নিজস্ব প্রতিবেদক…………………………………………………………………….
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলায় ভরা দুর্গাপুর উপজেলা ,আজ চারিদিকে পুকুর আর পুকুর। ফসলের পরিবর্তে চলছে অবৈধভাবে পুকুর খনন। কৃষি জমি রক্ষার চেয়ে ধ্বংসের লিলা খেলায় নিমজ্জিত স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে স্থানীয় ক্ষমতাশীল রাজনীতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এ উপজেলায় উর্বর তিন ফসলী কৃষি জমি কেটে তৈরি করা হয়েছে এবং হচ্ছে বড় বড় পুকুর আর দীঘি। সরকারি আদেশ নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা জুড়ে এখনো কৃষি জমিতে অবাধে চলছে পুকুর খনন। কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খননের প্রতিযোগিতা চললেও প্রশাসন দেখে না দেখার ভান করছেন। মনে হয় কিছুই তারা শুনছেন না বা দেখছেন না।
অপরদিকে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে মাটি কাটার পর বিভিন্ন ইটভাটায় তা চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে আর পরিবহনের জন্য উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীন কাঁচা ও পাকা সড়ক এমনকি মহাসড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি বহনের পথ হিসাবে। অতিরিক্ত মাটি ভর্তি ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় মাটি পড়ে মানুষ সহ সকল ধরণের যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বৃষ্টি হলে রাস্তা গুলোতে বেহাল দশায় পড়তে হচ্ছে সর্বসাধারনের।
উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের অভিযোগ ,স্থানীয় প্রশাসনকে খননকারীরা ম্যানেজ করেই উপজেলা জুড়ে দিন-রাত সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খননের কাজ। অধিকহারে কৃষি জমিতে পুকুর খননের ফলে উপজেলায় ব্যাপক হারে কমেছে কৃষি জমির পরিমাণ সাথে সাথে কৃষি উৎপাদন ও কমেছে অকল্পনীয় হারে। পুকুর খনন রোধে প্রশাসনের এধরনের নিস্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সবস্তরে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খনন করছে অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফসলি জমি খনন করলেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় খননকারীরাদের দৌরাত্ম্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিনের পর দিন এভাবে নিচু ফসলী জমিতে পুকুর খননের কারণে অনান্য ফসলি জমির পানি ঠিক মত নিষ্কাশন না হওয়ায় দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা ।ফলে ভুক্তভোগী কৃষকদের পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি । অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের কারণে পানি প্রবাহের পদ বন্ধ হওয়ে যাওয়ার কারণে বিপর্যয়ের হুমকিতে পরিবেশ। কিন্তূ তাতেও স্থানীয় প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গাছেনা, কৃষি জমি সহ কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায়।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর মৌজার মোহাম্মদপুর বিলে, কিশমতগনকৈড় ইউনিয়নের রঘুনাথপুর বিলে,দেলদুয়াবাড়ি ইউনিয়নের পালশার আংরার বিলে এবং তার পাশেই নওপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর বিলে আবাদি জমি ধ্বংস করে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছ খননকারীরা। অপরদিকে, ঝালুকা ইউনিয়নে ও কিশমত গণকৈড় ইউনিয়নের উজালখলসিতে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে ।
আর পুকুর সংস্কারের নামে চলছে মাটি বেচাকেনায় বেপরোয়া প্রতিযোগিতা। ব্যবহার করা হচ্ছে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাঘাটে। তাতে জরাজীর্ণে বেহাল দশায় সকল জনপথ। এতে নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সর্বসাধারণের। ইউএনও , এসি ল্যান্ড, ওসি এর কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা হচ্ছেনা বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। দুর্গাপুর উপজেলার কৃষি জমি ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ অপরিহার্য। অন্যথায় দুর্গাপুরের কৃষি জমির অস্তিত্ব সংকট আরও ভয়াবহ।#