মমিনুল ইসলাম মুন……………………………………………………..
রাজশাহীর তানোর ও মোহনপুরসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গৃহপালিত পশু-পাখির অনুমোদনহীন, ভেজাল ও নিম্নমাণের ওষুধে বাজার সয়লাব অভিযোগের তীর রেনেক্স এনিম্যাল হেলথ্ লিঃ এর দিকে। তনোর পৌরসভার আমশো মথুরাপুর রেনেক্স কোম্পানিতে ওষুধ উৎপাদনের কথা বলা হলেও ওষুধের গায়ে ঢাকার ঠিকানা লেখা রয়েছে। এতে প্রমাণ হয় ওষুধ নকল ও ভেজাল নইলে উৎপাদনের ঠিকানা গোপন করা কেন ? আর এটা তো ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন নীতিমালার পরিপন্থী। ফলে এদের আইনের আওতায় নেয়া এখন সময়ের দাবি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ওষুধ সেবনে গৃহপালিত পশু-পাখি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা ঢাকার ওপর দায় চাপাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, গৃহপালিত প্রাণীর জীবন রক্ষা ও মোটা তাজাকরণের এসব ওষুধ আসল, নকল, ভেজাল না নিম্নমাণের তা বোঝার ক্ষমতা নেই সিংহভাগ মানুষের। আর মানুষের সরলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নতুন লেভেল ও দৃষ্টিনন্দন মোড়কে অনুমোদনহীন নিম্নমানের ওষুধ বোতলজাত ও বাজারজাত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অনুমোদনহীন এসব নকল ওষুধ সেবন করে গরু-মহিষ ছাগল ইত্যাদি সুস্থ না হয়ে আরও বেশি অসুস্থ হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে তাদের কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রাণী সম্পদ বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাঠকর্মী এসব ওষুধ কিনতে গবাদি পশু মালিকদের উদ্বুদ্ধ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণী সম্পদ বিভাগের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক মাঠকর্মী বলেন, বিভিন্ন হাট-বাজারের ওষুধের দোকানে অভিযান চালিয়ে রেনেক্স এনিম্যাল হেলথ্ লিঃ এর ওষুধ পরীক্ষা করা হলেই এসবের সত্যতা মিলবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা বলেন, এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই মালিক ইমরান তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখায়। এছাড়াও একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও ভোক্তাঅধিকার, পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে এখানো কোনো অভিযান করা হয়নি। যা অত্যন্ত রহস্যজনক।
স্থানীয়রা জানান, তানোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড মথুরাপুর মহল্লায় রাতারাতি গড়ে উঠা রেনেক্স এনিম্যাল হেলথ লিঃ ২৫টি ওষুধ বাজারজাত করনের অনুমতি নিয়ে ৫৫টি ওষুধ তৈরী ও বাজারজাত করছে, এর বাইরেও আরো ১০ থেকে ১৫টি ওষুধ বাজারজাত করা হচ্ছে। আবার তানোরে ওষুধ উৎপাদনের কথা বলা হলেও ওষুধের প্যাকেটে ঢাকার ঠিকানা ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ওষুধ তাদের কাছে ভেজাল বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। কারণ হিসবে তারা বলেন, এখানে ওষুধ তৈরীর আধুনিক যন্ত্রপাতি, উপকরণ, কেমিষ্ট ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক নেই, নেই উৎপাদিত ওষুধের মান পরীক্ষার ব্যবস্থা । এমনকি এসি নষ্ট সব সময় কারখানার গেটে বাইরে থেকে তালা দিয়ে ভিতরে কাজ করানো হয়।
গতকাল সরেজমিন, কারখানার কয়েকটি ঘরে বিভিন্ন সাইজের বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের বোতল, লেভেল, কাগজের কার্টুন, পলিথিনসহ বিভিন্ন সামগ্রী দেখা গেছে। স্থানীয়রা এখানে নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ কারখানা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছেন ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক কাছে।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা, বেলাল উদ্দিন বলেন, সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর রেনেক্স এনিম্যাল হেলথ লিঃ এর স্বত্ত্বাধিকারী ইমরান বিশ্বাস (০১৭১২-৬৩২০৪৩) এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ২৫টি ওষুধ বাজারজাত করছেন, সবগুলোর অনুমতি রয়েছে।#