মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স জামান টেড্রার্সের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। জামান টেড্রার্সের স্বত্বাধিকারী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা নুরুজ্জামান ফটিক। তিনি আওয়ামী লীগের ১৭ বছর সার সংকটের দোহাই দিয়ে কৃষকদের জিম্মি ও কালোবাজারে সার বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।কিন্ত্ত জুলাই বিপ্লবের পর পরই ফটিক গা-ঢাকা দিয়েছে। এখন তার পুত্র নিশান ব্যবসা দেখভাল করছেন। জুলাই বিপ্লবের পর ইউপির নব্য বিএনপির দু’নেতার নেপথ্যে মদদে নিশান সার নিয়ে ছিনিমিনি করছে বলে কৃষকের অভিযোগ করেছেন।
২৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে জামান টেড্রার্সের গুদাম ঘর থেকে ৪০ বস্তা টিএসপি সার মোহনপুরের কেশরহাটে পাচারের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা এসব সার আটক করে প্রশাসনকে অবগত করেন।এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা জামান টেড্রার্স ঘেরাও করে তার লাইসেন্স বাতিল ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নানা শ্লোগান দেন। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের শান্ত ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।তবে বিক্ষুব্ধ কৃষকের রোষানল থেকে বাঁচতে দোকান বন্ধ করে কৌশলে নিশান পালিয়ে যায়। আটক সার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গুদামে জব্দ করে রাখা হয়েছে।
কৃষক গাজিমুদ্দিন জকি(৫৫) বলেন, তিন দিন যাবত তিনি সারের জন্য ঘুরছেন।কিন্ত্ত সার নেই বলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কৃষক আসলাম বলেন, টিএসপি সারের সরকারি মুল্য ১৩৫০ টাকা, অথচ জামান টেড্রার্স বিক্রি করছে ২৩৫০ টাকা বস্তা। একইভাবে ডিএপি সারের সরকারি মুল্য ১০৫০ টাকা, কিন্ত্ত তারা বিক্রি করছে ১৯৫০ টাকা। তবে ক্রয় রশিদ দিচ্ছেন না, রশিদ চাইলে সার দিচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, সার বিপণন নীতিমালা অনুযায়ী এক এলাকার সার অন্য এলাকায় বিক্রি ও সরকার নির্ধারিত মুল্যর বেশি দাম নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।কৃষকদের অভিযোগ, জামান টেড্রার্স কতিপয় কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবত সার পাচার করছে। সরকারি বরাদ্দের সার নামমাত্র দিয়ে সিংহভাগ সার মজুদ করে বাড়তি দামে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে।
এবিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ হোসেন বলেন,পাচারের সময় জনতা এসব সার আটক করেছে। তিনি বলেন,ইউএনও স্যারকে অবগত করে তার নির্দেশনায় এসব সার ইউপি ভবনে জব্দ করে রাখা হয়েছে। এ
বিষয়ে জানতে চাইলে নানা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে মেসার্স জামান টেড্রার্সের নিশান বলেন, এসব সার সরকারি বরাদ্দের নয়, বাইরে থেকে বেশী দামে কিনে এনে বেশী দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব সার কেশরহাটে পাঠানো হচ্ছিল জনতা না বুঝেই আটক করেছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপির কৃষি কর্মকর্তা বলেন,সারগুলো অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিলো,কৃষকেরা আটক করেছে। তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।#