1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
গোমস্তাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান, চোলাইমদসহ একজন গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলাম  ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি শুরু করেছেঃ রূপসায় আজিজুল বারী হেলাল রূপসায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্টর ১ম সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত  ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে প্রতিবাদ কর্মবিরতি সমাবেশ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ প্রায় ২০ জন আহত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পঞ্চগড়ে শিক্ষক সমিতির বিক্ষোভ সমাবেশ ভোলাহাটের তিলোকী গ্রামের ছোট্ট শিশু কারিমা মাইক্রো বাসের নিচে চাপা পড়ে নিহত নতুনতারা সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত ‎ ‎ তানোর কৃষি কর্মকর্তা স্টেশনে থাকেন না, বদলি আদেশ রোহিত হয়ে ফের আলোচনায়

রাজশাহীতে খাদ্য বিভাগের চরম গাফিলতি : বিভাগজুড়ে অর্ধশত কোটি টাকা লুটপাট

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৯২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

৥ মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর খাদ্য অধিদপ্তরে চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতির মহোৎসব। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) কার্যালয়ের ছত্রছায়ায় সরকারি গুদামে নিম্নমানের, খাওয়ার অনুপযোগী ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল ঢুকিয়ে তা বিতরণ করা হচ্ছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায়। দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ এই চাল এখন দুর্নীতির হাতিয়ার। বিভাগজুড়ে লুটপাট করা হয়েছে অর্ধশত কোটি টাকার বেশি অর্থ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজশে একাধিক অটো রাইস মিল নিম্নমানের সিদ্ধ চাল সরবরাহ করছে। কিন্তু প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করছে না। বরং সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিয়ে গোপনে পচা চাল সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণও মিলেছে। ইতোমধ্যে নিম্নমানের চাল কেনার অপরাধে রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। তবে মূল হোতারা—আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) মাইন উদ্দিন ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) ওমর ফারুক—এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

অভিযোগ উঠেছে, আরসি ফুড মাইন উদ্দিন নিয়োগ বাণিজ্য, পদোন্নতি, পদায়ন ও সরকারি চাল ক্রয়ে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মে জড়িত। সম্প্রতি দাপ্তরিক নীতিমালা উপেক্ষা করে নিজস্ব সিন্ডিকেট সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নও দিয়েছেন তিনি। আওয়ামী সরকারের পতনের পরও রাজশাহী খাদ্য অধিদপ্তরে দুর্নীতির সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয় রয়েছে। রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলা খাদ্য গুদামে মিলছে খুদ মিশ্রিত, অর্ধসিদ্ধ ও পচা চালের বস্তা। অনেক বস্তায় রয়েছে বিবর্ণ দানা, ভিন্ন জাতের মিশ্রণ ও দুর্গন্ধ। সরকার নির্ধারিত মান অনুযায়ী আর্দ্রতা ১৪% থাকার কথা থাকলেও পরিমাপে পাওয়া গেছে ১৩.৮%—তাও নিম্নমানের দানায় ঠাসা। নিয়ম ভেঙে চাল সরবরাহ করা মিল থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তারা এসব চাল সংগ্রহ করেছেন।

গোদাগাড়ী, পবা, মোহনপুর, বাগমারা, দূর্গাপুর, তানোর, বাঘা ও চারঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার গুদামে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ভুয়া মিলের নামে চাল সরবরাহের প্রমাণও মিলেছে। অনেক মিলারই দাবি করেছেন, তাঁদের নাম ব্যবহার করে চাল সরবরাহ দেখানো হয়েছে। মাহফুজুর রহমান রাইস মিল, নূরজাহান চালকল ও মোল্লা চালকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনো চাল দেয়নি। সাংবাদিকদের তদন্তে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে কিছু গুদামে নিম্নমানের চালের প্রমাণ পেয়েছেন। কিন্তু দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গোদাগাড়ী ও বাগমারায় পচা চাল রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নীরব রয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলায়ও ৮০ মেট্রিক টন খাওয়ার অনুপযোগী চাল সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে।

খাদ্য বিভাগের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ধান না কিনেই নিম্নমানের চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এমনকি ধান পরিবহন ব্যয়সহ অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী অন্য মিলের লাইসেন্স ব্যবহার করে চাল সরবরাহ করেছেন। মোহনপুরের আতাউর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী গণমাধ্যমে স্বীকার করেছেন, তাঁর নিজের লাইসেন্স না থাকলেও অন্য মিলের নামে ৪২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছেন।

অন্যদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক সাংবাদিকদের সরাসরি জানান, “আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।” তবে অন্য একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে, প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।” নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনের ভেতরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলা ও আঞ্চলিক খাদ্য অফিসের যোগসাজশে মিলার ও গুদাম কর্মকর্তারা এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বলেন, “খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল দরিদ্র মানুষের অধিকার। নিম্নমানের চাল সরবরাহ বা অনিয়ম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তদন্ত করে দায়ীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।” কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—ব্যবস্থা নেবে কে?কারণ, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাই এখন ক্ষমতার চেয়ারে বসে আছেন। ফলে রাজশাহী খাদ্য অধিদপ্তরে এখনো চলছে ‘চাল নয়, দুর্নীতির বস্তা।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট