা ও দূর্গন্ধে ভরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে হাত পায়ে ঘা ,চুলকানী, টায়ফয়েড, জ¦র সর্দি কাশি সহ নানা অসুখে ভুগছি। অন্যদিকে মনাকষার ভবানীপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা একরাম আলি জানান নানা সমস্যায় অতিষ্ঠ হয়ে বাড়ি বদলের জন্য প্রায় তিন মাস আগে এমপির সুপারিশ নিয়ে ইউএনও’’র কাছে আবেদন করেও লাভ হয়নি। সামনে মাত্র চার ফুট রাস্তা আছে, যাতে চলাফেরা করা অসম্ভব ।
উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ২ এর ১১৮৮ এবং গুচ্ছ গ্রামের ১৩০টি পরিবার জননেত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি পেয়ে খুব খুশী ও অনেকটা শান্তিতে থাকলেও কর্মস্থান, বখাটেদের উৎপাত বন্ধ, রাস্তা সংস্কার ড্রেনেজ ব্যবস্তার জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা। করেন। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ির রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য ছক তৈরী কর পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে জরুরী ভিত্তিতে করা হবে। তিনি আরো বলেন, সমবায় সমিতি অফিসের মাধ্যমে সমিতি করা হয়েছে। তাদের মাঝে ক্ষুদ্র লোনের ব্যবস্থা করে কর্মস্থান করা হবে। শিবগঞ্জ থানার ওসি চেšধুরী জোবেয়ার আহাম্মদ বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ও থাকবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন, বাড়ির উঠানে সবজি বাগান করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্মস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।বরাদ্দ আসলেই রাস্তার সংস্কার করা হবে। এক কথায় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে আশ্রয়ন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামবাসীদের জীবন ব্যবস্থাকে ঢালাওভাবে সাজানো হবে। বখাটেদের উৎপাত কমানোর জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা প্রয়োজনে গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল জানান,অসহায় বান্ধব সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নই আশ্রয়নবাসীদের মুখে হাসি ফুটানো। তা বাস্তবায়ন জরুরী ভিত্তিতে সব কিছু করা হবে।#