# মেহেরুল লালপুর মোহন, লালপুর, নাটোর……………………………………………….
সোনালী আঁশ কৃষকের গলায় ফাঁস। চাষাবাদের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লালপুরের কৃষকরা। লালপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পাট বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে তবে দামে খুশি নন তারা। মৌসুমের শুরুতে দাম ভালো পেলেও বর্তমান বাজারের পাটের দাম অনেক কমেছে। বর্তমানে প্রতি মণ পাট ১৬০০-২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাভ তো দূরের কথা চাষাবাদের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়,লালপুর উপজেলার ভেল্লাবাড়িয়া বাজারে দেলোয়ার হোসেন,আরিফ আলী ও আব্দুল জাব্বারের পাটের দোকানে(আড়ৎ)দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা হতে পাট চাষীরা সাইকেল,ভ্যান, এবং ঠেলাগাড়িতে করে পাট বিক্রি করতে এসেছে চাষিরা।তবে পাটের আড়ৎ-এ এসে পাটের দাম শুনে মন খারাপ সবারই।কয়েকদিন আগের চেয়ে পাটের দাম প্রতি মণে কমেছে ৩০০-৪০০ টাকা।পরিবহন খরচ আর আবাদের খরচ মিলিয়ে তাদের লাভের অঙ্ক প্রায় শূন্যের কোটায় বলে জানান চাষীরা।
এ বিষয়ে উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার পাটচাষী আব্বাস আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে সার-পানি, কীটনাশক,আঁশ ছড়ানো মজুরি খরচসহ ১৬-১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বিঘায় পাট পেয়েছি ৮-১০ মণ। যার মূল্য পেয়েছি মাত্র ১৭,৫০০ টাকা। মোট খরচ হিসেবে আমাদের কোনো লাভই হয়নি।কষ্ট করে পাট চাষ করে কী লাভ?
বিলমাড়িয়ার আরেক কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, গত দুই বছর ধরে পাটের দাম ভালো পাচ্ছি না।বৃষ্টি নাই, খরায় পাট গাছের জমিতে বাড়তি পানি দিতে হয়।জাগ দেওয়ার সময়ও সেচ দিতে হয়। তাই খরচও বেশি হচ্ছে। সে তুলনায় লাভ তেমন নাই। পাট ব্যবসায়ী দেলোয়ার এবং জাব্বার বলেন,আমরা গ্রাম এলাকা ঘুরে ঘুরে ১৮০০-১৯০০ টাকা মণে পাট কিনছিলাম।কিন্তু হঠাৎ দাম কমে যাওয়া এবং পরিবহন খরচ বাড়ায় আমরাও এখন কম দামে কিনছি। দিন যতই যাচ্ছে পাটের দাম ততই কমছে।
আরেক ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম বলেন,গত হাটে পাটের দাম মণপ্রতি ২২০০-২৩০০ টাকা ছিল।আজকে সেই পাটের মণ সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা।দাম না বাড়লে লোকসানে পড়বো। এ বিষয়ে আ’লীগ নেতা লেঃ কর্ণেল রমজান আলী সরকার(অবঃ)বলেন,পাট একটি অর্থকরী ফসল।দেশ-বিদেশে পাটের অনেক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ পাট রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে।তাই পাটকে সোনালি আঁশ বলা হয়।এ আশঁ উৎপাদন করে আমার দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষকরা।তাদের যেন লোকসান না হয় বা তারা যেন উৎপাদন খরচের হিসেব করে হতাশায় না ভূগে এজন্য পাটের বাজার মূল্যে যেন কোন সিন্ডিকেট তৈরি না হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।#