নাজিম হাসান,রাজশাহী………………………………………………
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ১১ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাজশাহী থেকে কোনো রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। বাইরের কোনো বাসও রাজশাহীতে প্রবেশ করেনি। ঢাকাগামী কোচগুলোও সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘটের কারণে বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না চলায় অটোরিকশা বা ছোট বাহনে মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। এজন্য তাদের বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন অন্য কথা। তাদের ভাষায় রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকাতে এটা আওয়ামী লীগের নয়া কৌশল।
এতে করে অস্বাভাবিকভাবে চাপ বেড়েছে ট্রেনে। তাই বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকিট এরই মধ্যে হাওয়া হয়ে গেছে। টিকিট না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়েই রওয়ানা দিচ্ছেন। এছাড়া পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রাজশাহীর আন্তঃজেলা রুটের যাত্রীরাও। সিএনজি, হিউম্যান হলার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন বিকল্প যানবাহনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাত্রীরা জরুরি প্রয়োজনে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা দিচ্ছেন। রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে আজ থেকে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) মধ্যে সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে ছিলেন তারা।
এদিকে রাজশাহীতে আগামী ৩ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশ রয়েছে বিএনপির। এই গণসমাবেশ উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের আগমন ঘটবে। তাই বিএনপি নেতাদের দাবি, ১১ দফা মূল বিষয় নয়, মূলত দেশের অন্যান্য গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতেই তাদের নয়া কৌশল হিসেবে এ পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাতিউল হক টিটু বলেন, আমাদের অনেক দিনের দাবি ছিল এটি। আমরা নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। তবে আমাদের কোনো আশ্বাস না দেওয়ায় আমারা আজ সকাল থেকে স্বেচ্ছায় কর্মবিরতিতে গেছি। মানুষের ভোগান্তি ও বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে চানতে চাইলে তিনি বলেন বিএনপির সঙ্গে এই পরিবহন ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি আমাদের দাবি আদায়ের স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, মূলত পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা সরকারকে এই পরিবহন ধর্মঘটের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে চাইছেন। বিএনপির প্রত্যেকটা সমাবেশের আগেই বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় এমন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে এতকিছুর পরও মানুষ কোনো না কোনোভাবে গণসমাবেশে গেছেই এবং শতভাগ সফলও হয়েছে। তাই ধর্মঘট দেওয়া হোক, আর যা-ই দেওয়া হোক না কেন- রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বরের গণসমাবেশে জনস্রোত নামবে। শুধু সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠ নয়, পুরো রাজশাহী শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে। কারণ হচ্ছে- ঢাকার বাইরে এটিই হলো বিএনপির শেষ গণসমাবেশ। তাই কোনো বাধাই কাজে আসবে না। বিশাল জনসমুদ্রই প্রমাণ করে দেবে যে এ ধরনের ধর্মঘট ডেকে বিএনপির সমাবেশ কোনোভাবেই ব্যর্থ করা যায় না।#