বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় কড়া নিরাপত্তায় রোববার (১৩-১০-২০২৪) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে। পূজা বিসর্জন এলাকার নদীর ঘাট-পুকুরপাড় এর আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ, আনসার সদস্যসহ সিভিল পোষাকধারি আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে বিসর্জন কার্যক্রম শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যার আগে।
সরেজমিন উপজেলার বিসর্জন এলাকার নদীর ঘাট ও পুকুরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভ্যানে করে প্রতীমা নেওয়া হয় আনা হচ্ছে বিসর্জনের ঘাটে। ভ্যানের সঙ্গে ছিলেন ভক্তরা। ভ্যান পৌছলেই স্বেচ্ছাসেবীরা সুশৃঙ্খলভাবে দেবী দুর্গাকে নামিয়ে নিচ্ছেন। সাত পাক ঘোরানোর পর দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় ‘জয়, দুর্গা মায়ের জয়’ বলে নারীরা উলুধ্বনি দেন। নদীর ঘাট এলাকায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও পুকুর পাড় এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ।
প্রতিবারের মতো পরিবার নিয়ে এবারও পূজায় নিজ গ্রাম বাঘা পৌরসভার নারায়নপুরে এসছিলেন কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ন সচিব রথীন্দ্রনাথ দত্ত। কথা হলে তিনি বলেন, এবার দুর্গাপূজা ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। দুর্গাপূজা শুরুর আগেই অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এবার দুর্গাপূজা অনেক জাঁকজমকপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে।
উৎসবে সহযোগিতা করেছে রাজনৈতিক দলে তো কর্মী। নিরাপত্তাসহ সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করেছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও মন্দিরের সাথে সংশ্লিষ্টরা। বাঘা পৌরসভার নারায়নপুর ঘাটে কথা হলে- হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার বাকু পান্ডে জানান, নির্ভিঘেœ পুজা বির্সজন করতে পেরে আমরা খুশি। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল পুরো এলাকা। পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি পুলিশের বিশেষায়িত টিম,আনসার সদস্যরাও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
এছাড়া নৌ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্বে ছিলেন। প্রস্তুত ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও। উপজেলা নির্বাহি অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। পূজা শুরুর আগেই রাজনৈতিক দলসহ সকলের সহযোগিতায় নির্বিঘেœ পূজা উদযাপন শেষ করেছি। এবছর উপজেলায় ৪৮টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় ১টি বেশি। শাস্ত্র মতে, গতকাল শনিবারই নবমীর লগ্ন শেষ হওয়ার পর দশমীর লগ্ন শুরু হয়।
পূজার আনুষ্ঠানিকতা সেদিনই শেষ হলেও বিসর্জন দেওয়া হয় রোববার। এদিন দুপুরের আগেই মহানবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা শেষে দেবীর দর্পণ বিসর্জনের আগে দুুপুর পর্যন্ত ভক্তরা মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন। পওে ছোট ছোট দলে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এক মন্ডপ থেকে অন্য মন্ডপে ঘুরে দুর্গা দেবীর প্রতিমা দর্শন করে ভক্তরা মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করেন। এ সময় সাউন্ড সিস্টেমে দুর্গাপূজাকে ঘিরে তৈরি বিভিন্ন গান বাজছিল।তবে বিসর্জনের ক্ষণ এগিয়ে আসায় ভক্তদের মনে ছিল বিদায়ের সুর। দেবী দুর্গা এবার এসেছিলেন দোলায় চড়ে। আর মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামী মহাদেবের কাছে ফিরেছেন ঘোড়ায়। #