শাহীন আলম লিটন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি…
৫০০ শয্যার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালুর দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়ক বন্ধ করে মেডিকেল কলেজের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে তারা হাসপাতালের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলামকে তার অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
আন্দোলনকারীরা শিক্ষার্থীরা বলেন, হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালু না হওয়ায় মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, রোগীসহ সাধারণ মানুষের ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালুর দাবি জানিয়ে আসছি। তবে আশ্বাস ছাড়া বাস্তবায়নের মুখ দেখিনি। দ্রুত হাসপাতাল চালু করা না হলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবি না মানার কারণে আমরা হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেছি এবং সড়ক অবরোধ করেছি।
তারা আরও বলেন, আমরা আশ্বাস পেয়েছি। ২০ দিনের মধ্যে শিশু ও মেডিসিন বিভাগ চালু করা হবে। এতে আমরা দুপুর দেড়টার দিকে সড়ক থেকে সরে আসি। আমাদের দাবি না মানা হলে পরবর্তীতে আবারও আমরা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন করব।
আন্দোলনকারীরা শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে। বারবার সময় ও অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৩ বছরেও পূর্ণরূপে চালু করা যায়নি হাসপাতালটি। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করার জন্য হাসপাতাল খুবই জরুরি। জেনারেল হাসপাতালে অপ্রতুল যন্ত্রাংশ, ব্যাপক রোগীর ভিড়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ প্রভৃতি সমস্যা হয়। সরকারের কাছে দ্রুত এই মেডিকেল কলেজ পূর্ণরূপে চালুর দাবি জানান তারা।
হাসপাতালের পরিচালক আনোয়ারুল কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবসম্মত না হলেও মেনে নিতে হয়েছে। আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করব। ২০ দিনের মধ্যে শিশু ও মেডিসিন বিভাগ দুটি অন্তত চালু করা হবে।
জানা গেছে, গত বছরের ১৫ নভেম্বর নবনির্মিত আংশিক হাসপাতাল ভবনের একটি ব্লকে বহির্বিভাগ চালু হয়। সেখানে শুধু বহির্বিভাগে কিছু রোগী দেখা হয়। হাসপাতালে রোগী ভর্তি, এমনকি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয় না। যেতে হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষার্থীদেরকেও মেডিকেল কলেজ থেকে জেনারেল হাসপাতালে যেতে হয়। এতে চরম ভোগান্তি হয় তাদের।
২০১১ সালে কুষ্টিয়া শহরে ম্যাটসে (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) অস্থায়ীভাবে মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয় ২০২২ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। সেখানে ছয় তলা একাডেমিক ভবন, চার তলা করে দুটি হোস্টেল, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিন ও দুই তলাবিশিষ্ট ডরমিটরি, মসজিদসহ আরও কিছু ভবন হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লিনিক্যাল ক্লাস করেন। শিক্ষার্থীরা ভাড়া বাসে যাতায়াত করেন। কারণ মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল অংশ চালু হয়নি। নিরুপায় হয়ে আন্দোলন করছেন বলে জানিয়েছেন তারা।#