বিশেষ প্রতিনিধি…………………………………………………….
রাজশাহীর বাঘায় ঈদের কেনাকাটায় তরুণী সবার পছন্দ ইন্ডিয়ান-পাকিস্তানী থ্রি পিচ-ফোর পিচ, আর টাঙ্গাইল এর পছন্দের শাড়ি কিনছেন সব শ্রেণীর নারিরা। তরুণদের পছন্দ ডিজিটাল প্রিন্ট পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, জিন্স এর প্যান্ট,কাতোয়া শার্ট। নিজেরটা বাদ দিয়ে আগে বাচ্চাদের পোষাক কিনছেন নিম্ন বিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। সব মিলে বাড়তে শুরু করেছে ঈদের বেচা কেনা।
ক্রেতারা বলছেন গত বছরের তুলনায় সব ধরনের পোষাকের দাম এবার বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, এবার দেরিতে বেচা কেনা শুরু হওয়ায় সাশ্রয়ী দামে বিক্রির চেষ্টা করছেন। ১৫ রমজানের পর থেকে বেচা কেনা বেড়েছে বলে জানান তারা। রাত ১০ টার আগেই ক্রেতা শূন্যে হয়ে পড়ছে প্রায় দোকান। বাজারে পুরুষের তুলনায় নারি ক্রেতার সংখ্যাই বেশী।
বৃহসপতিবার (০৪-০৪-২০২৪) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পোশাক বাজার ও ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। উপজেলা সদরে খন্দকার শপিং কমপ্লেক্সর, ড্রেস কর্ণার ক্লথ ষ্টোর এন্ড গার্মেন্টস এর দোকানে ৪ বছরের শিশুকে নিয়ে পোষাক কিনছিলেন নিম্ন বিত্ত পরিবারের তুষার আহমেদ ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম। তারা জানান,বাজেটের সাথে সমন্বয় রেখে আগে তাদের বাচ্চার জন্য কিনবেন, পরে সামর্থ মতো নিজেদের কিনবেন। তবে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করে কোনটা থুয়ে কোনটা কিনবেন, এ চিন্তাও পেয়ে বসেছে তাদের।
তাদের ভাষ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া আগের তুলনায় এবার পোষাকের দামও বেশি। ঈদের বিক্রির বিষয়ে জনাতে চাইলে দোকান মালিক মালিকুল সরকার জানান, তার দোকানে ইন্ডিয়ান-পাকিস্তানী বারিস,জরজেট,সিল্ক থ্রি পিচ.ফোর পিচ পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। দাম ৫০০শ থেকে ৩০০০(তিন) হাজার টাকা। মা ফ্যাশন গ্যালারিতে ডিজিটাল প্রিন্ট পাঞ্জাবি,টি-শার্ট, জিন্স এর প্যান্ট দেখছিলেন কয়েকজন তরুণ। এর মধ্যে কলেজ পড়–য়া শান্ত মিঞা নামের একজন জানালেন, ৫(পাঁচ) হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে তাকে পোষাক কিনতে হবে। সেক্ষেত্রে প্যান্ট এর সাথে মিল রেখে প্রিন্ট পাঞ্জাবি নয়তবা টি-শার্ট কিনবেন।
মালিক আলমগীর হোসেন জানান,ক্রেতার সুধিার্থে ডিসকাউন্টে বিক্রি করছেন। দামি পোষাক দেখছেন বেশী,কিনছেন কম। উপজেলা সদরে বড় ব্যবসায়ী নুর প্লাজার রুপায়ন বস্ত্রালয় এন্ড গার্মেন্টস’র স্বত্তাধিকারি কামরুল হাসান জানান,এবার ঈদের কেনা কাটায় বেশি চাহিদা রয়েছে টাঙ্গাইলের শাড়ির মধ্যে-১৫০০শ থেকে ৫০০০(পাঁচ) হাজার টাকা দামের গ্যাস সূতা,তসোশীল,বালুচুরি, ১৫০০-৯০০০(নয়) টাকা দামের টাঙ্গাইলের জামাদানি,৩০০০ (তিন) থেকে ৮০০০ হাজার টাকা দামের ঢাকাই জামদানি, ১৫০০-২৫০০ টাকা দামের ইন্ডিয়ান কাঞ্চিবরন, ২০০০ (দুই)-১৫০০০(পনের) হাজার টাকা দামের পার্টি শাড়ি। পাকিস্তানী থি-্রপিচ- মালিহার,আলিয়া কোর্ট, ইন্ডিয়ান নাইরা,আফরান। এসব পোষাকের দাম ৬০০ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। তিনি জানান, দিনের তুলনায় রাতের বেচা কেনা কম। রাত ১০ টার আগেই ক্রেতা শূন্যে হয়ে পড়ছে। আইডিয়াল বস্ত্র বিতানে পরিবার নিয়ে দেশীয় প্রিন্ট শাড়ি কিনছিলেন খায়ের হাট গ্রামের জিয়া মন্ডল। তিনি জানান,ঈদে সবার চাওয়া থাকে নতুন পোষাক। তাই পছন্দমতে কিনতে না পারলেও বাজেটের মধ্যে যেটা হয়,সেটাই কিনবেন। দোকানের মালিক শর্ফিকুল ইসলাম জানান, সব শ্রেনীর ক্রেতারা মিঠাই, চায়না, ডিজে, জেকে, পাখীজা পিন্ট্র শাড়ি কিনছেন । কোয়ালিটি ভেদে এসব শাড়ির দাম ৮৫০ টাকা থেকে ১২০০শ টাকার মধ্যে।
প্রজাপতি ফ্যশান এর স্বত্তাধিকারি সুবদেব সরকার, সাত্তার প্লাজার ডায়মন্ড কালেকশনের স্বত্তাধিকারি সুজিত কুমার সরকার সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, রমজান শুরুর আগেই, শিশু থেকে সব বয়সের নারি-পুরুষ ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে দেশী কাপড়ের পাশাপাশি ঢাকাই জামদানিসহ ইন্ডিয়ান,পাকিস্থানী থ্রিপিচ-ফোর পিচ ও শাড়ি কাপড়সহ বিভিন্ন ডিজাইনের শতাধিক ব্যান্ডের নানান দামের বাহারি নামের পোষাক তুলেছেন। বিগত বছরগুলোয় রমজানের শুরু থেকে ঈদের কেনাকাটা চলেছে। এবার ১৫ রমজানের পর থেকে বেচা কেনা বেড়েছে। সব ধরনের পোষাক বিক্রি হচ্ছে। ছোটদের ৩০০শ থেকে ২০০০ টাকা দামের সুতি ফ্লগ, বড়দের ১৫০০ থেকে ৬৫০০দামের গেঞ্জি, ২০০০ থেকে-৩৫০০ টাকা দামের শার্ট রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিযোগিতার যুগে কোন খদ্দের ফেরত না যায়,সেজন্য সব ধরনের পোষাক সহ কর্মচারির সংখ্যাও বাড়িয়েছেন। খরচের হিসেবে বেচা কেনা ভালো না হলে টিকে থাকা মুশকিল হবে। কসমেটিক্স ব্যবসায়ী রায়হান ও ফ্যাশন সুজ এর আবুল হোসেন জানান, পোষাকের সাথে মানানসই জুতা-সেন্ডেল ও কসমেটিক্স কেনার বিষয়টি মাথায় রেখে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। এবার তাদের বেচা কেনা বাড়েনি। পোষাক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহিন আলম বলেন, ছোট বড় পুরুষ-মহিলাদের সুতি, তাঁতসহ নানা ধরনের বাহারি ডিজাইনের পোষাক আমদানি করা হয়েছে। আগের তুলনায় মার্কেট ও দোকান বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি দামে পোষাক কিনতে হয়েছে। #