1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
সাইটসেভার্স এর সহযোগিতায়,ব্র্যাকের উদ্যোগে দাকোপে উপজেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা  কালীগঞ্জে গাজীপুরের নবাগত ডিসির মতবিনিময় আত্রাইয়ে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন পত্নীতলায় আশা শিক্ষা কর্মসূচির অভিভাবক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ খুব তাড়াতাড়ি সকল পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে: রাজশাহীতে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা রূপসা বর্নমালা শিক্ষালয়ে ফলাফল প্রকাশ ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত তানোরে আমণের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা তানোরে বিদ্যুৎ শাটডাউনে জড়িতরা বহাল তবিয়তে রকমারি সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন আত্রাই উপজেলার কৃষকরা

রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত নিয়মের বালাই নেই

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১২৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

মমিনুল ইসলাম মুন, তানোর, রাজশাহী থেকে………………………………..

রাজশাহীর তানোর উপজেলা হাসপাতাল নানা অনিয়ম ও আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, তানোর হাসপাতালের প্রধান সহকারী (বড় বাবু) সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে প্রায় একযুগ একই কর্মস্থলে থেকে হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ করছেন। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থানায় অনিয়ম-দুর্নীতির সব অলিগলি তার চেনা। তার নেপথ্যে মদদে যাবতীয় অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বড় বাবুর কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রীতিমত জিম্মি। ফলে তার অপসারণ বা বদলী সময়ের দাবিতে পরিনত হয়ে উঠেছে। রয়েছে দালাল ও ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য। এছাড়াও হাসপাতালের পুকুরের চারদিকে প্রক্টেশন ওয়াল নির্মানে অর্থ বরাদ্দ করা হলেও একদিকে প্রট্কেশন ওয়াল নির্মান করে পুরো অর্থ আত্মসাৎ করেছে বড় বাবু শাহিনুর।

 

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা এখন সোনার হরিণ। এছাড়া রয়েছে নানা সংকটও। একদিকে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, অন্যদিকে যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ। বিশেষ করে টিএইচও এবং আরএমও না থাকার দোহাই দিয়ে সার্বক্ষণিক অবস্থানের বিপরীতে মাত্র সাড়ে ৪ ঘন্টা অফিস করেন চিকিৎসক ও নার্সরা। ফলে এমন পরিস্থিতিতে ভেঙ্গে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা।

 

সরেজমিন গতকাল সকালে উপজেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র। বিছানার ব্যবহৃত চাদর ও পর্দাগুলো ময়লাযুক্ত দূর্গন্ধেভরা। টয়লেট ব্যবহার অনুপযোগী। মুলত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আব্দুল হাকিম এবং মেডিকেল আবাসিক অফিসার আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ইসরাত জাহান জেরিন দূর্নীতিতে নিমর্জ্জিত থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে, আরএমও ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি মেডিকেলের কোয়াটারে থাকেন না। রাজশাহী নগরী থেকে অনিয়মিত ভাবে অফিস করেন। মেডিকেলের প্রধান এই দুই অফিসার তাঁরা কেউ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন না। এছাড়াও নিয়মিত অফিসও করেন না বলে ভুক্তভোগীরা জানান। তারা শুধু তাদের রাজকীয় চেম্বারে বসে সময় কাটান।

 

ডা. ইসরাত জাহান জেরিনের মোবাইলে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমি মোবাইলে কথা বলি না। অফিসে সরাসরি দেখা করতে বলে মোবাইল সংযোগ বিছিন্ন করে দেন তিনি। হাসপাতালের ওয়ার্ডে হারিকেন পরিস্কারের সময় এক আয়া জানান, একটু পরই তো সন্ধ্যা নামবে। অন্ধকার হয়ে যাবে সব। বিদ্যুৎও চলে যাবে। জরুরি বিভাগের জন্য এসব হারিকেল বাতি তৈরি করা হচ্ছে। ওর্য়াড এবং অন্য কক্ষগুলোর অবস্থার কথা জানতে যাইলে তিনি জানান, রোগীরা তাদের নিজ দায়িত্বে আলো বাতি তারা রিজেরাই বহন করবেন। তাদের মধ্যে অনেকেই মোমবাতির ব্যবস্থা করেন। মূলত একটিমাত্র জেনারেটর থাকলেও তেলের অভাবে বন্ধ থাকে বলেই এসব দূর্দশা।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর পৌর এলাকার তালন্দ মহল্লার একরোগী ডাক্তারের কক্ষে চিকিৎসা নিতে প্রবেশ করেন। ওই সময় পার্শ্বে বসে থাকা রিপেজন্টেটিভের সাথে আলাপ চারিতায় আড্ডা মারেন ওই ডাক্তার। আর ওই রোগী তার চিকিৎসা নিতে ছটপট করছেন। কিন্তু রোগীর কোন ব্যবস্থা করছেন না তিনি। ফজলু নামের এক মাথা কাটা শিশুকে জরুরি বিভাগে নিয়ে এসে তার স্বজনরা জানান, নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে রোগী নিয়ে এলে এখানকার জরুরি বিভাগে ডাক্তারের তো দেখাই মিলে না। জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি ক্লিনিক মেডিকেল অফিসার আরিফুল ইসলাম নামের একব্যক্তি ভিতরের আরেকরুমে টিভি দেখা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। রোগীর কাতরানো দেখে পিয়ন দিয়ে কাটা ছিড়া কাজে সিলাই দেয়া হচ্ছে।

 

তানোর হাসপাতালের শুধু এমনই বেহাল চিত্র নয়। পঞ্চাশ শয্যার সরকারি এই হাসপাতালে ২৫ জন ডাক্তার পোষ্টিং থাকলেও হাসপাতালের আবাসিক কোয়াটারে থাকেন না কেউ। রাজশাহী নগরী থেকে অনিয়মিত ভাবে দুয়েকজন অফিস করেন তারা। তাও আবার ১০টায় এসে ঘড়ির কাটা ১ টায় পৌঁছালে উঠে পড়েন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অফিসে থাকার নিয়ম রয়েছে। এসব নিয়মের তোয়াক্কা করেন না খোঁদ টিএইচও (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আব্দুল হাকিম ও আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ইসরাত জাহান জেরিন।

 

উপজেলার লালপুর গ্রামের আয়েজ উদ্দিন নামের এক রোগীর অভিভাবক জানান, আউটডোরে শুধু ৩ জন চিকিৎসক রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখছেন। আর দুই কক্ষ মিলে ১ জন ডাক্তার বসে আছেন। সেখানে লোকের ভিড়ে প্রবেশ করতে না পেরে জুরুরি বিভাগে গেলেও চিকিৎসকের অভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে তার রোগী নিয়ে হাসপাতালের বাইরে ক্লিনিকে চিকিৎসা করান। পুরো হাসপাতালে ৪ জন ডাক্তার ঢিমেতালে অফিস করলেও ২১ জন ডাক্তার বাসায় বসে মাস শেষে বেতন তুলছেন।

 

অপরদিকে, হাসপাতালের ১৭ জন নার্সের পোষ্টিং থাকলেও নিয়মিত অফিস করেন ৬ জন। একই চিত্র উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যগুলোতেও রয়েছে বলে তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা গেছে। ওইসব ডাক্তারদের উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পোষ্টিং থাকলেও তারা জেলা শহর থেকে এসে উপজেলা সদর হাসপাতালে বসে সময় কাটান। কেউ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসেন না। বসলেও দুই থেকে তিন ঘন্টা উপজেলা সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসেন। এতে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই অঞ্চলের রোগীরা বলে জানিয়েছেন অনেকে। ফলে ওই অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা হুমকির মুখে পড়েছে।

 

এ উপজেলায় সরকারি একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল, পাঁচটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সতেরটি কমিউক্লিনিক রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রয়োজনের তুলনায় জনবলের পোষ্টিংয়ের কমতি না থাকলেও তারা কর্মস্থলে না থাকায় চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন চিকিৎসার্থীরা। সরকারি নিয়ম অনুয়ায়ী যেখানে ২৫ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র ৭ জন। তবে, মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট পদে ৩ জনের স্থলে ১ জন নামে মাত্র অফিস করেন।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যনুযায়ী মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ, গাইনি বিশেষজ্ঞ, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, ডেন্টাল সার্জন, এক্সরে ও আল্ট্রাসনো পদে চিকিৎসক থাকলেও হাসপাতালে এসে টিএইচও’র এসিরুমে বসে চা আপ্পায়নে গল্প করে সময় কাটান। অথচ রোগীরা ঘন্টা ধরে চিকিৎসকের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু কোন রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

 

এই হাসপাতালে ৯৫টি পদের পোষ্টিং থাকলেও বাস্তবে ঢিমেঢালা অফিস করেন হাতেগুনা কয়েকজন। বাকিরা ক্ষমতার দাপটে বাসায় বসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। অপরদিকে, এই হাসপাতালটির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ফুলের বাগান তৈরি বাবদ সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও হাসপাতালের টিএইচও (ভারপ্রাপ্ত) আরএমও, বড় বাবু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ফুলের বাগানের নামে বরাদদকৃত ওইসব অর্থ আত্নসাৎ করেই চলেছেন বলেও আলোচনা রয়েছে। তবে এসব দেখার যেন কেউ নেই।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, বড় বাবু নানা অজুহাতে প্রতিমাসে বেতনের সময় আনুঃপাতিক হারে টাকা কেটে নেন, তবে প্রতিবাদ করলে শাস্তির খড়গো।অপরদিকে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উন্নতিকরণ করা হয়েছে। সেইমতে জনবল নিয়োগ দেয়াও হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার ও নার্স নিয়মিত উপস্থিত না থাকায় উপজেলার লাখ লাখ মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী হাসপাতালের বর্তমান টিএইচও (ভারপ্রাপ্ত) এবং আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) উদাসীনতা আর অনিয়মকেই দায়ী করছেন। উপজেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি মাত্র সরকারি হাসপাতাল।

 

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আব্দুল হাকিম বলেছেন, চিকিৎসকরা একটু দেরি করে অফিসে আসেন এটা ঠিক আছে। কিন্তু অপারেশন থিয়েটার, ডেন্টাল ইউনিট, ব্লাড ব্যাংক ও এক্সরে মেশিন সব অচল নয়। দুয়েকটি বন্ধ আছে। চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়মমতে পালাক্রমে ডিউটি করে থাকেন বলে এড়িয়ে গেছেন এই কর্মকর্তা।

 

এবিষয়ে প্রধান সহকারী বড় বাবু শাহীনুর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। তিনি বলেন, সিভিল সার্জন স্যার চাইলে বদলী করতে পারেন, তবে তাকে ভালবেসে এখানে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন বলেন, বড় বাবুর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট