মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধ ও জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণা করেছেন পিতা হাজি মহাসিন বলে অভিযোগ করেন তার বড় ছেলে আব্দুল মান্নান। শুধু তাই না প্রতারক পিতা বাড়ি অন্য সন্তানের নামে লিখে দেয় এবং মায়ের কবর পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।তানোর পৌর এলাকার গোকুল মথুরা গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা।
এঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান বাদি হয়ে পিতা হাজি মহাসিন ও ছোট ভায়ের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তবে ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে সঠিক সমাধানের আশ্বাস দেন। এঘটনায় পিতা পুত্রের মাঝে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মান্নান অভিযোগে উল্লেখ করেন, তানোর পৌর এলাকার গোকুল মথুরা মৌজার অন্তর্গত আরএস ২০৯ নম্বর খতিয়ানে ২২৯ দাগে সাড়ে ৪ শতাংশ জমির মালিক খতিজান বিবি। তার নিকট হতে ০৪/০৯/১৯৮০ সালে জমি ক্রয় করেন। যার দলিল নম্বর ৩১৬৫। কিনার পর থেকে ভোগ দখল করে আসছে। কিন্তু একই জমি জালিয়াতি করে দলিল করেন পিতা মহাসিন।বিগত ২৬/৯/২০১০ সালে হাজি মহাসিন সাড়ে ৪ শতাংশ জমি জাল দলিল তৈরি করে নেয়। যার দলিল নম্বর ৫৯৬০। হাজি মহাসিন জাল দলিল করে জমি নেয়ার পর বিগত ১৬/০৪/২০১৭ ইং তারিখে প্রতারণা করে হেবা ঘোষণা রেজিষ্ট্রি করে দেন ছোট ছেলে ও ২য় স্ত্রী কে। যার দলিল নম্বর ১০৩৫০। কিন্তু রেজিস্ট্রি অফিসের ভলিয়ম বইয়ে কোন কিছুই নাই।
হাজি প্রতারণা করে স্ত্রী ও সন্তানের নামে দেয় এবং অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে খারিজও করেন। যার খারিজ কেস নম্বর ১৫৫৯/1X-1/২০১৬-১৭। এসব প্রতারণার মাধ্যমে গত ২০১৯ সাল থেকে গায়ের জোরে দখল ভোগ করে। এসব ঘটনা নিয়ে ওই সময় পৌর প্যানেল মেয়র আরব আলী ও সার্ভেয়ার তারেকসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধানের জন্য পরপর দু বার মিমাংসা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
গ্রামের লোকজন জানান, হাজি মহাসিন একজন জমি লোভী প্রতারক। মান্নান তার বড় ছেলে। তার মা ছোট থাকতে মারা যায়। হাজি দ্বিতীয় বিয়ে করে। মান্নান যে বাড়িতে থাকত সে বাড়িও দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানের নামে দেয়। এসব কারণে মান্নান স্টোক করে এবং বাড়ি থেকে বের হয়ে অন্যত্র বাড়ি করেন। এমনকি তার মায়ের কবর দেয়া জায়গাটাও দিয়ে দেয়। এটা অত্যান্ত বেদনাদায়ক। এখন মান্নান বাড়ি করেছে কিন্তু তাকে বের হবার রাস্তা দিবেনা। মান্নান তো তার ছেলে। তাহলে ছেলের সাথে পিতার এমন নিষ্ঠুর আচরণ কেন হবে এমন প্রশ্ন তাদের। মারা গেলেতো সাড়ে তিন হাত মাটি ছাড়া কিছুই থাকবেনা। তাহলে এবয়সে ছেলের জমি নিয়ে কেন জাল দলিল তৈরি করতে হবে। আসলে ভূমিগ্রাসী হলে যা হয়।
মান্নান জানান, গত শনিবার থানায় বসে চলাচলের রাস্তার জন্য একে অন্যের বিনিময় দলিল করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু হঠাৎ করেই কার প্রলোভনে সেটাও মানবে না। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মিমাংসা করে দেয়ার কথা জানান ওসি। যদি না মানে তাহলে জাল দলিল তৈরির জন্য মামলা মোকদ্দমা করতে হবে। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ এত পরিমান মিথ্যা কথা বলে কল্পনাতীত।
থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, আমি মিটিংয়ে আছি, বিকেলের দিকে সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করা হবে। সেটা না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#