# বিশেষ প্রতিবেদক, শাওন আমিন, চট্টগ্রাম থেকে…………………………………………….
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন ষোলশহর রেলষ্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এ স্থান পাড়ি দিয়েই প্রতিদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বেশকিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকায় নগরবাসীর কাছে এলাকাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই স্থানটিই এখন পুরোপুরি পরিনত হয়েছে কিশোর গ্যাং,জুয়া,মাদক সেবন , বেচাকেনা,ছিনতাই চোরের আস্তানা হিসেবে। তাছাড়া জুয়া, ছিনতাই, মাদকের পাশাপাশি প্রকাশ্যে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রাপ্ত বয়স্করাতো আছেই এই এলাকার উঠতি বয়সি যুবকরাও দিন দিন জড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা জুয়া, মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপে। উঠতি বয়সী কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাং,ছিনতাই ও নেশার জগতে। ফলে এই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে বেড়েছে চুরি,ছিনতাই চাঁদাবাজি সহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড।
মূলত জুয়ার আসরটিকে কেন্দ্র করে আশেপাশে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট টিনের তৈরী ঘর। আর এই ঘরগুলোতে দিনরাত চলে মাদক ও নারী ব্যবসা। বছরখানেক আগেও নিয়মিত পুলিশের অভিযান দেখা গেলেও এখন কোন অদৃশ্য ইশারায় অভিযান নেই বললেই চলে বলছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এদিকে এই এলাকার জুয়ার বোর্ড ও মাদকের স্পটগুলো রীতিমতো এলাকাবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের অভিযান না থাকায় দিনের পর দিন বেড়েই চলছে এই অপরাধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, জুয়ার বোর্ড যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, প্রশাসনের সাথে তাদের রয়েছে দারুন সখ্যতা।
এলাকাবাসী আরো জানান নিয়মিত জুয়া ও মাদকের স্পটগুলো থেকে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় আদায় কৃত অর্থ প্রশাসনকে মাসোহারা হিসেবে দিয়ে থাকে নিয়ন্ত্রণকারীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ষোলশহর রেলস্টেশন বিপরীতে বেশ কয়েকটি ঘরে হরদমে চলছে জুয়া। আবার এই ঘরগুলোর পাশেই চলছে নারী ব্যবসা আবার কিছু কিছু ঘরে বসেছে ইয়াবার আসর। গোধুলী বিকেলের পর সন্ধ্যা নেমে আসলেই মাদক, জুয়ার আসরগুলো জমজমাট হতে শুরু করে। বলতে গেলে তখন অনেকটাই প্রকাশ্যে চলে এই অপরাধ ৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এইসব মাদক, জুয়া নিয়ন্ত্রণ করে রমজান প্রকাশ জুয়ারি রমজান এবং দেখভাল করে সাজেদুল ওরফে জামাই নামক জনৈক ব্যাক্তি। রমজান এলাকার চিহ্নিত অপরাধী হিসেবে এলাকাবাসী ও পুলিশের কাছে বেশ পরিচিত। নগরীর বেশ কয়েকটি থানায় একাধিক মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে। ফলে জুয়ার ও মাদকের বিষয়ে এখানকার কেউ সরাসরি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, রমজান ও কথিত জামাই অনেক ক্ষমতাধর। তাদের বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে যদি কেউ মুখ খোলে তাকে গুনতে হবে মিথ্যা মামলা হামলা এবং কি মৃত্যুর দুয়ারে পর্যন্ত পৌঁছার সম্ভাবনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের আরো কয়েকজন এই প্রতিবেদক কে জানান , এই জুয়ার বোর্ডটির কারণে এলাকায় বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং বেড়ে গেছে। শুধু সন্ধ্যা, রাতে নয় দিনদুপুরেও চলাফেরা করতে পারছিনা সাধারণ মানুষ। আর এলাকার উঠতি বয়সি ছেলেরাতো দিন দিন অধঃপতনে যাচ্ছে, জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাং কালচারে।
এই প্রতিবেদক স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে “আপনারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন না কেন”? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তারা বলেন, পুলিশকে কি বলবো? “পুলিশকে অভিযোগ দিলে পুলিশ নিজেই যেই নাম্বার থেকে অভিযোগ করেছে, সে নাম্বারটিও তাদের কাছে দিয়ে দেয় আর পরে অভিযোগকারীর উপর চলে রমজান ও তার দলবলের অত্যাচার”। আর তাই রমজানের ভয়ে শুধু আমরা কয়েকজন কাকে বিচার দিব কাকে বলব, আমরা ছাড়া তো এখানে কেউই মুখ খুলেনা। আমরা প্রশাসনের ও সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।#