আবুল কালাম আজাদ …………………………………………
রাজশাহীতে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত বিএমডিএ রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের অপসারণ ও দ্রুত মামলার চার্জশীট দাখিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা। এ সময় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার না হলে, জনতার আদালতে বিএমডিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিচার হবে বলে মন্তব্য করেন।
২৬ অক্টোবর বুধবার বেলা ১১ টার দিকে নগরীর দড়িখড়বোনা মোড়ে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য বদরুল হাসান লিটন, শরীফ সুমন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান টুকু, সাংবাদিক সৌরভ হাবিব, রাজশাহী ফটো জার্নালিস্ট এসোশিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।
এছাড়াও বিক্ষোভ সমাবেশে সংঘতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, ভুমি আন্দোলনের নেতা আফজাল হোসেন ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী শাখার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ার।
সমাবেশে রাশেদ রিপন বলেন, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী বিএমডিএর ভান্ডার রক্ষক জীবন জামিনে এসে চার জেলার চার শতধিক কর্মচারীদের ডেকে এনে ফুলের মালা পরেছে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। এরা জনগণের টাকায় পরিচালিত হয়, বেতন পায় জনগনের টাকায়। তারা নিয়মবর্হিরভীত ভাবে আন্দোলন করছে আমরা তাদের বিচার চায়।
তিনি আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি একটি দুর্নীতি পরায়ন। তাদের দুর্নীতির মাত্রা চরমে পৌঁছেছে। এরা সাংবাদিকদের নামে কুৎসা রাটাচ্ছে। এসব কুৎসার রটানো বন্ধ করতে হবে নইলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো। একই সাথে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বেগম আক্তার জাহান তাদের বিষয়ে নিরব থাকছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কৃষিমন্ত্রীসহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেন এবং তাদের অপসারণ দাবি করেন। এদের অপসারণ না করা হলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয় যাবো। যতদিন অপসারণ না হবে ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবার হুশিয়ারী প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএমডিএর ভান্ডার রক্ষক জীবন ৪৫ দিন জেল খেটে জামিনে এসে ফুলের মালা পড়ে। এতেই বোঝা যায় এরা কতটা বেহায়া নিলজ্জ ও দুর্নীতিপরায়ন। বিএমডিএ একটি দুর্নীতিপরায়ন প্রতিষ্ঠান। এদের দুর্নীতির মাত্রা এতটায় পৌছে গেছে যে লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, এদের দু:সাহস কোথা থেকে আসে জামিনে এসে চার জেলার কর্মচারীদের রাজশাহীতে নিয়ে এসে ফুলের মালা পড়ে, সংবর্ধনা দেয় আবার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও অশালিন ভাষায় কথাবার্তা বলে। এতে সাংবাদিক পেটানোর মামলার আসামী বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ তাদের পেছনে ইন্ধন দিয়ে এসব করাচ্ছে।
রফিকুল আরো ইসলাম বলেন, এসব দুর্নীতির গড়ার গুরু আব্দুর রশিদ যতদিন এই প্রতিষ্ঠানে থাকবে ততদিন দুর্নীতি চলতে থাকবে। এই রশিদের আমরা অপসারণ চাই। যতদিন অপসারণ না হবে ততদিন আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। প্রয়োজন আরো কঠোর কর্মসূচি দেবার হুশিয়ারী প্রদান করেন এই সাংবাদিক নেতা।
সমাবেশ শেষে সাংবাদিকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি দরিখড়বোন মোড় থেকে বের হয়ে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের সামনে থেকে ফিরে এসে পুনরায় দড়িখড়বোনা মোড়ে এসে শেষ হয়। মিছিলে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের অপসারণ ও বিচার দাবিতে নানান স্লোগান দেয় সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে সরাসরি সম্প্রচারের সময় হামলায় আহত হন এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম। এ ঘটনায় বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ্যসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন বুলবুল হাবিব। এ মামলায় গ্রেপ্তার দুজনই জামিন পান। এছাড়া সম্প্রতি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ।#