পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় মরিচ, ভুট্টা ও বাদাম শুকানো নিয়ে কৃষকের বাড়তি ব্যস্ততা চোঁখে পড়েছে। গত কিছুদিন ধরে পঞ্চগড়ের আবহাওয়া স্থিতিশীল থাকায় বৃষ্টি ও রোদের তীব্রতা না থাকায় কৃষকেরা সময়মতো মরিচ, বাদাম, ভুট্টা জমি ক্ষেত্র থেকে উত্তোলন করতেও শুকাতে পারেনি।
আজ ( বুধবার) ২৮ মে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় এবারে ভুট্টা এবং মরিচ আশানরূপ ভালো ফলন আসার পরেও কৃষকদের চোখে মুখে আশার আলোর চেয়ে হতাশা বেশি দেখা দিয়েছে। কারণ ফলন ভালো হওয়ার পরেও ন্যায্য দাম পাচ্ছে না।
কৃষক রফিক উদ্দিন বলেন মরিচ ও ভুট্টা আমরা ঠিকঠাক মতো শুকাতে পারছি না, কখনো দিনের বেলাতেই বৃষ্টি হচ্ছে এতে করে শুকানোর কাজে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু আজ রোদের তীব্রতা বেশি তাই আমরা ভুট্টা ও মরিচ শুকাতে পারছি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় শুকনো মরিচ ও ভুট্টা শুকানোর কাজে কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছে।
বুধারু মোহাম্মদ বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে মরিচ করতে খরচ হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এবারে ভালো বীজ, সার ও কীটনাশকের অনেক খরচ বেড়ে গেছে এরপর মরিচ গাছে ভাইরাস ধরেছিল তারপরেও আলহামদুলিল্লাহ ভালো ফলন পেয়েছি। আর প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ তুলতে খরচ হয় ৫ টাকা। কিন্তু বাজারে শুকনো মরিচের দাম প্রতি মণ ৪৫০০-৫০০০ টাকা। এতে মরিচের খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে বেশ চিন্তিত আছি।
প্রান্তিক পর্যায়ে ভুট্টা চাষী লতিবুর রহমান বলেন -আমাদের ভুট্টা মোটামোটি ভালো ফলন আসার পরেও কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছি কেননা পর্যাপ্ত রোদ না থাকায় ভুট্টা শুকাতে দিতে পারছিলাম না । কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্ভাবনা মনে করছি, কেননা ভুট্টা ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে না পারলে আমরা ভুট্টা বেশিদিন ঘরে রাখতে পারব না। রোদের তাপমাত্রা না বাড়লে সংরক্ষিত ভুট্টার গুণগত মান ও রং নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও পচে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
বাদাম চাষী মুস্তাকিন বলেন, আলহামদুলিল্লাহ বাদামের ভালো ফলন হয়েছে এবং রোদ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুকাতে পারছি। আশা করছি দাম ও ভালো পাব। ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, আবহাওয়া ভালো না থাকায় গতবারের চেয়ে এবার মরিচ ও ভুট্টার দাম কম। কৃষকেরা মরিচ ও ভুট্টা ভালোভাবে শুকাতে পারছে না এতে মরিচের কালার নষ্ট হওয়ার ৪৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা শুকনো মরিচ কিনছি আর ভুট্টা প্রতি মন ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে কিনছি। তবে বাদামের ফলন ভালো হওয়ায় দামও বেশি প্রতি মণ ৩০০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা কিনছি।
এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রী জিতেন বলেছেন- পঞ্চগড়ে গত কিছুদিন ধরে দিনে ও রাতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে এবং আকাশে মেঘ থাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক (২৫ ডিগ্রি সেঃ ) উঠানামা করছিল। তবে এখন তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা কয়েকদিন ধরে চলমান থাকবে।#