1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
রাজশাহীতে ৭ দাবিতে কাফনের কাপড় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ রাজশাহীতে এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়ক শামীমা সুলতানা দল থেকে পদত্যাগ রূপসায় টিএসবি ইউনিয়ন কৃষকদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত সারিয়াকান্দিতে ইউএনও’র সাথে বণিক সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ ডিবির সফল অভিযানে রাজশাহীতে ডাকাতদল গ্রেফতার, স্বর্ণালঙ্কার নগদ টাকা মোটরসাইকেল উদ্ধার নওগাঁর আত্রাইয়ে বান্দাইখাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতির পদত্যাগ ও অধ্যক্ষের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ঢাকায় আল খিদমাহ ন্যাচারাল কেয়ারে ইমামদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে সভাপতি রেজাউল, সম্পাদক শামসুলকে তানোর প্রেসক্লাবের অভিনন্দন আইপি উন্মুক্তের দাবি সোনামসজিদ আমদানী-রপ্তানীকারক গ্রুপের শিবগঞ্জে বিএনপির ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ

রাজশাহীর তাহেরপুরে দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থলে পুণ্যভূমির স্বীকৃতি আজও পায়নি

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২
  • ২২২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

নাজিম হাসান…………………………………..

বারো মাসে তের পর্বণ কথাটি হিন্দু স¤প্রদায়ের জন্য প্রচলিত থাকলেও শারদীয়া বা দূর্গা পূজাই বেশি আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পালন করা হয়। হিন্দু স¤প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রথম শুরু হয় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে। গত ৫৪১ বছর আগে সম্রাট আকবরের শাসনামলে রাজা কংস নারায়ণ সে সময় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু করেন দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে তাই গর্ববোধ করেন তাহেরপুরের অধিবাসীরা।

 

দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে ইতিহাসখ্যাত তাহেরপুর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যভূমির স্বীকৃতি আজও পায়নি। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের জন্য হিন্দু সমপ্রদায়ের অনেক নেতারা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাহেরপুরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজার সময় সারাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীদের মিলনামেলায় পরিণত হতো স্থানটি।

 

এদিকে ১৪৮০ সালে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম রাজা রাজশাহীর কংস নারায়ণ তাহেরপুরের তাহের খানকে যুদ্ধে পরাজিত করেন। যুদ্ধজয়ের স্মৃতি ধরে রাখতে রাজ পুরোহিত রমেশ শাস্ত্রীর পরামর্শে রাজা কংস নারায়ণ দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। তার আহবানে মা দুর্গা স্বর্গ থেকে সাধারণ্যে আবির্ভূত হন। সেই সময় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কংস নারায়ণ প্রথম যে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন, সেই প্রতিমা ছিল সোনার তৈরি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা স্বীকৃত।

 

দুর্গাপূজার গোড়ার কথা কালক্রমে যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য তাহেরপুরে রাজা কংস নারায়ণ প্রথম দুর্গাপূজা সৃষ্টি, মন্দির ও জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কমিটি গঠিত হয়ে ছিল। এ কমিটি দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল তাহেরপুরকে বাঙালী হিন্দুদের শারদীয় উৎসবের পুণ্যস্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেতে বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের কাছে আবেদন করেও স্বীকৃতি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। সে সময় আধুনিক দুর্গোৎসব পদ্ধতি পন্ডিত রমেশ শাস্ত্রী প্রণীত। এ মহাযজ্ঞের প্রথম অনুষ্ঠান হয়েছিল রাজা কংস নারায়ণ রায়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ষোড়শ শতাব্দির শেষ ভাগে। অনুষ্ঠানের স্থানটি ছিল বারনই নদীর পূর্ব তীরে রামরামা গ্রামের দুর্গামন্দিরে। প্রথম দুর্গাপূজার সেই স্থানটি এখন ধ্বংসস্তুপ। এলাকাবাসী স্থানটি সংরক্ষণ করে ধর্মীয় তীর্থস্থান ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে।

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক অধ্যাপক জানান, তাহেরপুর ছিল রাজা কংস নারায়ণের সাংস্কৃতিক রাজধানী। এখানে বসে কৃক্তিবাস রামায়ণের বঙ্গানুবাদ করেছিলেন। ঐতিহাসিক এ স্থানে প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় জাতীয় উৎসব পালনের দাবি করেছেন তিনি। তাহেরপুরে পর্যটকদের তীর্থস্থান করার দাবিতে ২০০২ সালে কমিটির সম্পাদক সঞ্জীব রায় মিন্টু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেন। কিন্তু পুণ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি তো দূরের কথা, এখানে উন্নতমানের একটি মন্দিরও সরকারের পক্ষ থেকে নির্মিত হয়নি।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আক্ষেপ করে বলেন, জনপ্রতিনিধিরা ভোটের আগে হিন্দুদের অনেক মিথ্যা আশ্বাস দেন। কিন্তু ধর্মীয় ব্যাপারে তেমন কোনো কাজ করেন না। এখানকার রাজবাড়ী গোবিন্দমন্দিরে একটি বৃহৎ শিলালিপি রয়েছে। এতে দুর্গাপূজার প্রতিষ্ঠা, স্থান, সন, তারিখ ও অতীত কিছু ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে। এ শিলালিপি ছাড়া এখানে আর তেমন কিছু নিদর্শন নেই। তাহেরপুরের দুর্গাপূরীতে দেবী দুর্গার মূলবেদী পর্যন্ত এখন নেই। বর্তমানে দুর্গাপূরীর বেদীমূলে স্থাপিত হয়েছে তাহেরপুর কলেজ। তার পাশে তিনশ’ বছরের প্রাচীন গাছটির নাম না জানার কারণে ‘অচিন বৃক্ষ’ হয়ে কালের স্মৃতি বহন করছে। তবে হিন্দু শাস্ত্রীয় মতে, মা দুর্গার জন্ম স্বর্গে। সব দেবতার মহাতেজশক্তি নিয়ে মহাপরাক্রমশালী মহিষাসুরকে বধ করার মানসে ক্রেতাযুগে রাবনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দশরথ পুত্র মহামতি রাম মা দুর্গার অকালবোধন পূজা করেন। মা দুর্গা তার পূজায় সন্তোষ্ট হয়ে রাবন বধের বর প্রদান করেন। বর পেয়ে রাম লংকারাজ রাবনকে বধ করতে সক্ষম হন।

 

এদিকে এলাকার সনাতন ধর্মালম্বিদের নেতৃবৃন্দ জানান, ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে পুণ্যভূমি হিসেবে ঘোষণা করা হলে এখানে পর্যটন নগরী গড়ে উঠবে। সারাবিশ্বের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রতি বছর ঢল নামবে এখানে। বাড়বে সরকারের রাজস্বও। এরই ধারাবহিকতা দরে রাখতে এ বছর বাগমারা উপজেলায় ৭৩ টি পুজা মন্ডপে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠত হতে চলেছে। তবে সরকারী মতে ৭২টি আর একটি পুজা তাহেরপুরের মৃত নারায়ন চন্দ্র সাহার পরিবারের ব্যক্তিগত।

 

পূজা মন্ডপ গুলোতে ব্যাপক আলোক সজ্জা ও বিভিন্ন ডিজাইনে সাজানো হয়েছে। এছাড়া মন্ডপ গুলোতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। বাগমারা থানার ওসি মন্দিরগুলোর সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনীর পাশাপশি আমাদের পুলিশ বাহিনীও কাজ করছে। সকল মন্দির কমিটির প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করে নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের সার্বিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

রাজশাহী মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার বলেন, গত দুই বছর করোনার প্রকোপের কারণে কিছুটা সীমিত আকারে পূজা উদযাপন করতে হয়েছে। এবার কোনো রকম বাঁধা না থাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন হচ্ছে। মায়ের আশীর্বাদে এবার জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট