বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ১০ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার দিল্লিতে অবস্থিত সে দেশের দূতাবাস ঘেরাওয়ের সিদ্ধান্ত নিল সিভিল সোসাইটি অব দিল্লি নামে একটি সংগঠন। মূলত আরএসএসের ছাতার তলায় প্রায় সিভিল সোসাইটি অব দিল্লি ছাড়াও দু’শোটি সংগঠন ওই ধর্নায় অংশ নিতে চলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ওই বিক্ষোভের আগের দিন বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী।
আজ আরএসএসের মঞ্চ থেকে দিল্লির নাগরিক সমাজ ওই প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে। সূত্রের খবর, দিল্লির সমস্ত বাজার কমিটি, রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, চিকিৎসক, আইনজীবী, ছাত্র সংগঠন ছাড়াও রাজধানীর দুর্গা পুজো কমিটি, রামলীলা, ছট কমিটি ও গুরুদ্বার কমিটি ওই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিতে চলেছে। এক দিকে, আরএসএস যখন দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতবাসের প্রতিবাদ মিছিলের পরিকল্পনা করেছে, তখন বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে দু’দিন আগে আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার ঘটনায় আখেরে মুখ পুড়েছে সরকারের। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার যখন দূতাবাসে হামলার ঘটনা নিয়ে বিড়ম্বনায়, তখন আরএসএসের নেতৃত্বে দিল্লিতে ওই কর্মসূচি নিয়ে সরকারের অন্দরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
কূটনীতিকদের মতে, বিক্রমের সফরের অন্যতম লক্ষ্য হল বাংলাদেশে হিন্দু-সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই আবহে সাউথ ব্লক কখনই চায় না এমন কিছু হোক যাতে, বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও রাজনীতিকদের মতে, সামনেই দিল্লিতে ভোট। তার পরে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন। বাংলাদেশের ঘটনাকে সামনে রেখে দু’রাজ্যেই হিন্দু ভোটকে একজোট করার লক্ষ্য নিয়েছেন গেরুয়া নেতৃত্ব।
আজ দিল্লির নাগরিক সমাজের পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রতিবেশী দেশে পরিস্থিতি নিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত বীণা সিক্রি বলেন, ‘‘বর্তমানে যে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে, তাদের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি ক্ষমতা নেই। কারণ মুহাম্মদ ইউনূস সরকার ভোটে জিতে আসেনি।’’
আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা প্রধান রাজীব জৈন জানান, বাংলাদেশের অস্থিরতা ভারতের জন্য ভবিষ্যতে নিরাপত্তাজনিত বিপদ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যে ভাবে মৌলবাদীরা বাংলাদেশের দখলে নিয়ে ফেলেছে, তাতে আগামী দিনে পাকিস্তানের মদতে বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই মধ্যে আজ সংসদে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে শাহের সঙ্গে আলোচনা হয় তাঁর।