বিশেষ প্রতিনিধি, অভয়নগর: অভয়নগরে হিজবুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ভুয়া সনদে ১৬ মাস ধরে চাকরির অভিযোগ উঠেছে মোঃ সাদ্দাম হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানাগেছে,পরিছন্নতা কর্মী পদে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগতযোগ্যতা না থাকলেও উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে হিজবুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। চাকরির আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় শিক্ষাগতযোগ্যতা ছিল না যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের হিজবুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার পরিচ্ছন্নতার্কর্মী মোঃ সাদ্দাম হোসেনের । তার পরও তিনি ১ বছর ৪ মাস ধরে ওই পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপারের দাবি, তিনিসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মাদ্রাসা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার সভাপতি ছিলেন। কেউ তখন আপত্তি করেননি। ভুয়া সনদের বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে হিজবুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে যোগদান করেন মোঃ সাদ্দাম হোসেন। তার বাড়ি মাদ্রাসার পাশে গ্রামের গোয়াখোলা ৫ নং ওয়ার্ডে। চাকরিতে যোগদানের সময় তিনি ২৯/১/২৩ শে ৮ম শ্রেণির সনদ জমা দেন। এর পর তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে চাকরিতে যোগও দেন। এবং বেতন ৮ হাজার ২ শ ৫০ টাকা তুলেন। ১ বছর ৪ মাস পর সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, পরিছন্নতা কর্মী পদে জাল সনদ তিনি জমা দিয়েছেন।
জালিয়াতির বিষয়ে সাদ্দামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ দেখেই কর্তৃপক্ষ তাকে ওই পদে নিয়োগ দিয়েছে। হিজবুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো.হাবিবুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারীতে এ মাদ্রাসার একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আবেদন যাচাই-বাছাই করে সেই নিয়োগে একজন পরিছন্নতা কর্মী ও একজন আয়া পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেই নিয়োগ কমিটিতে তিনিসহ ছিলেন মাদ্রাসা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা এবং মাদ্রাসার সভাপতি।কিছুদিন হলো
তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন পরিছন্নতা কর্মী সাদ্দাম ভুয়া সাটিফিকেট দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। সেটি যাচাই করবেন কীভাবে তা তার জানা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। সিরাজকাটি দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রেমাশিষ মন্ডল বলেন, সাদ্দাম ট্রেড লাইসেন্স ও মোটর ম্যাকানিকের কথা বলে সনদ আমার থেকে নিয়েছিলো। সাদ্দাম আমার স্কুলে কোনদিন পড়া লেখা করেনি। পরবর্তীতে জানলাম আমার দেওয়া সনদে সে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে ওই সনদের বিষয়ে জিগ্যেস করেছিলো আমি যা সত্যি তাই বলেছি। সাদ্দাম কোনদিন আমার স্কুলে ভর্তি বা পড়ালেখা করেনি। আর সনদ যখন দিয়েছি স্কুলটি এমপি ভুক্ত ছিলোনা যে কারণে আমি এতোটা বুঝতে পারিনি।
ভুয়া সার্টিফিকেটে চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু কথা উঠেছে, আমি বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাব। তারা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি রেজাউল হোসেন বিশ্বাসের কাছে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আমি ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। তার সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেব।#