বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি………………………
রাজশাহীর বাঘায় স্কুল ছাত্র রাজিব এর অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধারের ৬ দিন পর হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে তিন কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ৮ টা থেকে ১০ টার মধ্যে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের স্বীকারুক্তিতে জানা গেছে, নগদ ২০ হাজার টাকা এবং একটি দামি মোবাইল হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে তারা রাজিব আহমেদকে হত্যা করে।
বাঘা থানা পুলিশের একটি মুখপত্র জানান, গত ৮ জুলাই উপজেলার কলিগ্রাম এলাকার পদ্মা নদী থেকে রাজিব আহমেদ (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজিব আহমেদ উপজেলার চকছাতারী গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে । সে ঘটনার তিনদিন পূর্বে বিকেল বেলা নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর বাড়ি ফিরেনি। তবে ঘটনার তিনদিন পর পুলিশ নদী থেকে লাশ উদ্ধার কালে রাজিব আহমদের মুখের মধ্যে রশি প্রবেশ করানো-সহ তার গলায় ফাঁস দেয়ার দাগ এবং শরীরে আঘাতের চিহৃ পায়। অত:পর এই লাশ পোস্টমর্টেম এর জন্য রামেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে ঘটনার ৬ দিন পর বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার(১৩-জুলাই) রাত ৮ টার সময় রাজিবের আহমেদের বন্ধু কিশোর সবুজ (১৫)কে আটক করে বাঘা থানা পুলিশ। সুবজের বাড়ী উপজেলার চকছাতারি গ্রামে ইউসুফ আলীর ছেলে। পুলিশ জানায়, সবুজের স্বীকারুক্তি পেয়ে মাত্র দুই ঘন্টার ব্যবধানে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অপর দুই কিশোর মাহাবুল আলমের ছেলে সৈকত(১৫) এবং জালাল উদ্দিনের ছেলে পিয়াল(১৬)কে আটক করা হয়।এদের দু’জনের বাড়ি উপজেলার কলিকগ্রাম এলাকায়। পরে পুলিশ পৃথক ভাবে আটককৃত তিন জনের স্বীকারুক্তি নিয়ে জানতে পারেন, মাত্র ২০ হাজার নগদ টাকা এবং একটি ৩০ হাজার টাকা মুল্যের রেডমি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয়ার জন্য তারা কলিগ্রাম নদী এলাকায় গিয়ে ধুমপান এর আসর বসায় এরপর চার বন্ধু মিলে রাজিবকে হত্যা করে তার লাশ মূল পদ্মার শাখা (মরা নদীতে) ফেলে দেয়। এদের মধ্যে একজন পলাতক রয়েছে।
পুলিশ আরো জানায়, আটককৃতরা স্বীকারুক্তি দিয়েছে তারা ঐ ২০ হাজার টাকা চার বন্ধু ভাগা-ভাগি করার পর অজ্ঞাত কারণে মোবাইল ফোনটি বিক্রী না করে নারায়নপুর বাজার সংলগ্ন একটি পুকুরে ফেলে দেয় । বৃহস্পতিবার(১৪ জুলাই) দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাঘা ফায়ার সার্ভিসের লোকবল এনে মোবাইলটি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চলছিলো ।
উল্লেখ্য রাজিব হোসেন (১৫) গত বুধবার (৬ জুলাই) বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়। তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে পাওয়া পায়নি। পরেরদিন তার বোন চায়না খাতুন বাদি হয়ে বাঘা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন। এই ডাইরী করার দুইদিন পর শুক্রবার (৮ জুলাই) কলিগ্রামের পদ্মা নদী থেকে রাজিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)সাজ্জাদ হোসেন জানান, রাজিব বাঘা ইসালামী একাডেমী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে পড়া-লেখা করতো।তাকে মাত্র ২০ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল ফোনের জন্য হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘটনার সাথে জড়িত চারজন বন্ধুর মধ্যে তিনজনকে আটক করে বৃহস্পতিবার দুপুরে মহামান্য আদালতে প্রেরণ করেছি।#