মেহেরুল ইসলাম মোহন, লালপুর, নাটোর………………………………..
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ লিমিটেড ৬৫ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হয়েছে। আখ মাড়াই কাজের উদ্বোধন করেছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন। আজ শুক্রবার দুপুর আড়াই টার সময় নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের সুগার কেইনে আখ নিক্ষেপ করে এ বছরের মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের পরে সুগার কেইন চত্বরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে সমৃদ্ধির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত দশ বছরে সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু মৌলিক এলাকায় বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। দেশ গড়ার দিকে নজর দিয়ে তিনি চিনি শিল্পকে নতুন করে সাজানোর জন্য জোর দিয়েছেন। চিনি শিল্পের উন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, নাটোর-৪ আসনের সাংসদ ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, নাটোর-১ আসনের সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুল, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা প্রমূখ।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মিলের নিজস্ব ৫৭৫ একরসহ প্রায় ২৪ হাজার একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ১৪৬ কর্মদিবসের লক্ষ্যমাত্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৭ হাজার ২৮০ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৭.২ ভাগ।
গত মৌসুমে লোকসান হয়েছে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। মিল এলাকায় প্রতিদিন ১৫৭টি অবৈধ পাওয়ার ক্রাশারে ৬২৮ মেট্রিক টন আখ মাড়াই হচ্ছে। যার ফলে মিলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ চিনিকল আখচাষি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও প্রায় ১মাস দেরিতে মাড়াই শুরু করায় রবিশস্য আবাদের জন্য জমি তৈরির জন্য চাষিরা অবৈধ ক্রাশারে আখ দিতে বাধ্য হয়েছেন।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, চলতি রোপন মৌসুমে চাষিদের উৎসাহিত করে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আখ রোপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিলের নিজস্ব খামারগুলো লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। আখ চাষিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা পেলে চিনিকলটি আবার লাভের মুখ দেখবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর লোকসানের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে এভাবে বৃদ্ধি পেলেও কতৃর্পক্ষ আখ মাড়াই বন্ধ করেনি।সঙ্গত কারণে মিলের ভবিষ্যত নিয়ে অনেকে আশংকা প্রকাশ করছেন।মিল টিকিয়ে রাখতে হলে কোন মূল্যে উৎপাদন এবং আয় বৃদ্ধি ঘটাতে হবে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।#