# অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, শিবগঞ্জ থেকে……………………………………………..
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠান বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান সাবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন অভিযোগ উঠার পর গোটা এলাকার সবস্থানে প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির তথ্য এখন (টক অফ দ্যা ভিলেজ) পরিনত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ গুলোর সত্যতা খুঁজতে গিয়ে আমাদের অনুসন্ধান দল আরো বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, মোহা. সাবির উদ্দিন ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছিলেন । নিয়োগের কিছু দিন পর থেকেই নিজের দুর্নীতির জাল বিছাইয়ে দেন প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গুলোর উপর এমনটাই দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
প্রধান শিক্ষক সাবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও পাহাড়’সম দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ক্ষোধ বিদ্যালয়ের ১৯ শিক্ষকের মধ্যে ১৬ শিক্ষকসহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি , জন প্রতিনিধিসহ- স্থানীয় লোকজন ।
একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দূর্নীতিতে এলাকাবাসী আজ সোচ্চার ও বিক্ষুব্দ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সাবির উদ্দীনের উপর।
অনুসন্ধান কালে ওই শিক্ষা প্রধানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি গুলোর চলমান প্রক্রিয়াতে নতুন করে আরো ৬/৭টি সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে । যার বিপরীতে রয়েছে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ। সেই অভিযোগগুলোর কপি এখন অনুসন্ধান দলের কাছে।
অনুসন্ধানে জানাগিয়েছে এ সব অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উল্লেখ করে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত ২৮ মে ‘২৩ইং তারিখে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির ১৬ শিক্ষক।
এছাড়াও গত ৯ জুলাই ওই ১৬ জন শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের- ও মহাপরিচালক বরাবর একই অভিযোগ দায়ের করেন ।
অভিযোগ করা আবেদনটি গ্রহনের অনুলিপি আরো কয়েকটি অফিসেও দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ করা ১৬ জন শিক্ষকের নাম থাকলেও স্বাক্ষর করেছেন ১৩ জন শিক্ষক। সরজমিনে অভিযোগকারী শিক্ষকদের সাথে এ বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান দল যাই প্রতিষ্ঠানটিতে।
অনুসন্ধান দলের সদস্যরা শিক্ষকদের সাথে তাঁদের বিভিন্ন অভিযোগ গুলোর সত্যতা নিয়ে কথা বলেন । এ সময় অভিযোগ কারী শিক্ষকরা বিভিন্ন ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ কারী সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও তরিকুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক অন্যন্য শিক্ষকদের প্রতি চরম অসদাচরণ করেন। তুচ্ছ বিষয়েও শিক্ষকদের গালিগালাজ করে মুখের ভাষা ব্যবহার করেন। ছাত্র ছাত্রীদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করেন তাতে করে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান সম্মান আজ হুমকির মুখে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী ও শিক্ষা প্রধানের অসাদচরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অনুসন্ধান দলকে যার ভিডিও ক্লিপ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
অভিযোগকারী শিক্ষকরা বলেন, স্কুলের সম্পদের আয়-ব্যয়ের সঠিক কোনো হিসাব তিনি কখনো দেননি জানতে চাইলে বাজে মন্তব্য করে বসেন এবং গুড়ি মুসি করে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দেন ।
তার এহেন ও আচরণ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ১৬ জন শিক্ষক – শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা দিয়েছি। তদন্ত হলেই প্রধান শিক্ষকের সমস্ত দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসবে ।
এছাড়া’ও অনুসন্ধান কালে দলের সদস্যরা জানতে পারে জনৈক আতাউর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান সাবির উদ্দীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
বিধায় অনুসন্ধান দল অভিযোগ কারীর গ্রামের বাড়ী বিনোদপুর ইউনিয়নের চাঁদসিকারী গ্রামের জনৈক আতাউর রহমানের মুখোমুখি হয়।
অনুসন্ধান দলকে আতাউর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের দোকান ঘর বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ৪ জুলাই রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। এই সব অভিযোগ গুলোর কপি ও অনুসন্ধান দলের কাছে তুলে দেন।
আতাউর রহমরানের অভিযোগ গুলো-কতটা সত্যতা রয়েছে কিংবা কেনই বা করেছেন জানতে চাইলে উত্তরে বলেন, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তিনি দোকান ঘর বরাদ্দের কথা বলতে গেলে মুখের ভাষা খারাপ ও অসাদচরন করেন। বেশ কিছুদিন তার দ্বারস্থ হয়ে ব্যর্থ হন। বিধায় বাধ্য হয়েই প্রধান শিক্ষক সাবির উদ্দিনের কাছ থেকে প্রতিকার না পেয়ে অভিযোগ করেছি। তিনি অভিযোগ গুলোর প্রমাণ করতে পারবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ।
এদিকে প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে গত জুলাই’য়ে সংবাদ প্রকাশ হলে তা আমলে নেন শিবগঞ্জ আমলী আদালত এবং ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাসকে নির্দেশ প্রদান করেন।#