খুলনা জেলার রূপসা উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম-মুয়াজ্জিনের অপসারনের দাবীতে মানব বন্ধন গতকাল ২ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।
রূপসা উপজেলা ইমাম পরিষদ ও সাধারণ মুসাল্লিবৃন্দ কর্তৃক আয়োজিত মানব বন্ধনে বক্তারা বলেন মডেল মসজিদের ইমাম মোঃ ফুয়াদ ফকির ও মুয়াজ্জিন ফাহাদ উদ্দিন আপন দুই ভাই হওয়ায় সকল কার্যক্রম ইচ্ছা খুশিমতো চালিয়ে যাচ্ছেন। মোয়াজ্জিন ফাহাদ উদ্দিন নিয়োগ প্রাপ্তিরপর নির্দিষ্ট তারিখে যোগদানের কথা থাকলেও আপন ভাই ইমাম হওয়ায় ৩/৪ মাস কর্মস্থলে যোগদান না করে অনুপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া তাদের খামখেয়ালিপনার কারণে অধিকাংশ সময় মসজিদে আজান ও নামাজ সঠিক সময় না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি কোন কোন সময় সাপ্তাহিক জুম্মার নামাজ শুরু করতেও দু’টা বেজে যায়। যার কারণে মুসল্লিদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়।
অভিযোগ রয়েছে জুম্মার নামাজে ইমাম সাহেব যে আলোচনা করেন তা মুসল্লিদের বোধগম্য হয় না। অনেক সময় ওয়াক্তিয়া ফরজ নামাজে ভুল ও অশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত করে থাকেন কিন্তু মুসল্লিরা লুকমা দিলে ইমাম-মোয়াজ্জিন দুই ভাই মিলে মুসল্লিদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাছাড়া সরকারিভাবে কোন সিদ্ধান্ত আসলে গুরুত্ব সহকারে মুসল্লিদের সামনে সে বিষয়ে উপস্থাপন করা হয় না।
অভিযোগে আরো জানা যায়, মাহে রমজান উপলক্ষে মুসল্লিদের মতামতের ভিত্তিতে খতমে তারাবির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ইমাম সাহেব তারাবি নিজেই পড়াবেন বলে ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তারাবি শুরু হলে অশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত এবং দুই রাকাত পর পর মোবাইল ফোন দেখে নামাজ পড়ানো শুরু করেন। এছাড়া খতম তারাবিতে ধারাবাহিকতা ঠিক না রেখে ইচ্ছামতো এলোমেলো কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকেন। যা মুসল্লিরা লোকমা দিলে নামাজ শেষে তাদের পরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
বিগত ৯ রমজান ইমাম সাহেব তারাবি শুরুর আগে হঠাৎ করে ঘোষণা দেন আমার দ্বারা খতম তারাবি পড়ানো সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে মুসল্লিরা প্রতিবাদ করলে ইমাম ও মুয়াজ্জিন দুই ভাই মিলে মুসল্লিদের বলেন কোন্ আইনে বলা আছে যে খতম তারাবিই পড়তে হবে? এসব কথা শুনে মুসল্লিরা মনঃক্ষুণ্ণ হন। পরবর্তীতে অন্য হাফেজ রেখে খতম তারাবি চলো মান রাখা হয়।
অপরদিকে মুয়াজ্জিন ফাহাদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব কারনে সাধারণ (পুরুষ-মহিলা) মুসল্লিদের কষ্টের ভিতর নামাজ আদায় করতে হচ্ছে।
মানব বন্ধনে উপস্থিত ছিলেন রূপসা উপজেলা ইমাম পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলনা হাবিবুল্লাহ মেজবাহ, বায়তুল হামদ্ জামে মসজিদের খতিব মাওঃ আমিরুল ইসলাম, ইসলামি চিন্তাবিদ, ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা ইব্রাহীম খলিল ফারুকী, মাওলানা জামশেদ হুসাইন, মাওলানা নাজমুল হুদা, হাফেজ হারুনার রশিদ, শমশের গাজী, হাফেজ নিজামুদ্দিন, মাওলানা আবুল হাসান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আমিনুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, মুস্তাহীদুল হক, হাবিবুল্লাহ শেখ, ইকরামুল হক, এসএম আবুল হাসানাত, ইমাম হোসেন প্রমুখ।
তাছাড়া মানববন্ধন শেষে সাধারণ মুসাল্লি এবং ইমাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ ইমাম, মুয়াজ্জিনকে অপসারণের দাবীতে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি কোহিনুর জাহান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আগেও অভিযোগ হয়েছে স্থানীয় ভাবে বারবার সমাধান করার চেষ্টা করেছি তবে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইসলামীক ফাউন্ডেশনের আওতাধীন হওয়ায় আমি সরাসরি কোন পদক্ষেপ নিতে পারছিনা। আমি ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব ইনশাআল্লাহ্ সমাধান হবে বলে আশাকরছি।#