# নাজিম হাসান……………………….
রাজশাহী মহানগরীতে হঠাৎ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সর্বনি¤œ ভাড়া ১০ টাকা করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। রোববার রাস্তায় দু একটি অটোরিকশা দেখা গেলেও গতকাল সোমবার তারও দেখা নেই। কেউ অটোরিকশা বের করলে আন্দোলনকারী চালক-মালিকেরা এসময় অটোরিকশা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশা আটকে রাখছেন। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে ব্যাটারিচালিত দুই আসনের রিকশা ও রিকশাভ্যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে জনদুর্ভোগ কমাতে সোমবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে সড়কে নেমেছে বাস। রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে সাহেববাজার এবং কাটাখালী থেকে কোর্ট পর্যন্ত দুটি রুটে এসব বাস চলাচল করছে। অটোরিকশার ভাড়ায় গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রীরা। এতে প্রথম দিনের চেয়ে পথের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমেছে। এর আগে মালিক ও চালকরা রোববার সকাল থেকে আকস্মিকভাবে বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে সড়ক অবরোধ করে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। কেউ এই ধর্মঘট কর্মসূচি না মেনে সড়কে অটোরিকশা বের করলেই আন্দোনকারীরা তাকে ঘিরে ধরছেন। জোর করে অটোরিকশা থামিয়ে চালককে মারপিট ও অটোরিকশা ভাঙচুর করছেন।
এছাড়া যাত্রীদের হেনস্থা করে রিকশা থেকে নামিয়ে দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করছেন। সোমবার সকাল থেকে অফিসগামী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান। আর ছোট অটোরিকশাগুলো চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকাচ্ছেন তারা। এছাড়া দূরত্ব ভেদে ২০ টাকার ভাড়া ৪০-৫০,৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। সুযোগ বুঝে এই রিকশা চালকরা অন্যায়ভাবে কিছু বাড়তি টাকা আয় করে নিচ্ছেন। ফলে দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ যাত্রী।
জানা গেছে, ৯৬ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাজশাহী নগরীতে প্রায় ১৬ লাখ লোকের বাস। গণপরিবহন বলতে ভরসা কেবল ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১০ হাজার অটোরিকশা এবং ৫ হাজার রিকশা চলাচল করে নগরীতে। কিন্তু চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার সংখ্যা এর চেয়েও কয়েকগুণ বেশি। রিকশা-অটোরিকশার নিবন্ধনের পাশাপাশি চালকদেরও নিবন্ধন দেয় সিটি কর্পোরেশন। তবে এসব যানবাহনে নিয়ন্ত্রণ নেই রাসিকের। ভাড়া নির্ধারণ করা থাকলেও ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলে সর্বত্র। এর মধ্যেই ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে নগরবাসীকে জিম্মি করে বসেন অটোরিকশা মালিক ও চালকরা।
রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে আপাতত নগরীর দুটি রুটে ৩০টি যাত্রীবাহী বাস নামানো হয়েছে। এগুলো অটোরিকশার ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করবে। রাজশাহী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি সাগর হোসেন বলেন, সমিতিকে না জানিয়েই চালকদের একটি পক্ষ ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে হঠাৎ অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা এই ধর্মঘটের বিষয়ে জানেন না। এসবের পেছনে সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলর ইন্ধন জোগাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।#