ছবি ফাইল থেকে নেয়া।
বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মারপিট করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে । বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) উপজেলার বাউসা ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বিএম কলেজে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সভা আহবান করেন প্রতিষ্টানটির সুপারিনটেনডেন্ট রেজাউল করিম। অফিস কক্ষে সভায় উপস্থিত ছিলেন অধিকাংশ শিক্ষকগণ। এ সময় সভা কক্ষে থাকা বহিরাগত এক ছেলেকে দেখিয়ে সুপারিনটেনডেন্ট রেজাউল করিম, এগ্রোবেসড ফুট বিষয়ের টেড ইন্সট্রাক্টর( শিক্ষক) বিপুল কুমারকে উদ্দেশ্যে বলেন, এই ছেলেকে চিনিস কিনা। তাকে চিনিনা বলা মাত্রই শিক্ষক বিপুল কুমারকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে রেজাউল করিম বলেন,তুই আমার বেতন বন্ধ করা জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সরবরাহ করেছিস। সেখানে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অন্য শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ কোন কথা বললে কাউকে ছাড় দেবনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন. পরে পদত্যাগ পত্র লিখে বিপুল কুমারকে স্বাক্ষর করতে বলেন। পাশের রুমে থাকা তার ক্যাডার বাহিনীর ভয় দেখিয়ে তাকে বলা হয়,স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর না করলে তুই জানে বাঁচতে পারবিনা। স্বাক্ষর করতে না চাইলে সুপার নিজে শিক্ষককে মারপিট করেন। পরে ১২.৪০ মিনিটের সময় জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। বেলা ২ টার দিকে পুনরায় সেই পদত্যাগপত্রে টিপসহি নেন এবং মারপিট করেন।
এ সময় বিপুল কুমার জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষনিক স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে ডেকে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৩.২০ মিনিটে ছুটির পরে কয়েকজন শিক্ষক তার নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেন । পরে নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিপুল কুমার নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে। ২০০৫ সালে বাউসা ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটে এগ্রোবেসড ফুট বিষয়ে ট্রেড ইন্সট্রাক্টর( শিক্ষক)পদে যোগদান করে বর্তমানে কর্মরত আছেন।
বাউসা বাজারের পল্লী চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, মুঠোফোন আমাকে ডাকার পর সেখানে গিয়ে ওই শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এ বিষয়ে বিপুল কুমার বলেন, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠান প্রধানের জাল সনদের অভিযোগে বেতন বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহের বিষয়ে আমাকে দায়ী করে মারপিটসহ জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলেও আমাকে কোন সুযোগ দেননি। পায়ে ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। তার পরেও সেন্ডেল দিয়ে মারপিট করে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর ও টিপসহি নিয়েছেন। তার ভয়ে অন্য শিক্ষকরা মুখ খুলতে পারেনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সুপারিনটেনডেন্ট রেজাউল করিম বলেন, কয়েকজন শিক্ষকের উপস্থিতিতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন শিক্ষক বিপুল কুমার। কেউ যদি জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা বলে থাকে,সে মিথ্যা বলেছে।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি শাম্মী আক্তার বলেন, বিষয়টি মুঠোফোনে জেনেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#