1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
তানোরে কৃষি জমির মাটি কেটে বাড়ি নির্মাণ, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই চলছে খনন কাজ গোমস্তাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান, চোলাইমদসহ একজন গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলাম  ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি শুরু করেছেঃ রূপসায় আজিজুল বারী হেলাল রূপসায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্টর ১ম সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত  ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে প্রতিবাদ কর্মবিরতি সমাবেশ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ প্রায় ২০ জন আহত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পঞ্চগড়ে শিক্ষক সমিতির বিক্ষোভ সমাবেশ ভোলাহাটের তিলোকী গ্রামের ছোট্ট শিশু কারিমা মাইক্রো বাসের নিচে চাপা পড়ে নিহত নতুনতারা সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত ‎ ‎

বাঘার ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ  প্রাঙ্গনে মেলা, পণ্য বেচা-কেনা কম, দর্শক টানতে পারেনি হিরো আলম

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২২৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি…………………………………………….

এক সময়ে হিংস্র জীব জন্তুর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর বাঘায় এখন আর বাঘ নেই। আম,ধান,পাট আখ,হুলুদ,খেজুরগুড় সমৃদ্ধ বাঘায় বছর ঘুরে অনুষ্ঠিত হয়  মেলা। লোকায়ত বাংলার মেলার ঐতিহ্য ৫’শ বছরের। বাঘার ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ পরিদর্শন শেষে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে আনন্দ উপভোগ করেছেন, ঈশ্বরদীর রুপপুর পারমানবিক এ কর্মরত ১২ জন রাশিয়ান । তারা মসজিদের টেরাকাটা দেখে মুগ্ধ হন। টুরিষ্ট পুলিশের পুলিশ ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত শনিবার (২০-০৪-২০২৪) ইলিনা বাস () এর নের্তৃতে বাঘার শাহী মসজিদ ও মেলা পরিদর্শন শেষে রাজশাহীর জেলা ও মহানগর এলাকার বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিদর্শন করেছেন।    এদিকে,বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সার্কাস প্যান্ডেলে আলোচিত হিরো আলম-রিয়ামনি জুটিকে নিয়ে এসেও  দর্শক টানতে পারেননি আয়োজকরা।

আয়োজক হিমেল মিঞা জানান, হিরো আলম-রিয়ামনি জুটিকে নিয়ে শো চালিয়েও দর্শক-শ্রোতা টানতে পারেননি। জানা যায়, আশির দশকেও একগ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাওয়ার রাস্তা ছিলো পায়ে হাঁটা পথ। গরুর গাড়িই ছিলো প্রধান বাহন। কত হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে। এখন বাঘা-লালপুর-ঈশ্বরদী যাতায়াতের পাকা রাস্তা। ঢাঁকা পড়েছে ডহরের বিন্নি। সার্কাস-নাগরদোলাসহ বিনোদনে-সংগীতানুষ্ঠানের সংযোজনে এসেছে বৈচিত্র। ফুটপাতজুড়ে, সপিং মলের দোকানে বিক্রি হতে শুরু করেছে নানা ধরনের পণ্য। বিদুৎতের ঝলমলে আলোয় হ্যাচাক লাইট আর কুপি বাতি জ¦ালিয়ে রাতের উৎসব  আর চলেনা ।

স্থানীয়রা জানান, আগে দলবেঁধে মেলায় এসে পুতুল নাচ,বাইশস্কোপ দেখাসহ  তাল পাতার ও বাঁশের বাঁশি কেনা আর  সন্ধ্যার পর  নাটক-যাত্রা গান শোনার আনন্দ ছিল  অনেক বেশি। পোড়াবাড়ির চমচম আর গৌরপালের মিষ্টি ছিল সবার প্রিয়। মৃৎ শিল্পীদের মাটির হাঁড়ি পাতিল, নানার রঙের দেশীয়পশু-পাখী, শোলার খেলনা, খই, তালপাতার বাঁশি,বাঁশের বাঁিশ,ব্যাঙগাড়ি, বেতঁ-বাশের তৈরি সরঞ্জাম ইত্যাদি এখন আর নেই। ওরসেও জমেনা খানকা বাড়ির মধ্যে রাতভর বাউল সন্যাসীদের সামাকাওয়ালি,মারিফতি গানের আসর ।   বাঘা ওয়াকফ এষ্টেটের মাঠ ছেড়ে মেলার বিস্তৃতি ঘটেছে বিদ্যালয় মাঠে। ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ওয়াকফ্ এস্টেটের মাঠ আর ৫৫ হাজার টাকায় বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ইজারা দেওয়া হয়েছে। আগের মতো এবার মেলা জমে উঠেনি।

মেলায় লোকসমাগম হলেও ব্যবসায়ীদের পণ্য বেচা-কেনা কম হয়েছে। তবে কম পূজিতে বেশি আয় হয়েছে গ্যারেজ মালিকদের। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে বাঘায় শ্বশুর বাড়ি এসে স্ত্রীসহ শ্বশুর বাড়ির শিশুদের নিয়ে মেলা ঘুরতে এসেছিলেন শিক্ষক রাব্বি হোসেন। ফেরার সময় বেশ কিছু খেলনা সামগ্রী কিনেছেন। তিনি জানান, মেলার প্রাণচাঞ্চল্য দেখে তিনি মুগ্ধ।

সোমবার (২২-৪-২০২৪) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিনোদনের প্যান্ডেল সহ কাঠ,ষ্টিল’র আসবাবপত্র, কুটির ও হস্তজাত দ্রব্য, প্রসাধনী, খেলনা,প্লাষ্টিক সামগ্রী, মিষ্টির দোকানসহ প্রায় ৫ শতাধিকের বেশি রকমারি পণ্যর দোকান বসেছে মেলায়। ছোটদের বেশি চাহিদা ছিল খেলনা সমাগ্রীর দিকে। নারিরা কিনেছেন গহনা ও লোহার সামগ্রী।

মেলায় আসা নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের কসমেটিকস-খেলনা সমাগ্রী বিক্রেতা এবরাহিম হোসেন জানান, এবার মেলায় বেচা-কেনা কম হয়েছে। সোমবার(২২-০৪-২০২৪) পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। বিগত বছরগুলোতে মেলায় এসে দ্বিগুন টাকার পন্য বিক্রি করেছেন। ৪ বছর আগে মেলায় এসে ভালো বেচা কেনা করেছেন কুঠির শিল্পের স্বত্ত্বাধিকারী রাশিদা পারভিন। এবার ১ লক্ষ টাকার পণ্যও বিক্রি করতে পারেননি। একই সুরে কথা বলেছেন, ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে এবারই মেলায় প্রথম আসা মানিব্যাগ বিক্রেতা মোঃ টগর প্রধান। ঈদের দিন থেকে সোমবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা।  ৩হাজার টাকা খাজনা ছাড়াও প্রতিদিন ২জনের খাওয়া বাবদ খরচ হচ্ছে ৭০০ টাকা। এছাড়ও বিদুৎ বিল ,প্রহরি খরচ,ঝাড়– খরচও দিতে হয়েছে। কামাল হোসেনের বেঙগাড়ি বিক্রি ভালো হয়েছে বলে জানালেন । ২

৪ বছর ধরে মেলায় আসা মনিগ্রামের ফার্নিচার ব্যবসায়ী হুমায়ন কবীর জানান, ৪ বছর  পর আবার মেলায় এসেছেন। এর আগে মেলায় এসে ২০ লাখ টাকা পযন্ত বিক্রি করেছেন। সোমবার পর্যন্ত তার বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ টাকা। তবে মাসব্যাপি থাকতে পারলে বিক্রি বাড়বে বলে আশার তার। শেষ সময় পর্যন্ত বেশি বিক্রির আশা লোহার তৈরি সামগ্রী বিক্রেতা লক্ষন কর্মকারের। বাংলাদেশ স্বাধীনের আগে থেকে মেলায় মিষ্টির দোকান নিয়ে বসেন স্থানীয় জামাল উদ্দীন। এবার বেচা কেনা ভালো হয়নি তার। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য,আম,পাট,আখ, খেজুরগুড় হুলুদ  সহ কৃষিপণ্য উৎপাদনের সময় মেলা হলে বেচা কেনা বেশি হয়।  প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিয়া বলেন, ওয়াকফ এস্টটের আয়োজনে মেলা শুরুর পর থেকে কলেবর বেড়েছে বহুগুনে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিভিন্ন পন্যর স্টল, প্রসারিত হয়েছে দর্শক-শ্রোতা-ক্রেতার ভিড়।

ঈদ এলে মেলাকে কেন্দ্র করে যে আয়োজন হচ্ছে, এটা ঈদের মেলা যতটা, তারও চেয়ে দোকানীদের উৎসব বেশি । নাট্যকার নির্মাতা ফিরোজ আহমেদ শিমুল সরকার মেলার স্মৃতিচারণ করে বলেন, বর্তমানে ধরন পাল্টেছে। দল ধরে ৫ মাইল দুরে পায়ে হেঁটে বাঘার মেলায় গিয়ে দিনে দিনে গুছিয়ে রাখা টাকা দিয়ে মেলায় কেনাকাটা  ছিলো মহা আনন্দের। সম্প্রতিক সময়ে রাস্তাঘাট পাঁকাসহ এলাকার উন্নয়ন হলেও আগের মেলা অবশ্যই অন্যরকম ছিল।একটু বিতৃষ্ণা নিয়েই বললেন, আগে ছিল প্রাণের ঈদ মেলা,এখন হয়েছে বাণিজ্য মেলা।

বাজুবাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, মেলা সূত্রে পরিধি ও  দর্শক সমাগম আর নারিদের অবাধ পদচারনা আগের তুলনায় বেশি।  কিন্তু আগের সেই প্রাণ যেন খুঁজে পাই না। জানা যায়,আব্বাসীয় বংশের হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা (রঃ) ও তার ছেলে হযরত আব্দুল হামিদ দানিশমন্দ (রঃ) এর সাধনার পীঠস্থান বাঘা। আধ্যাত্বিক দরবেশের ওফাত দিবসে প্রতিবছর আরবি শওয়াল মাসের ৩ তারিখে ওরস অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মাজার কমিটি। দেশের বিভিন্ন এলাকার ধর্মপ্রাণ নারী পুরুষ যোগ দেন পবিত্র ওরস মোবারকে।  এবারও ৩শওয়াল শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা (রঃ) এর ৪৯৫ তম এবং  তার ছেলে হযরত আব্দুল হামিদ দানিশমন্দ (রঃ) এর ৩৯৬ তম ওফাৎ দিবসে ওরস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওরস উপলক্ষে ঈদে মেলার আয়োজন করেন মাজার কমিটি।

করেনাকালিন সময় থেকে বিগত ৪ বছর পর এবার মেলা হচ্ছে। এর আগে ২০০৭/২০০৮ সালে মেলা হবেনা বলে ধারনা ছিল সবার। কিন্তু মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহি অফিসার হুমায়ন কবীর বাঘার স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ, শিক্ষিত সমাজ বিশেষ করে বাঘা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সক্রিয় সহায়তায় বিনা ডাকে-ইজারা ছাড়াই মেলা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট ছিলেন প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিনিধি সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদও।

মাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব খন্দকার মনছুরুল ইসলাম বলেন, এ মেলার ইতিহাস প্রায় ৫০০শ বছরের। এবার মেলার অনুমতি মিলেছে ১৫ দিনের।  বাঘা পৌর আ’লীগের সাধারন সম্পাদক মামুন হোসেন জানান, এবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। মেলা  থেকে লাভ হবেনা।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান,যাদু প্রদর্শনীর প্রচার করে অশ্লিল নৃত্যসহ জুয়া খেলা প্রতিহত করা হয়েছে।আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য কাজ করেছে সার্বক্ষনিক।

ধর্মীয় উৎসবের এই মেলায় অশ্লিলতা  চলতে দেওয়া হবেনা বলে জানিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার তরিকুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত  পুলিশকে নিয়ে কাজ করেছেন নির্বাহি অফিসার। ##

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট