# বিশেষ প্রতিনিধি ……………………………………………………………….
কুরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম ও মাংস কাটার কাঠের গুড়ির চাহিদা থাকে প্রতিবছর। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই এসব প্রস্তুত রাখেন বিক্রেতা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা। এর কারণে বিশেষ করে নতুন কোন সরঞ্জাম কেনার দিকে না ঝুঁকে পুরাতন সরঞ্জাম সান (ধার) দিয়ে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন বেশিরভাগ মানুষ। যার ফলে ক্রেতার অভাবে অনেকটাই হাত গুটিয়ে বসে থাকছেন নতুন সরঞ্জাম বিক্রেতা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,বেশিভাগ কামার শালায় পুরাতন সরঞ্জাম সান দিতে। বিক্রেতারা বলছেন, কোঠের-লোহা ও কয়লার দাম এবার বেশি। যে লোহা গত বছর ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন, সেই লোহা এবার ১৩০ টাকা কিংবা তার বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। কয়লা-কাঠের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তবে দাম যাই হোক প্রয়োজন মেটাতে থেমে থাকছেন না ক্রেতারা। শেষ মূহুর্তে এসে কেনা কাটা করছেন- লোহার সরঞ্জাম, কাঠের গুড়ি ও মাংস রাখার পাটি। প্রতিটি পাটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। কোরবানি সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসানো দোকানগুলোতে শোভা পাচ্ছে পশু জবাইয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম।
ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসা অনেকটা পশু কোরবানির ওপর। পশু কোরবানি যত বেশি বিক্রি হবে, তাতে বেচা-বিক্রি বাড়বে। পশুর চামড়া আলাদা করার ছুরি (ছোট) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি ৩০০-৩৫০ টাকা, পশু জবাই করা বড় ছুরি ৫০০ টাকার ওপরে। চাপাতি ৭০০ থেকে হাজার টাকা, লোহার বাঁটঅলা দা ৭-৮শ টাকা, লোহার বঁটি প্রতিপিস সাড়ে ৩শ টাকা, হাড় কাটার চায়নিজ কুড়াল ১ হাজার টাকা। লোহার পাশাপাশি স্টিলের তৈরি ছুরি-চাকুরও বেশ চাহিদা রয়েছে। দাম প্রতি পিচ ৫০ টাকা, শিল-পাথর বঁটিতে ধারের যন্ত্র ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। ফেরি করে তেঁতুল কাঠের গুড়ি বিক্রি করছিলেন নারায়নপুর গ্রামের হরি মিস্ত্রী। তার কাছে বিভিন্ন সাইজের কাঠের গুড়ি রয়েছে। তিনি জানান, প্রকার ভেদে এসব গুড়ি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দামে বিক্রিও করছেন।
বাঘা বাজারে লোহা তৈরি সরঞ্জামের পাশাপাশি কাঠের গুড়ি বিক্রি করছেন শ্রী লালু কর্মকার। তিনি জানান, তার দোকানে সব ধরনের সরঞ্জাম রয়েছে। লোহার সরঞ্জামের তুলনায় এখন কাঠের গুড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। ৮০০ টাকা দামেরও কাঠের গুড়ি রয়েছে। তবে বড় সাইজের তুলনায় ছোট-মাঝারি সাইরের বেশি বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, সাইজ ভেদে লোহার তৈরি সরঞ্জামের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা।
বাজু বাঘা গ্রামের বাদশা মিঞা বলেন, নিজেরাই কোববানির পশু জবাই করি। মাংস কাটার সরঞ্জামের পাশাপাশি বিশেষভাবে প্রয়োজন হয় কাঠের গুড়ির। কাঠের গুড়ির ওপর মাংস রেখে কাটতে সুবিধা হয়। প্রত্যেক বছরই নতুন কাঠের গুড়ি কিনতে হয়। তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ৭০ টাকা বেশি দিয়ে মাঝারি সাইজের কাঠের গুড়ি কিনতে হলো। পুরাতন সরঞ্জাম সান (ধার) দিচ্ছিলেন দ্বিজেন কর্মকার।
কর্মকার জানান, নতুন সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। তাই পুরাতনগুলো কাজে লাগাচ্ছে অনেক মানুষ। এতে ব্যস্ততাও অনেক বেড়ে গেছে। ঈদের সময়টা ব্যবসা ভালো হলেও আগের বেচাকেনায় সংসার চলে না তার। আব্দুল হালিম জানান,আগের কেনা সরঞ্জাম দিয়ে এবার কাজ চালাবেন। #