মমিনুল ইসলাম মুন………………………………………………
রাজশাহীর তানোরে গ্রামবাসির বাধা উপেক্ষা, নীতিমালা লঙ্ঘন ও প্রশাসনের ইশারায় অবৈধ পুকুর খনন এবং সরকারি পাকা রাস্তা নস্টের পাশাপাশি ফসলি জমি ভরাট করে মাটি বাণিজ্য করা হচ্ছে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন কানে তুলা দিয়ে চুপচাপ রয়েছে। যেন মনে হয় এটা দায়িত্বের বাইরে কোন কাজ, কিন্তু কারণ কি!
পুকুর খনন করা মাটি দিয়ে তিনফসলী জমি ভরাট করা হচ্ছে। তবে রহস্যজনক কারণে উপজেলা প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করে চলেছে। এঘটনায় গ্রামবাসির মাঝে চরম উত্তেজনা ও বিস্ফোরণমূখ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কিন্ত্ত উপজেলা প্রশাসনকে বার বার অবগত করা হলেও তারা ঘটনা এড়িয়ে চলেছে।
স্থানীয়রা বলছে, প্রশাসনের মদদ ব্যতিত প্রকাশ্যে দিবালোকে সরকারি পাকা রাস্তা নস্ট করে মাটি বাণিজ্য ও ফসলি জমি ভরাট হয় কিভাবে ?স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বা কি করছে। তবে পুলিশ সব সময় ব লে থাকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।আর ভিযোগ না পেলে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে। তাহলে সমাজ তথা দেশ থেকে অনিয়ম দুনীর্তি, অনাচার অত্যাচার চুরি ডাকাতি, রাহাজানিসহ সকল অপরাধ কিভাবে রোধ করা সম্ভব।
জনৈক রাজ্জাক, সাইদুল ও কালাম বলেন, গত শুক্রবার চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে উঁচু জমির মাটি কাটার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে দুই জনের কারাদন্ড দিয়েছেন ইউএনও সাহেব। অথচ আজিজপুর পুর্বপাড়া প্রকাশ্যে দিবালোকে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তারা বলেন, বার বার জানানোর পরেও ইউএনও সাহেব কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, কিন্ত্ত কেন-?
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) আজিজপুর পুর্বপাড়া গ্রামে বিএনপি মতাদর্শী নজরুল ইসলাম প্রায় ১৫ দিন ধরে পুকুর খনন করছে। এদিকে পুকুরের মাটি বিভিন্ন এলাকায় পরিবহণ করতে গিয়ে সরকারি কাঁচা-পাকা রাস্তা নষ্ট ও পরিবেশ দুষণ করা হচ্ছে। হালকা বৃষ্টি বা ভারী কুঁয়াশা হলে এসব রাস্তায় যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়বে।
সিদ্দিক নামের এক ভেঁকু দালাল বলেন, ইউএনও স্যার ও থানার অনুমতি নিতে অনেক খরচ হয়েছে, তাই মাটি বিক্রি করতে না পারলে পোষাবো কি করে। আর মাটি বিক্রি করবেন বলেই তো খরচপাতি করে অনুমতি নেয়া, নইলে অনুমতির কি প্রয়োজন। অথচ ৬ মাসও হয়নি এই রাস্তাগুলো নির্মাণ করা। ওভারলোড অবৈধ মাটির ট্রাক চলাচল করায় এবং ট্রাক থেকে মাটি পড়ে এরই মধ্যে রাস্তার বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত এসব ট্রাকের না কোন রোড পারমিট না আছে কোন বৈধ কাগজপত্র। কিন্ত্ত তারা রাস্তায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, ভেঁকু দালালদের চরম দৌরাত্ম্যে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কিন্ত্ত তারা বার বার চেষ্টা করেও অবৈধ মাটি বাণিজ্য বন্ধ করতে পারছেন না। ক’দিন পরেই এসএসসি পরীক্ষা, কিন্ত্ত ভেঁকু ও ট্রাক্টরের বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে জীবন অতিষ্ঠ, প্রশাসনকে বলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই তারা গণমাধ্যম কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সরকার যখন জোরগলায় বলছে দেশের এক ইঞ্চিও মাটি যেন অনাবাদী না থাকে এবং ফসলী জমি যাতে কোন ক্রমেই নস্ট না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। ঠিক তখনই উপজেলা প্রশাসনকে খুশি করিয়ে পুকুর খননকারী এবং মাটি ব্যবসায়ীরা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা চড়া গলায় বলছে উপজেলা নিবার্হী অফিস এবং পুলিশকে ম্যানেজ করেই করা হচ্ছে। তাদের সাহস গোটা সমাজকে অবাক করে দিয়েছে।তাহলে কি প্রধনমন্ত্রীর নিদের্শ বাস্তবায়িত হবে না।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, মাসিক মিটিংয়ে আমরা এই বিষয়টি তুলে ধরেছি। কোন ভাবেই যেন মাটি পরিবহনের ট্রাকের কারণে বা মাটি পড়ে রাস্তার ক্ষতি না হয় আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। কিন্ত্ত উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক ভুমিকা পালন করে চলেছে। এলাকাবাসি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। #