নিজেস্ব প্রতিবেদক, বাগমারাঃ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় কৃষকরা খরিপ-২ মৌসূমে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ্ই এলাকার শত শত কৃষকরা এখন চাষাবাদ ও চারা রোপণের কাজে উঠেপড়ে লেগেছেন। উফসি ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ শুরু করেছেন বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৭শত ৫ গেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হলেও প্রকৃত চাষাবাদের পরিমান ৪ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শ্রাবণের শুরুতে কয়েক দফা বৃষ্টিপাতের কারণে অপেক্ষাকৃত উচু জমি সেখানে ভরা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম এমন জমিতে রীতিমত রোপা আউশ চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছর ইরি বোরোর বাম্পার ফলন হলেও শেষ পর্যায়ে ধান কাটাই মাড়াই নিয়ে কৃষক বিড়ম্বনায় পড়ে। ওই সময় টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অনেকের কাচা পাকা ধান তলিয়ে যায়। পরে ওই সমস্ত ধান কৃষক ঘরে তুলে আনলেও মান ঠিক না থাকায় কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। এবার কৃষকরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাড়তি জমিতে রোপা আউশ চাষাবাদ শুরু করেছেন।
মাড়িয়ার কৃষক লুৎফর রহমান জানান, গত বছর আলু চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তারপর সাত বিঘা জমিতে ইরি বোরো চাষ করে বাম্পার ফলন হলেও ধান কাটাই মাড়াইয়ের সময় বৃষ্টিতে ভিজে ধানের মান নষ্ট হয়ে যায়। এতে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে তিনি বঞ্চিত হন। তার মতে আলু ও ইরি ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি এবার কয়েক বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীন জাতের ধান চাষ শুরে করেছেন। পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ দিয়ে তিন বিঘাতে রোপন শেষ করেছেন।
হামিরকুৎসার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, শ্রাবণের শুরুতে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষক ব্যাপক উদ্যোমে ও এক বুক আশা নিয়ে ধান চাষে নেমে পড়েছেন। তিনিও এবার তিন বিঘাতে চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত শুরু করেছেন। তিনি এবার ব্রি ৭৫ জাতের ধান রোপন করবেন প্রত্যাশা করেছেন। এই ধান ব্যাপক ক্ষরা সহ্য করতে সক্ষম এবং হটাৎ বন্যায় তলিয়ে গেলে দুই সপ্তাহ পানির নীচে তলিয়ে থাকলেও ধান গাছ পচার সম্ভাবনা কম। তার মতে এখানকার অধিকাংশ কৃষক উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে আগ্রহী। ব্রি-৭৫ ছাড়াও অনেকে ব্রি-১০৩ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ শুরু করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, আলু ও ইরি বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা রোপা আউশ চাষে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপকরন দিয়ে সহযোগিতা চলমান রয়েছে।#