#নাজিম হাসান………………………………………………………
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেখানে যাচ্ছে সেখানেই তারা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময়ই জাতি গঠনমূলক কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত করেছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এখন শুধু দেশে না,আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে অবদান রেখে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে।
শনিবার (মার্চ ২) দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে পাপা বীর এবং দি বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের তৃতীয় কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সদস্যরা নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ অর্পিত দায়িত্ব সফলতার সাথে পালনে সক্ষম হবে। কর্মজীবনে সকল ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখবে।
তিনি বলেন,বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সম্মান ও মর্যাদা। যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে। স¤প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাসদস্যগণ নিরলসভাবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ দেশের সম্পদ, দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক। তাই পেশাদারিত্বের কাঙ্খিত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সকলকে দক্ষ, সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোন হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। উর্ধ্বতন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কর্তব্যপরায়নতা, দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা বজায় রেখে আপনাদের কর্তব্য সম্পাদনে একনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন বলে আমি আশা করি।
তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ সরকার একটি উন্নত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর। সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সার্বিক দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুগোপযোগী উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জামাদি সরবরাহ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও উন্নত প্রশিক্ষণ সামগ্রী সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণসহ সময়োচিত সকল পদক্ষেপ গ্রহণে আমাদের সরকার সদা সচেষ্ট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া রিক্রুট প্রশিক্ষণকে আরও আধুনিকায়ন এবং যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,আমাদের সরকার সব সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে। ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেখানে ক্যাডেটগণ বিভিন্ন বিষয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার সুযোগ লাভ করেছে। রিক্রুটদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ফরমেশনে প্রশিক্ষণ সুবিধাদি সমপ্রসারণ করা হয়েছে।
এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল খন্দকার শাহিদুল এমরান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। সালাম গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বীর গৌরব স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী রেজিমেন্টের দরবারে অংশগ্রহণ করেন।#