নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি………………………………………………..
রাজশাহীতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে তিন ফসলি কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে খনন করা হচ্ছে পুকুর। বিশেষ করে জেলার নয় উপজেলার বিল গুলোয় চলছে এ ধরনের কর্মকান্ড। এভাবেই বিল গুলোতে ফসলি জমিতে খনন করা হয়েছে শতশত পুকুর। অধিক লাভের আশায় মাছ চাষ করে এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা খনন করেছে এসব পুকুর। এতে কমেছে খাদ্যশস্যের উৎপাদন। এনিয়ে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার পুঠিয়া,বাগমারা,দুগাপুর মোহনপুর,পবা,তানোর,গোদাগাড়ি.চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় বাগান ও তিন ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের মহোৎসব চলছেই। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এলাকার আওয়ামীলীগ নেতাকমীরা ও প্রভাবশালীরা এসব পুকুর খনন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে এলাকায় ফসলি জমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ওপরও দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এর ফলে একদিকে জমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন যেন অসহায় হয়ে পড়েছে। সিন্ডিকেট করেও অবৈধভাবে এই পুকুর খনন চলছে। এ নিয়ে এসব এলাকায় মামলা-মোকদ্দমাও বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানাগেছে।
স্থানীয় প্রশাসন দিনের বেলায় বাঁধা দেয়ার এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা এবং পুকুর খননেন যন্ত্রপাতি জব্দ করে থাকে। কিন্তু রাতের বেলায় রাতরাতি খনন কাজ অব্যাহত রাখা হয়। আবার কেউ কেউ উচ্চ আদালতে রিট করে এই পুকুর খোড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। এসব জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলায় পুকুর খনন করা হচ্ছে। আর অবৈধ পুকুর খননকারীর তালিকায় রয়েছেন, স্থানীয় ক্ষমতাসীনসহ রাজনৈতিক দলের নেতা,পরিষদ চেয়ারম্যান-মেস্বার ও মাটি খেকো ব্যবসায়ীরা।
অভিযোগ আছে, থানা, উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করেই এই কর্মকান্ড চলছে। অন্যদিকে পুকুর খননের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্যরা। এবিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলছেন, গত বর্ষায় পানি জমে বেশ কিছু স্থানে ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। প্রশাসনের কাছে দেনদরবার করেও বিলের পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়নি। পুকুর খনন যেভাবে বাড়ছে, সামনে আরো বেশি পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট হবে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের জন্য বন্ধ হচ্ছে বিলের পানি নিষ্কাশন নালা। ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ।
আবার মাটি বহনে ভাঙছে রাস্তা-ঘাট,কৃষিজমি হারাচ্ছে তার স্বরূপ এবং প্রকৃতি হারাচ্ছে তার বৈচিত্র্য। কিন্তু প্রশাসনের যেন কিছুই করার নেই। এদিকে, প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দিলে এস্কেভেটরের (ভেকুর) ব্যাটারি খুলে আনতে দেখা যায়। তবে আবার দুই এক দিনের মধো আবার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ব্যাটারি গুলো ফেরত দেওয়া হয়।#