# লিয়াকত হোসেন ……………………………..
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বোর্ড চেয়ারম্যান ঈদ-উল-ফিতর ২০২২ এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাফর ইকবালের কোন দোষ চিহ্নিত বা প্রমাণিত না করে, বরখাস্ত কিংবা সাময়িক বরখাস্ত না করে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে তার বেতন ভাতা ভাবে বন্ধ রেখেছেন। চেয়ারম্যানের নামে একটি গাড়ি বরাদ্দ থাকলেও তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। একটিতে তিনি নিজে ও অন্যটি তার পরিবার পরিজন ব্যবহার করছেন বলে জানা যায়। চেয়ারম্যানের অসহযোগিতা ও অদক্ষতার কারণে উন্নয়নমূলক কাজ যেমন মসজিদের সংষ্কার, লিফট ও জেনারেটর স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
আরও অভিযোগ আছে, বোর্ডের কর্মকর্তাদের চাহিদা সংক্রান্ত নথিপত্র আটকে রেখে কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি করেন তিনি। যা বোর্ড কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তা প্রমাণিত। যখন তখন বোর্ডে কর্মরতদের ডেকে অশালীন আচরণ গালিগালাজও করেন তিনি।
উল্লেখ যোগ্য অভিযোগগুলোর মধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ শাখাসহ গুরুত্বপূর্ণ শাখা সমূহের নথি স্বাক্ষর না করে দীর্ঘ দিন ফেলে রাখা। নথি স্বাক্ষরের কথা বলতে গেলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং মারমুখী আচারন করা। তার কক্ষে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গেলে রাজা বাদশার ন্যায় আচরণ করে বসতে না বলে দাঁড় করিয়ে রাখা। তাঁর সঙ্গে কোন মতবিরোধ হলে অপমান করে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়াসহ অগনিত অভিযোগ উঠেছে এই বোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে বোর্ডের সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাঁর দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। বোর্ডে আগত সেবাগ্রহিতাবৃন্দকেও ছাড় দেন না তিনি। হঠাৎ হঠাৎ কর্মকর্তাদের কক্ষে পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচারণ করেন তিনি। মূলত তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার কারণে কখন কি করবেন তা বুঝে উঠতে না পেরে মূলত উদ্ভট কাজ কর্ম করেন। গত প্রচন্ড শীতে অকারণে কর্মকর্তাদের কক্ষে আটকিয়ে রেখে তিনি নিজ কক্ষে মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও দেখেন। গত রমজান মাসে ইফতার পার্টির কমিটি গঠন ও দিনক্ষণ ঠিক করে পরে একক সিদ্ধান্তে তা বাতিল করেন। সেই ইফতার আয়োজনে আর্থিকভাবে ক্ষতি হয় বোর্ডের।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সিলেকশন-১ কমিটির ফাইল তিনি নিজে তার আলমারি রেখে খোঁজাখুঁজি নামে হয়রানি হুমকি ধামকিসহ দেখে নেওয়া কথা বলেছেন। জানা গেছে, ফাইল খোঁজার নামে সংস্থাপন শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন থেকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন তিনি। এবিষয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে হুমকি ধামকিসহ চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দেন তিনি। পরে অবশ্য সেই ফাইল সচিবের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কক্ষের আলমারি থেকে গত ২২ মে উদ্ধার হয়।
প্রসঙ্গত, বোর্ড চেয়ারম্যান কোন সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না। তথ্য চাইলে তথ্য দেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। এছাড়াও অভিযোগ আছে সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী সেবাগ্রহীতারা সেবা পাচ্ছেন না।
উল্লেখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ডে গেলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, তিনি (বোর্ড চেয়ারম্যান) নিজে বেলা ১২টায় অফিসে আসেন, অথচ কারণে অকারণে যাচাই বাছাই ছাড়াই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস টাইম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করছেন। শুধুমাত্র অপছন্দের ব্যক্তিকর্তাদের বিরুদ্ধেই তিনি নানা আইন দেখান ও বাস্তবায়ন করেন। তার সঙ্গে মতের মিল রাখা কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঠিকমত অফিসও করেন না। সে বিষয়ে তিনি কোন পদক্ষেপ নেন না।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানেকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, কোন প্রকার উন্নয়নের কাজ থেমে নেই। মসজিদে এসি লাগানো হয়েছে। অফিসে যারা ঠিক সময়ে আসে না তাদেরকে পরিদর্শনে সময় না পেয়ে সর্তক করেছি। আমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি না। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা মিথ্যা কথা বলেছে । একটি দপ্তরের প্রধান হিসাবে কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য বা গালাগালি করা আমার জন্য শোভনীয় নয়। কারো নথিতে ভুল থাকলে তা আমি ছেড়ে দিতে পারি না। জাফর ইকবালের বেতন ভাতার বিষয়ে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলেন এই বোর্ড চেয়ারম্যান।#