বিশেষ প্রতিনিধি ঃ রাজশাহীর বাঘায় তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলায় দেখা মিলেছে প্রায় দেড়শ প্রজাতির আম। বাহারি নামের আমের মধ্যে- লক্ষণভোগ, দুধ কোমর, খালসি ফজলি, আপেল গুটি, হাইব্রীড লকনা, খিরসাপাত, ভাদরী, মধুখালসি, হিমসাগর, সুমাসী, পেপে ল্যাংড়া, জগৎমহনী, কাকড়ি, আড়াজাম, হাতিঝোল, দুধসাগর, আ¤্রপালি, আনারসী, মধু চুষকা, মল্লিকা, জাওনী, কালিভোগ আশ্বিনা, পাগাড়ে, মধুমতি, মিয়াজাকি (সূর্যডিম), ঝিনুক, আশ্বিনা, জামাইভোগ, চেংমাই, বড় গুটি,রানী পছন্দ, চোষা,চরুষা, ক্ষীরে স্বর, তোতাপুরী, ঠুটি, জসেরের গুটি, অনামিকা, বৈশাখী, জামরুলের গুটি, ,ফনিয়া, আড়াজাম, কৃষাণভোগ, জোহুরা, কালুয়া গুটি, কাদুমা, বারিআম-৪, আনারকলি, চাপা গুটি, ব্যানানা ম্যাংগো, বৌ-ভুলানো, বিশ্বসুন্দরী, কিং অব চাকাপাত, ইঁদুরচাটা, চান্দু গুটি বোম্বাই, বাবুইঝুকি,নেঙার গুটি, লাখে এক, গুটি (বড়), মিসরিভোগ, খাজাগুটি, গুটি (ছোট), বাউ গুটি, চিনি খোরা, সুরমা ফজলি. ধলা গুটি, চুঙ্গাভোগ, বাঘাশাহী, মায়াবতি, মহনভোগ,বঙ্গবাসী, সাগর ভাষা, হাড়িভাঙ্গা, আষাঢ়ী, বালেনী, মকসেদ গুটি, ছাতুভিজালী, খোদা দাদা, নন্দাফ্রাম, কালিভোগ, জাইতুন, কুয়াপাহাড়ী, গোল্লা বেলী, বারিআম-১১, বাতাসী, সেনরী, গৌড়মতি, ধমীয়া, ভুজাহারী, কাটিমন (বারমাসী), সেঁদুরি, চাপাতি, গোপালভোগ, মোহন ঠাকুর, মধু রাণী, বেলী, মিছরিছানা, কইতর গুটি, দুধস্বর, সালাম ভোগ, জিলাপী কাড়া, কুমড়া জালি, শ্যামলতা, গোল কাচামিঠা, দারোগা ভোগ, গোপাল খাস, মালদহ, লেট আনারসী, রং বিলাস, বিন্দাবন গুটি, রহিমুন, দিলসা, মিসরিকান্ত, মুলতানি, চন্দনভোগ, কাজী পছন্দ, মোহনবাসী, কালী ভোগ, সুরসী গুটি, মিছরি দমদম, ঝুমকা গুটি, বেকে বৈশাখী, বাজে কলস, রাশিদা সুন্দরী, খাগড়াই, বাদল, সুরুজ আটি, ঠাকুরের ভিটা, রঘুনাথা গুটি, সিলেটি গুটি, সবেদা, সিঙ্গাপুরী ল্যাংড়া, আতা খালসী, আবুল গুটি, শাওনী আটি, রুপ সুন্দরী, চন্দনসুরী, আদরী, পেতা, মধুমতি গুটি রয়েছে।
প্রদর্শনী স্টলে বিভিন্ন বাগান থেকে এসব আম সংগ্রহ করে দর্শার্থীদের পরিচিতির জন্য রাখা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বৃহস্পতিবার(৩০মে) উপজেলার চত্বরে তিন দিনব্যাপি এই মেলার আয়োজন করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। দুপুরে এই মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাহি অফিসার বলেন, কৃষি খাতে যারা ভালো করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দেশের মধ্যে অন্যতম কৃষি নির্ভর বাঘা উপজেলা। কৃষিখাতে এই উপজেলায় বিল্পব ঘটেছে। আগামীতে কৃষকদের জন্য মডেল হবে বাঘা উপজেলা।
তিনি বলেন,কৃষি যাঁদের সার্বক্ষণিক পেশা ছিল না, তাঁরা এখন কৃষিতে আসছেন। উচ্চ মূল্যের নানা ফসলের চাষ শুরু হয়েছে উপজেলায় । অযথা সময় নষ্ট না করে পরিকল্পিতভাবে কৃষি অফিসের সহায়তায় ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, ড্রাগন, চিয়াবীজ, কিনোয়াবীজ, পেরিলাবীজ ও আঙুর চাষ করে নিজেদের ভাগ্যে পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন শিক্ষিত বেকার যুবকরা ।
উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, দেশের গন্ডি পেরিয়ে কয়েক বছর ধরে বাঘার আম বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এছাড়াও পেঁপে, বরই, পেয়ারা পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে।এতে লাভবান হওয়ায় কৃষিখাতে কৃষকদের আগ্রহ অনেকাংশে বেড়েছে। আগামী মৌসুমে মিষ্টি আলু, ওলকচু, হলুদ বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনের পর ১৫টি স্টল ঘুরে দেখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উপজেলার ভিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। কৃষি প্রযক্তির এই মেলায় মোট ১৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে। মেলায় প্রবেশের ডান পাশের স্টলে বিভিন্ন নামের ১৪৫ জাতের আম থরে থরে সাজানো রয়েছে। অন্যান্য কৃষিপণ্য প্রদর্শনীর স্টল রয়েছে ১৪ টিতে।
মেলায় ঘুরতে আসা উপজেলার বাজুবাঘা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, বাঘা আমের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এতো জাতের আম এক সাথে কখনো দেখিনি। কলেজ পড়ুয়া শান্তু মিঞা বলেন, মেলায় বিভিন্ন জাতের আম প্রদর্শনীর কথা শুনে দেখতে এসে খুব ভাল লাগলো। তবে দাদার মুখে যে সব আমের নাম শুনেছি, তা কখনো দেখিনি। মেলায় এসে নতুন নতুন জাতের আমের নাম জানা ও দেখা গেল।
শাহদৌলা সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবদুল হানিফ মিঞা বলেন,কৃষি প্রযুক্তি মেলাটা অসাধারণ। উপজেলা সফল কৃষক শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, আম রপ্তানীর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে এক দিকে কৃষক লাভবান হবে অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি কয়েক বছর ধরে বিদেশে আম পাঠাচ্ছেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মেলায় ১০৫ টি জাতের আম প্রদর্শন করা হয়েছিল। এবার এর সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪৫ জাতের আম প্রর্দশন করা হয়েছে। আরও নতুন নতুন নামের আম খুঁজে বের করে আগামীতে মেলায় প্রদর্শন করার চেষ্টা করা হবে।
মেলা উদ্বোধনের আগে আলোচনা সভা শেষে একটি বর্নাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি উপজেলা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষণ করে। পওে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়। এতে অংশ গ্রহণ করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সামসুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশাদুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান, বাঘা থানার পরিদর্শক(তদন্ত) সোয়েব খান প্রমুখ।#