যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের প্রতিরক্ষায় রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য আমেরিকান অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে মস্কো এই হামলা চালায়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রনের উদ্যোগ নেয়ার সাথে সাথে ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখন্ডে আক্রমণ করার জন্য দীর্ঘ-পাল্লার মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য বারবার অনুমতি চেয়ে আসছে, যা মস্কোর সাথে ন্যাটোকে সরাসরি সংঘর্ষে টেনে আনতে পারে এই আশঙ্কায় ওয়াশিংটন প্রতিরোধ করেছিল।
তবে এই মাসে রুশ বাহিনী খারকিভ অঞ্চলে নতুন আক্রমণ শুরু করার পর থেকে সেই হিসাব পরিবর্তিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
খারকিভ শহরে একটি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত এবং কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়েছে, আঞ্চলিক গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ শুক্রবার ভোরে টেলিগ্রামে একটি পোস্টে বলেছেন, আহতদের মধ্যে একজন জরুরি চিকিৎসক রয়েছেন এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিনেগুবভ বলেছেন, ‘শত্রু আবার একটি ডাবল স্ট্রাইক কৌশল (পরপর দ্বিতীয় দফায় হামলা) ব্যবহার করেছে, যখন চিকিৎসক, উদ্ধারকারী এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।’
খারকিভের মেয়র ইগর তেরেখভ স্থানীয় মিডিয়ার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তুপের নীচে আরও বেশি লোক আটকে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘সেখানে কোন সামরিক ব্যক্তি ছিল না, এমনকি সামরিক কোন সরঞ্জামও ছিল না।’ পরে তেরেখভ জানান,হামলায় ২৩ জন আহত হয়েছে।
খারকিভ ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, রাশিয়ার বেলগোরোড থেকে সীমান্তের ওপারে অবস্থিত এবং নিয়মিত রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণের শিকার হয়।
গত সপ্তাহান্তে শহরের একটি হার্ডওয়্যার সুপারস্টোরে রাশিয়ার হামলায় ১৬ জন নিহত হয়।
মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার ভূখন্ডে লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন, তবে তা শুধুমাত্র খারকিভ অঞ্চলকে রক্ষা করার জন্য।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি তার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে ইউক্রেন খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার হামলার পাল্টা জবাব দিতে মার্কিন সরবরাহকৃত অস্ত্র ইউক্রেন ব্যবহার করতে পারে।
দ্বিতীয় আরেক মার্কিন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে বাইডেন নীতি পরিবর্তন করতে পারেন।
ব্লিঙ্কেন এই মাসের শুরুতে ইউক্রেন সফর করেছিলেন, প্রাগে ন্যাটোর আলোচনার প্রাক্কালে মলদোভায় সাংবাদিকদের কাছে এক মন্তব্যে উল্লেখ করেন,‘যুদ্ধক্ষেত্র পরিবর্তিত হয়েছে’ এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার নীতি ‘অভিযোজিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ’ করেছে।#বাসস