মমিনুল ইসলাম মুন- বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে………………………………………
রাজশাহীর তানোর উপজেলা হাসপাতালের প্রধান সহকারীর (বড়বাবু) নেপথ্যে মদদে হাসপাতাল নানা অনিয়ম ও আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, তানোর হাসপাতালের প্রধান সহকারী (বড় বাবু) সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে প্রায় একযুগ একই কর্মস্থলে থেকে হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ করছেন। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় অনিয়ম-দুর্নীতির সব অলিগলি তার চেনা। তার নেপথ্যে মদদে যাবতীয় অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে বলেও আলোচনা রয়েছে। বড় বাবুর কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রীতিমত জিম্মি। ফলে তার অপসারণ বা বদলী সময়ের দাবিতে পরিনত হয়ে উঠেছে। কিন্ত্ত রহস্যজনক কারণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে বড়বাবুর খুঁটির জোর কোথায় ? যে পাহাড়সম অভিযোগ মাথায় নিয়ে এখানো বহাল তবিয়তে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বড় বাবুর অনৈতিক আবদার পূরুণে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যর্থ হলেই তাদের ওপরে নেমে আসছে বড় বাবুর শাস্তির খড়গো, অবর্নীয় দুর্ভোগ-হয়রানি। এর আগেও বড় বাবুর অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে কথা বলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়েছে এই ভয়ে কেউ আর মূখফুটে প্রতিবাদ করতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের দুই জন কর্মকর্তা বলেন, বড় বাবুর কাছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জিম্মি, বিভিন্ন উৎসব বোনাস বা বেতন উত্তোলনের সময় প্রায় বড় বাবু বিভিন্ন অজুহাতে ৫শ’ টাকা থেকে হাজার টাকা কেটে রাখেন। আবার হাসপাতালে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারকে জিম্মি করে প্রতিমাসে টাকা আদায় করেন। আর বড়বাবুর আবদার পুরুণ করতে গিয়ে সিডিউল মোতাবেক রোগীদের নিয়মিত পথ্য দেয়া সম্ভব হয় না। তারা বলেন, বিষয়টি (টিএইচও) স্যারকে জানালেও কোনো প্রতিকার হয়নি। এদিকে চলতি অর্থবছরের জুন মাসে জেনারেটর, এ্যাম্বুলেন্স, ম্যাডামের গাড়ী ও কোন খাতে কত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কোনো সুনিদ্রিস্ট কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারি জানায়, চলতি বছরের জুন মাসে বড় বাবু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এ্যাম্বুলেন্স রক্ষণাবেক্ষন (মেরামত), জেনারেটর মেরামত, টিএইচও সাহেবের গাড়ী মেরামত, ওষুধী ও ফুল বাগান, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্টেশনারী, সাহায্য-সহায়তা খাতে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বড়বাবু শাহীনুর। এছাড়াও হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের পোষাকের জন্য মাথা পিছু ৭ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্ত্ত বড় বাবু তাদের টাকা না দিয়ে নিম্নমাণের কাপড়ের পোষাক দিয়ে টাকা দিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এভাবে কোনো কাজ না করেই টিএইচও’র যোগসাজশে ভূয়া বিল-ভাওচার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেই চলেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলেও এসব অনিয়ম-দূর্নীতির সত্যতা পাওয়া যাবে, তাই তারা সরেজমিন অনুসন্ধান পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান হিসাব রক্ষক (বড় বাবু) শাহীনুর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোনো অনিয়ম বা দূর্নীতি হয়ে থাকলে টিএইচও স্যার অবশ্যই জানেন। তিনি টিএইচও’র সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
এব্যাপারে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের (টিএইচও) ভারপ্রাপ্ত ডা, আব্দুল হাকিম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তিনি কোনো অভিযোগ পাননি, এছাড়া এখানে অনিয়ম-দূর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। এব্যাপারে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন বলেন, বড়বাবুর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#