নাজিম হাসান………
রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার গ্রামের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদ বর্ণের সরিষা ক্ষেত। গ্রামের মেঠো পথ ধরে হাটলে দু’চোখে পড়ছে বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত। বিশেষ করে সকালে এই সব সরিষা ক্ষেতের পাশ দিয়ে হাটলে দেখা যায় মৌমাছির আনাগোনা। মধূ সংগ্রহে এ ফুল থেকে আরেক ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমছি। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।
উপজেলায় এবার বিগত বছরের চেয়ে বেশী জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে বারি-১৪, বারি ১৫, বারি ১৭ ও টোরি ৭। ধানের উৎপাদন খরচ বেশী পড়ায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে বেশী লাভের আশায় এলাকার কৃষকরা ধানের চেয়ে কম খরচে এবার সরিষার চাষে নেমে পড়েছেন। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবং মৌমাছিরা ফুলে সঠিক ভাবে পরাগায়ন সৃষ্টি করতে সমম্ভ হওয়ায় এ উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।
এলকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, বাগমারা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। এখানে কৃষকরা ব্যাপক হারে পাট, ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষককের উৎপাদিত ফসলের মূল্য হ্রাসে উৎপাদন খরচ জুটছে না। উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের কৃষক সামসুদ্দীন, নানসর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান, নরদাশ গ্রামের কৃষক আজাহার আলীসহ আরো অনেকে জানান, চলতি বছরে আবহাওয়া অনুক‚ল থাকায় সরিষা অন্য বছরের ন্যায় অনেক ভালো ফলন হবে।
সরেজমিনে বাগমারার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌর এলাকার দিগন্ত জোড়া মাঠে এখন সরিষার ফুলের হাতছানি। গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে ও নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে একটানা ভারি বর্ষণের কারনে সঠিক সময়ে জমিতে সরিষার বীজ বপন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে গত বছর এ অঞ্চলে সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছিলো। তবে চলতি মওসুমে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় অক্টোবরের মাঝামাঝির দিকেই কৃষকেরা জমিতে সরিষা বীজ বপন করেন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছিরা মধু আহরণের লক্ষ্যে সরিষা গাছের ফুটন্ত ফুলে বসে পরাগায়ন সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, এবার উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভা এলাকায় চলতি মওসুমে ১৮ হাজার ১১৯ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে টরি-৭, বারি ১৪ এবং বারি ১৫ জাতের সরিষা রয়েছে। এ বছর বাজারে দাম ও আবহাওয়া অনুক‚ল থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানাগেছে।#