1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
রাজশাহীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে ভ্রাম্যমান সংগীতানুষ্ঠান রাজশাহীতে জনপ্রিয় মিজানুর রহমান মিনুর প্রচার প্রচারণা মান্দায় সাড়ে তিন কোটি টাকার গাজর বিক্রির সম্ভাবনা গণসংহতি আন্দোলন খালিশপুর থানা কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁতে রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাঈদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন বাঘা উপজেলা সংগ্রামীদলের গঠিত কমিটি অনুমোদন বাঘায় ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ক’র উপর দিল্লির নজরদারী রাজশাহী ওয়াসা কর্মচারী ইউনিয়ন দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সভাপতি শফিকুল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল

রাসায়নিক ব্যবহারে বেড়েছে মাটির অসুখ

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

৥ মোঃ আলফাত হোসেন ৥

জলবায়ুর পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, একই জমিতে যুগের পর যুগ একই ফসলের চাষ, জমিকে বিশ্রাম না দেওয়া, রাসায়নিক সারের অসম ব্যবহারের কারণে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সাতক্ষীরার আশাশুনি,দেবহাটা,কালীগঞ্জ,শ্যামনগররের উপকূলে বেশি ফলন পাবার আশায় বেশি বেশি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন কৃষকরা। এতে জমির জৈব পদার্থ কমে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে জমির উর্বরা শক্তি। জমির উর্বরা শক্তি ঠিক রাখতে প্রয়োজন নানা ধরনের ফসল চাষ। উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের ফসল চাষও জমির উর্বরা কমার কারণ হতে পারে। ধাতব পদার্থের কারণে দূষিত হয়ে পড়ছে দেশের উর্বর মাটি। আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, সীসা, নিকেল হচ্ছে ভারি ধাতব পদার্থ। ক্রমাগত ফসল ফলানোর কারণে দেশের মাটিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে জৈব পদার্থ নেই। মাটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে।

অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, অধিকাংশ কৃষকই বেশি ফসলের জন্য নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার ব্যবহার করেন। অপরিমিত ও মাত্রাতিরিক্ত সার ব্যবহারে মাটির উর্বরা গুণাগুণ হারিয়ে যাচ্ছে। এতে একটা সময় কৃষিতে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। মাটির ঘাটতি কমানোর পাশাপাশি উবরতা শক্তি ধরে রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার।

জীবন ধারণের জন্য উদ্ভিদ মাটি থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য হিসেবে খনিজ পদার্থ ও পানি সংগ্রহ করে। এর অভাব হলে ফসল তথা উদ্ভিদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে ও ফসলহানি ঘটে। দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে গিয়ে শস্যের নিবিড়তা বাড়ছে, এতে মাটির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। টেকসই মাটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাটির উৎপাদনশীলতা, মাটিতে গাছের অপরিহার্য পুষ্টি উপাদানের মান বজায় রাখতে হবে। কারণ মানুষের জীবন-জীবিকা ও খাদ্যনিরাপত্তা নির্ভর করে টেকসই মাটি ব্যবস্থাপনা ধরে রাখতে হবে। সেজন্য মাটিকে সজীব রাখতে হবে, মাটির গুণাগুণ বজায় রাখতে হবে।

সাধারণভাবে পরিবেশদূষণ নিয়ে আমরা যতটুকু কথা বলি, মাটিদূষণ নিয়ে তার কিঞ্চিৎ পরিমান ও করি না; যদিও মাটি সামগ্রিক পরিবেশেরই অংশ। মাটিদূষণ বর্তমান সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য। মাটির সঙ্গেই মিশে আছে আমাদের জীবন ও জীবিকা। কিন্তু আমরা অবলীলায় তাকে ধ্বংস করে ফেলছি।  জমিতে অত্যধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়োগ মাটির যথাযথ গুণ নষ্ট করে ফেলছে। এই গুণ নষ্ট হওয়ার ফলে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। যেখানে সেখান ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলেও মাটির সর্বনাশ ঘটানো হচ্ছে।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুসারে, শিল্পদূষণ, খনি, কৃষিকাজ ও দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মাটিকে বিষিয়ে তুলছে। দূষণকারী পদার্থের মধ্যে আছে নানা ধরনের ধাতু, সায়ানাইড, ডিডিটি ও নানা ধরনের কীটনাশকের মতো অজৈব পদার্থ। দূষণের কারণে খাদ্য ও পানি অনিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে মাটির। শঙ্কা আছে, ২০৩০ সালের মধ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার দ্বিগুণ হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে খাদ্য উৎপাদন দীর্ঘ মেয়াদে কমে যেতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ব্যবহার মাটির অনেক জৈব গুণ ধ্বংসের পাশাপাশি বহু উপকারী অণুজীবও ধ্বংস করছে। যার ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে।  ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে প্রায় ১ হাজার কোটি।

বাংলাদেশের জনসংখ্যাও আজকের তুলনায় অনেক বাড়বে।  তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেকসই কৃষিব্যবস্থা উদ্ভাবন জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারাবিশ্বে জীববৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশও তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। কীটনাশক ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের পরিণামে এ সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির যথেচ্ছা ব্যবহার পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।

নেদারল্যান্ডসের প্রতিষ্ঠান ওয়াজেনিনজেন ইকোনমিক রিসার্চ ও স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্যমতে, ২০২১ সালে পশুপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এতে পরিবেশের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এ জন্য গবেষকরা মাটির মানোন্নয়নে জীববৈচিত্র্য বিকাশে কাজ করছেন। তারা ভারী বৃষ্টি বা খুব শুষ্ক মৌসুমের জন্য স্থিতিস্থাপক কৃষিব্যবস্থার নতুন উপায় খুঁজে পেতে কাজ করছেন।

বর্তমান কৃষিব্যবস্থায় মাটির গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। যেখানে বাছবিচারহীন ফসল চাষও ভূমিকা রাখছে। অথচ পরিকল্পনামাফিক তথা বৈচিত্র্যময় ফসল চাষ এ সমস্যার সমাধান অনেকাংশেই দিতে পারে। যেমন– লিগুমিনেসি গোত্র তথা শিম জাতীয় ফসল চাষে জমিতে প্রাকৃতিক নাইট্রোজেনের সমাহার ঘটে। এতে অন্তত ইউরিয়ার মতো কৃত্রিম সারের ব্যবহার কমে আসতে পারে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের পানির ব্যবহার সেচকাজে বাড়লে ভূগর্ভে পানি সংরক্ষণও সহজ হয়। পোকামাকড়ের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় নিশ্চিত করার জন্য কৃষি খাতে বহুবর্ষজীবী ফুলের ব্যবহার বাড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।

আর এসব সফল করতে হলে সরকারকে যেমন জৈব কৃষিকে ব্যাপক উৎসাহ দিতে হবে, তেমনি সাধারণ জনগণকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে,আর সচেতনতা বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের পরিশ্রম করতে হবে।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট