স্টাফ রিপোর্টারঃ নাটোরের লালপুরে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর চিনি বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ অভিযানে নেমে ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন নয়জন আওয়ামী লীগ সমর্থককে আটক করেছে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—সাব্বির (২৪), সুজাত (৩০), মহাসিন (২৭), জিয়া (৪৬) এবং খোলা কাগজের লালপুর প্রতিনিধি তুষার ইমরান (২২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের নামাজ শেষে রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহ মাঠে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি সমর্থকরা এতে আপত্তি জানালে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রথম দফার সংঘর্ষে সাব্বির নামে এক বিএনপি সমর্থক আহত হন। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়, এবং একপর্যায়ে গুলি চালানো হয়। এতে সুজাত নামে এক বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।
সংঘর্ষে স্থানীয় সাংবাদিক তুষার ইমরানসহ আরও তিনজন আহত হন। ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আটককৃতদের যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঈদের দিন এমন রাজনৈতিক উত্তেজনা দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্রে অশনিসঙ্কেত। ঈদগাহের মতো পবিত্র স্থানে রাজনৈতিক বিভাজন এবং সহিংসতা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছেন সুশীল সমাজ।#