# শহিদুল্লাহ আল আজাদ. খুলনা থেকে………………………………….
খুলনা – বরিশাল মহাসড়কে বাস উল্টে নিহত ১৭ জন, শনিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি পুকুরে বাসটি নিমজ্জিত হয়। উক্ত বাসটি পাশ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে রওনা হয়।
পথিমধ্যে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি সদরের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি পুকুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ পড়ে যায়। আহত এক বাসের যাত্রী ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভাণ্ডারিয়া গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা (৩৫) বলেন, ‘আমি বাসের চালকের পিছনের সিটে বসা ছিলাম। বাসের চালক যাত্রার শুরু থেকেই অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোর জন্য বারবার সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলছিলেন। গাড়ি চালনায় তার মনোযোগ ছিল না। সদরের ছত্রাকান্দা অতিক্রম করার পরেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে পড়ে যায়। চালকের ভুলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে নিয়ে বরিশালে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলাম। এই ঘটনায় আমার বাবা সালাম মোল্লা (৭৫) নিহত হয়েছেন। আমার বড় ভাই মো. শাহিন (৪০) এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৭ জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জন নারী, ৬ জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু। এ ঘটনায় আরও অন্তত ২৫ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ২০ জন আহত রোগীকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোগীরা অতিরিক্ত পানি খেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। তাদেরকে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহতদের পরিচয় এখনো মেলেনি। তবে এ হাসপাতাল ছাড়াও অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। ঝালকাঠি সদর থানার এস আই গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশের রেকার দিয়ে বাসটি উত্তোলন করা হয়েছে। বাসের মধ্যে আর কোন লাশ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা অংশ নেয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পরে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম ও পুলিশ সুপার আফরুজুল হকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলসহ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। উক্ত ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এখানে ১২ জন চিকিৎসক আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছি। আহতদের কাটা ও ব্যথার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহতদের শনাক্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ঝালকাঠি সদর থানার সেকেন্ড অফিসার গৌতম ঘোষ জানান, সদর হাসপাতালে আনা নিহত ও আহতদের নাম ঠিকানা এবং তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।#