নিজস্ব প্রতিবেদক……………………….
রাজশাহীর চারঘাটে নাসিক রেড এন-৫৩ জাতের পেয়াঁজ চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। চারঘাট উপজেলার কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় পরিক্ষামূলক ভাবে উদ্বুদ্ধ কৃষকরা নাসিক রেড এন-৫৩ জাতের পেয়াঁজ চাষ শুরু করেন।
এই পেয়াঁজের উৎপাদন খরচ কম ও ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে এই জাতের পেয়াঁজ চাষ ব্যপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । পেয়াঁজ সাধারনত শীতকালীন ফসল হলেও এই জাতের পেয়াঁজ গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে উৎপাদন হয়। এর ফলে অথনৈতিকভাবে স্থানীয় কৃষকরা অধিকহারে লাভবান হওয়ার ফলে এই জাতের পেয়াঁজ চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১ম পর্যায়ে ২শত জন এবং ২য় পর্যায়ে প্রায় ২শ৫০ জন কৃষকের মাঝে গ্রীষ্মকালীন পেয়াজ নাসিক রেড এন-৫৩ জাত বীজ ও অন্যান্য উপকরন বিতরন করা হয়। উপজেলার হলিদাগাছি, ইউসুফপুর, বেলঘরিয়া, সরদহ ও পৌরসভার বিভিন্ন কৃষিজমিতে গ্রীষ্মকালীন পেয়াঁজের নমুনা শস্য কর্তন করে বিঘা প্রতি ১৫০-২০০ মন হারে ফলন পাওয়া গেছে।
আকারে বড় এই পেয়াজের দাম মন প্রতি বাজারে ১ হাজার ৩০০-১ হাজার ৫০০ টাকা এবং এই পেয়াঁজের পাতা মন প্রতি ৩শ৫০-৪ শত টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের হলিদাগাছি গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বজলুর রহমানের পেয়াঁজের জমিতে তিনি প্রায় চার বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন নাসিক রেড এন-৫৩ জাতের পেয়াঁজ চাষ করেছেন। উৎপাদিত একেকটি পেয়াঁজের ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম। কৃষক বজলুর রহমান বলেন, কৃষি অধিদপ্তরের কর্মরত ব্লক সুপারভাইজারের সার্বিক তত্ত্ববধানে সময়মত জমি তৈরি, পোকা মাকড় দমনে সার প্রয়োগ ও নিয়মিত ফসলের পরিচর্যা করেছেন।
এই জাতের পেয়াঁজ পার্পল ব্লচ রোগ সহশীন সে কারনে ঘন ঘন কীটনাশক স্প্রে করা লাগেনা। মাত্র ২-৩ বার ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করলেই চলে। এই জাতের পেয়াঁজে উৎপাদন খরচ খুবই কম হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এসময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নাসিক রেড এন-৫৩ জাতের পেয়াঁজ চাষে পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি অফিসার ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানসহ পেঁয়াজচাষী বজলুর রহমান,আশরাফুল ও সাংবাদিকবৃন্দ।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন নাহার বলেন, ফলন বেশি ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে এই পেয়াঁজের চারার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কৃষক নিজ জমিতে রোপনের পাশাপাশি অতিরিক্ত চারা অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে। বর্তমানে ২য় ধাপে ২০৫ বিঘা জমিতে কৃষকরা চারা রোপন করেছেন। তবে গ্রীষ্মকালীন পেয়াঁজের ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে। কৃষকরা এই জাতের পেয়াঁজ চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে যেমন লাভবান হবে তেমনি দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে বলে তিনি মনে করেন।#