মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) এরিয়া অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে অফিসটি দালালচক্রের দৌরাত্ম্যে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় গ্রাহকরা।
সূত্র জানায়, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও বহিরাগত রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মদদে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট। এদের নেতৃত্বে রয়েছেন কামারগাঁ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম লিটন ও তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম। এ দুই ভাইয়ের বিদ্যুৎ বিভাগে কোনো চাকরিজনিত সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তারা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দাপ্তরিক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গ্রাহকরা অফিসে এলেই কৌশলে তাদের ওই দালালদের কাছে পাঠানো হয়। কাজের ত্রুটি থাক বা না থাক, নির্ধারিত দালালের মাধ্যমে না হলে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে টাকা আত্মসাৎ ও মিটার স্থানান্তরে দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, দালাল লিটনের মোটরসাইকেলেই চলাফেরা করেন অফিসের ডিজিএম, যার কারণে কেউ সাহস করে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারে না। এমনকি অনেক সময় ওই দালাল নিজেকে ডিজিএমের “একান্ত সহকারী” পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একটি চক্র কথিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লাইনম্যানদের (দালাল) মাধ্যমে মিটার চেকের নামে ভুয়া গ্রাহক ত্রুটি দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণ করে বলে জানা গেছে। আবার রাতের আঁধারে অনেকের মিটারের সিল ভেঙে ভয় দেখিয়ে আদায় করা হয় টাকা।
কলমা ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের রাইস মিল মালিক মোজাম্মেল হোসেন জানান, তার থ্রি-ফেইজ মিটারে টিকটিকি ঢুকে শর্টসার্কিট হয়ে গেলে, নিয়ম অনুযায়ী বিনামূল্যে নতুন মিটার পাওয়ার কথা থাকলেও ডিজিএম তার কাছ থেকে ১৬,১৯৭ টাকা আদায় করেন। বনগাঁ গ্রামের মনির হোসেন অভিযোগ করেন, পোল স্থানান্তরের জন্য ফি জমা দিলেও এখন পর্যন্ত কাজটি করা হয়নি, এমনকি অফিসে তার জমার ডকুমেন্টও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অসংখ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীরা রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) কাছে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিকার মেলেনি।
এ বিষয়ে তানোর এরিয়া অফিসের ডিজিএম রেজাউল করিম খান বলেন, “আমার অফিসে কোনো দালালের অস্তিত্ব নেই। তবে কেউ দালাল হিসেবে প্রমাণসহ অভিযোগ করলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রমেন্দ্র চন্দ্র রায় জানান, “আমি এখনো এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।#