রাজশাহীর হলিদাগাছিতে পুকুর খননের মহোৎসব, প্রশাসন চুপ!
-
প্রকাশের সময় :
শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২
-
৪৯৭
বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
# নিজস্ব প্রতিবেদক …………………………
রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলাজুড়ে তিন ফসলি কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে ভ্যাকু মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে।স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন জেনেও না জানার ভান করে বসে আছে। সকলেই নিজ দায়িত্ব এড়িয়ে সরকারি দায়িত্বে চরম অবহেলার স্বাক্ষর রেখে চলছে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রাজশাহী চারঘাট উপজেলার সলুয়া ইউনিয়নের হলিদাগাছী জায়গীর পাড়া সংলগ্ন বিলে প্রায় ২০ বিঘা আয়তনের তিন ফসলী জমি নষ্ট করে পুকুর খনন শুরু করছেন হলিদাগাছী সরকারপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন সরকার ও একই এলাকার জাফর হক( কচি)। তারা বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত আছেন।
স্থানীয় কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের অনুমতি ছাড়াই ভুট্টা, আখ ও পাটক্ষেতের ফসল নষ্ট করে ভেকু নিয়ে গেছে প্রায় ১ থেকে ২ কিলোমিটার। কিছু বলতে গেলে কৃষকদেরকে নাহিদ ও শান্ত নামে দুই ব্যাক্তি হুমকি ধামকী দিচ্ছে এবং পুকুরের মাটি পরিবহন করে বিক্রি করার লক্ষে্য রাস্তা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ করেন কৃষকগণ। তারা আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিস এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এই কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে পুকুর খননের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অন্য কৃষকেরা। ভুক্তভোগীরা বলেন, এলাকায় ফসলি জমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের উপরও দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে একদিকে যেমন জমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন যেন অসহায় হয়ে পড়েছে। সিন্ডিকেট করেও অবৈধভাবে এই পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছে তারা। পুকুর খনন বিষয়ে জমির মালিক শাহবুদ্দিন সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি একজন প্রিন্সিপাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। জামাত-বিএনপি’র লোকেরা পুকুর খনন করতে পারলে আমি পারবো না কেন? তাই আমার জমিতে আমি পুকুর খনন করছি। কৃষকের জমির ফসল নষ্ট করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এটা জানিনা। এ বিষয়ে পুকুর লিজ নেওয়া আবু জাফর কচি বলেন, তিনি সলুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের লোকজনকে পুকুর খনন ও মাটি পরিবহনের দায়িত্ব দিয়েছেন। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন যেভাবে বাড়ছে, সামনে আরো বেশি পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট হবে। আর এই পুকুর খননের কারনে বন্ধ হবে বিলের পানি নিষ্কাশনের নালা। ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতায় ব্যহত হবে চাষাবাদ। আবার মাটি পরিবহনে ভাঙছে রাস্তা-ঘাট, কৃষিজমি হারাচ্ছে তার স্বরূপ এবং প্রকৃতি হারাচ্ছে তার বৈচিত্র্য। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এলাকার প্রভাবশালীরা এসব পুকুর খননের কাজ অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের যেন কিছুই করার নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। অবিলম্বে এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করার জন্য এলাকার সাধারণ কৃষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান। সেইসাথে অবৈধ পুকুর খননকারীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান কৃষকগণ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামিরা ইসলাম বলেন, অভিযোগ ও তথ্য যদি সঠিক হলে তদন্ত করে পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ