মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি : “আমার পুলিশ, আমার দেশ—বৈষম্যহীন বাংলাদেশ”—এই প্রত্যয়কে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গৌরবময় ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করা আরএমপি আজ এক আস্থাশীল, জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
আজ ১ জুলাই ২০২৫, সকাল ৯:৩০টায় আরএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী আয়োজনে বেলুন-ফেস্টুন উড়ানো ও কবুতর অবমুক্তকরণের মাধ্যমে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। এরপর দোয়া ও আলোচনা সভাসহ অনুষ্ঠিত হয় বর্ণিল র্যালি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মো: জিল্লুর রহমান, প্রিন্সিপাল, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা; জনাব খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি, কমিশনার, রাজশাহী বিভাগ; মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার), পিএইচডি, রেঞ্জ ডিআইজি, রাজশাহী; অধ্যাপক ড. মো. মাঈন উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; মু. যহুর আলী, অধ্যক্ষ, রাজশাহী কলেজ; জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার; পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম; এবং র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, পিএসসি।
আলোচনা পর্বে পুলিশ কমিশনার বলেন, “মাত্র ৪টি থানা ও ১১৩৫ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে আরএমপি’র অধীনে রয়েছে ১২টি থানা ও ৩,৪১৪ জন সদস্য। নগরবাসীর নিরাপত্তা ও সেবায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও আধুনিক পুলিশিং ব্যবস্থা গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। এ সময়ের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনসমূহ সংস্কার ও হারানো অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো নাগরিক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য যথাযথ যাচাইয়ের পর মামলা নেওয়া হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, “কোনো ঘটনার প্রকৃত সত্য জানতে সরকারের বক্তব্যের পাশাপাশি গঠনমূলক বিরোধী মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। পুলিশের ইতিহাসে কিছু ঘটনা নেতিবাচক ছাপ ফেললেও একটি গোটা প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করা অনুচিত। রাজনৈতিক প্রভাব কমিয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনই হবে পুলিশের বড় সাফল্য।”
আলোচনায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, “একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম। জনগণের আস্থা অর্জনে পুলিশকে হতে হবে আরও মানবিক, দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক।” অনুষ্ঠানে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা, রাজশাহী রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়