1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
২০ কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মঃ নওহাটা পৌরসভা এলাকায় নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই পুকুরে ধসে পড়লো সড়ক গোদাগাড়ীতে মোবাইল কোর্টে দুই মাদকসেবীর বিনাশ্রম কারাদণ্ড  রাজশাহীতে সেনা অভিযানে কথিত সাংবাদিক জুলুসহ গ্রেপ্তার ৩, রাজশাহী প্রেসক্লাবে তালা রাজশাহীতে গোলাগুলির পর  ২২ মামলার আসামী সাংবাদিক জুলুসহ গ্রেপ্তার ৩ স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু  লটারিতে বাঘবেড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ডের উপকারভোগী বাঁছাই   সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপর সস্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নেশাজাতীয় অবৈধ ২০০ পিছ ট্যাবপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ আটক ২ তানোরে ফসলি জমি জবরদখলের অভিযোগ, সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে হুমকি দখলকৃত মসজিদের জমি প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার

২০ কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মঃ নওহাটা পৌরসভা এলাকায় নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই পুকুরে ধসে পড়লো সড়ক

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৮৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

৥ মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি :

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভা এলাকায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পৌর এলাকার একটি রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় পুকরে ধসে পড়েছে। এতে রাস্তার দুই পারের মানুষের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। উপায়ন্তর না পেয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দূর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণকাজও শুরু হয়নি এখনো। ফলে এলাকাবাসীর ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছেই।তাদের অভিযোগ নিম্নমাণের নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার করে কাজ করায় এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, প্রায় ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের আওতায় নওহাটা পৌরসভা এলাকায় ১০টি রাস্তা নির্মাণ করছে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জুয়েল ইলেক্ট্রোনিক্স জেভি ওয়াশিমুল হক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও স্থানীয় সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে পবা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর ও নওহাটা পৌরসভা থেকে সবমিলিয়ে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছিলো এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যে করে একই প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কাজটি করাচ্ছে নওহাটা পৌরসভা। আর তাতেই ১০টি রাস্তা নির্মাণ কাজেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। কেউ এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেও তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন এলাকাবাসী বলছে। এর সঙ্গে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তারা বলেন, সিডিউল অনুযায়ী কোনো কাজ হয়নি,তদন্ত করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।তারা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) তদন্তের দাবি করেছেন। এসবের পাশাপাশি ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিলের দাবি করেছেন।

সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পবার নওহাটা পৌরসভা এলাকার দুয়াড়ি থেকে পাকুড়িয়া স্কুল পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ শেষে হয়েছে। কিন্তু পাকুড়িয়া উত্তর-দক্ষিণ পাড়ার মাঝখানে দুই পাশের দুই পুকুরের মাঝে রাস্তাটির প্রায় ৩০ মিটার ভেঙে পুকুরের মধ্যে নেমে গেছে অর্ধেকের বেশি অংশ। রাস্তার একটি অংশের নিচেই রয়েছে দুই পাশে দুটি পুকুর। দুই পাশের প্রটেকশন ওয়ালের পাশে মাটি ভরাট না করেই রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করা হয়। এতে বর্ষায় ওই পুকুরের অংশে বিশালকার অংশজুড়ে ভেঙে যায়। একটি অংশের সম্পূর্ণটাই ভেঙে প্রায় ৫ফিট দেবে গেছে। ফলে ওই অংশ দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২-৩ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় তাঁদের বিকল্প হিসেবে প্রায় তিন কিলোমিটার দূর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

স্থানীয় পাকুড়িয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবু সাইদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়ম করা হচ্ছিল। কিন্তু বার বার অভিযোগ করেও ঠিকাদারের লোকজন শোনেনি। উল্টা গ্রামের লোকজনকেই চাঁদাবাজি মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হতো। ভয়ে তাই কেউ আর মুখ খোলেননি।

জানারুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘গত প্রায় এক মাস আগে রাস্তার কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু প্রটেকশন ওয়ালের কাজ শেষ করা হয়নি।প্রটেকশনের ওয়ালের নিচে মাটিও দেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্ষায় রাস্তার বেশকিছু অংশ ভেঙে গেছে আবার একটি অংশ দেবে গেছে। এতে করে দুই গ্রামের শত শত মানুষের চলচাল বন্ধ হয়ে গেছে। এর বাইরেও অন্যান্য এলাকার মানুষও চলাচল করেন এই রাস্তা দিয়ে। এখন কেউ চলাচল করতে পারছেন না।

সিরাজুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘পাকুড়িয়া উত্তরপাড়ার দু’জন মানুষ মরে যাওয়ার পরে রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় অনেক কষ্ট করে বহু দূর দিয়ে দক্ষিণপাড়ার কবরস্থানে নিয়ে যেতে হয়েছে। গরু-ছাগলও আর বিলে নিয়ে যেতে পারছেন না গ্রামবাসী। রাস্তাটি ঠিক করার জন্য বার বার বলা হলেও সেদিকেও কান দিচ্ছেন না ঠিকাদার।’

নওহাটার আলিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘নওহাটা পৌরসভা এলাকায় যে ১০টি রাস্তার কাজ করছে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, সবগুলো কাজেই ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। পুরনো ইট-সুড়কি দিয়ে এবং একেবারে নিম্নমাণের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে কাজে। কেউ প্রতিবাদ করলেও পৌরসভার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কারণ মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্য করে এ কাজটি ঠিকাদার ওয়াশিমুল হককে দেওয়া হয়েছে।’

পবার একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই ঠিকাদার গত ১৬ বছরে নওহাটা পৌরসভা ও পবা উপজেলা এলাকায় অন্তত দেড়শ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ঠিকাদার ওয়াশিমুল হকের ভাই নুতন হক। তার মাধ্যমে ওয়াশিমুল হক মোটা অঙ্কের কমিশন দিয়ে পবা এলজিইডি এবং নওহাটা পৌরসভার কাজগুলো একচেটিয়াভাবে বাগিয়ে নিতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পরেও তিনি এখনো পৌরসভার মোটা অংকের সবকাজ করছেন এককভাবে।’

তবে কাজে কোনো অনিয়মের কথা অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার ওয়াশিমুল হক। তিনি বলেন, ‘যে অংশটির রাস্তা ভেঙে গেছে, সেটি আবার মেরামত করা হবে। আমরা নিজের খরচেই করে দিব।’ নওহাটা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক তৌফিক রহমান বলেন, ‘২০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজের জন্য ঠিকাদারকে এরই মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকা বিল দেওয়া হয়েছে। তবে রাস্তাটির কাজ যেখানে ভেঙে গেছে, সেটি ঠিকাদারকেই করে দিতে হবে। এর জন্য নতুন করে কোনো বিল দেওয়া হবে না।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট